বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৫ অপরাহ্ন

রেকর্ড সংখ্যক আগাম আলু চাষ: কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ার হতাশা

  • লাস্ট আপডেট : রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৫ টাইম ভিউ
আগাম জাতের আলু চাষ
ছবি : বাসস
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

রেকর্ড সংখ্যক আগাম আলু চাষ: কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ার হতাশা

এই মৌসুমে রেকর্ড সংখ্যক আগাম আলু চাষ, জেলায় কৃষকরা আগাম জাতের আলু চাষে এক নতুন রেকর্ড স্থাপন করলেও, বাজারে প্রত্যাশিত মূল্য না পাওয়ার কারণে তাঁরা হতাশায় ভুগছেন।

গত তিন বছরে আলুর বাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী—১৫-২০ টাকা কেজির আলু কখনো কখনো ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। গত বছরের এই মুনাফার স্বপ্নে অনুপ্রাণিত হয়ে, কৃষকরা এ বছর অনেক বেশি জমিতে আলু চাষ করেছেন।

লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এই মৌসুমে জেলার পাঁচটি উপজেলায় আনুমানিক ৬,৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। যদিও বাস্তব চিত্রে এই সংখ্যাটি আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শুধু সমতল কৃষকরাই নয়, তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজানসহ বিভিন্ন নদীর চরাঞ্চলে আলু চাষের বিস্তার লক্ষণীয়।

বেশ কিছু কোল্ড স্টোরেজ মালিকও শত শত একর জমি লিজ নিয়ে আলু চাষ করেছেন। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে বাজারে আগাম জাতের আলু উঠতে শুরু করে। এর সঙ্গে দামও কমতে থাকে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আলুর কেজি ৩৫-৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে এটি কমে ১৫-২০ টাকায় নেমে এসেছে।

এ বছর বীজ আলুর মূল্য বৃদ্ধি, সার, কীটনাশক এবং পরিচর্যার খরচ বৃদ্ধির কারণে প্রতি বিঘা জমিতে চাষের খরচ ৩৯,০০০-৪২,০০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। উৎপাদন খরচ তুলতে হলে, আলুর ন্যূনতম মূল্য ৩৫ টাকা কেজি থাকা প্রয়োজন।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি বিভাগের মতে, কৃষকরা জমিতে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন করছেন। আলু, সরিষা, পেঁয়াজ চাষ শেষে একই জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ হচ্ছে। সাধারণত ৯০ দিনে আলু পরিপক্ক হলেও, ৬০-৮০ দিনের মধ্যেই এই ফসল তোলা হচ্ছে।

ধরলা নদীর টুনটুনির চরাঞ্চলের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, তাঁর ১৮ বিঘা জমিতে কার্ডিনাল জাতের আলু উৎপাদিত হয়েছে। বীজ আলুর জন্য ১২০ টাকা কেজি এবং অন্যান্য খরচ বেশি হওয়ায় প্রতি কেজিতে ২৫ টাকা খরচ পড়েছে। কিন্তু তিনি আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন মাত্র ১৫ টাকা কেজি দরে।

আরও পড়ুন  ফুল ঝরে গেলে বা ফল ঝরে ফেটে গেলে কি করবেন জেনে নিন

পাইকারি ব্যবসায়ী মাহফুজার রহমান বলেন, “আমরা ১৫-২০ টাকায় আলু কিনে মাত্র এক টাকা লাভে বিক্রি করছি। আগাম জাতের সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম কমেছে।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইখুল আরিফিন জানিয়েছেন, “চাষিদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দাম বৃদ্ধি পাবে। বিদেশে রপ্তানি শুরু হলে বাজার আরও চাঙ্গা হবে। এছাড়া মৌসুমের শুরুতে চাষিরা উচ্চমূল্য পেয়েছেন। প্রকৃত আলুর মৌসুম এখনো শুরু হয়নি; ফাল্গুন-চৈত্র মাসে মৌসুম পুরোপুরি কার্যকর হবে।”

অতএব, বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চাষিদের সঠিক মূল্য পেতে অপেক্ষা করাই একমাত্র পথ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
একই রকম পোস্ট