আনারস চাষ

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
পুষ্টি মূল্য: আনারস ভিটামিন এ, বি ও সি এর একটি উত্তম উৎস।
ভেষজ গুণ :পাকা ফল বলকারক, কফপিত্ত বর্ধক, পাচক ও ঘর্মকারক। কাঁচা ফল গর্ভপাতকারী। পাকা ফলের সদ্য রসে ব্রোমিলিন নামক এক জাতীয় জারক রস থাকে বলে এটি পরিপাক ক্রিয়ার সহায়ক এবং রস পান্ডুরোগে হিতকর। কচি ফলের শাঁস ও পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে সেবন করলে ক্রিমির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।ব্যবহার: জ্যাম ও জেলি।জাত পরিচিতি:
হানিকুইন:

হানিকুইন সবচেয়ে মিষ্টি আনারস। পাকা আনারসের শাঁস হলুদ রঙের। চোখ সুঁচালু ও উন্নত। গড় ওজন ১ কেজি।

জায়েন্টকিউ:

গাছের পাতা সবুজ প্রায় কাটা বিহীন। পাকা আনারস সবুজাভ ও শাঁস হালকা হলুদ। গড় ওজন ২ কেজি। চোখ প্রশস্ত ও চেপ্টা।

ঘোড়াশাল:

পাকা আনারস লালচে এবং ঘিয়ে সাদা হয়। চোখ প্রশস্ত। গড় ওজন ১.২৫ কেজি। পাতা কাটা বিশিষ্ট, চওড়া ও ঢেউ খেলানো।

উপযুক্ত জমি ও মাটি: উঁচু জমি ও পানি দাঁড়ায় না। মাটি হতে হবে দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ। জমি থেকে ১৫ সে.মি উঁচু এবং ১ মিটার প্রশস- বেড তেরি করতে হবে। এক বেড থেকে অন্য বেডের মধ্যে ৫০-১০০ সে.মি ফাঁক রাখতে হবে।

চারা রোপণ:

মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্যঅগ্রাহায়ণ পর্যন্ত আনারসের চারা লাগানোর ভালো সময়। সেচ সুবিধা থাকলে মধ্য মাঘ থেকে মধ্য ফাল্গুন পর্যন্ত আনারসের চারা লাগানো যায়। লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ৫০ সেন্টিমিটার এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ৪০ সেন্টিমিটার হতে হয়।

মুড়ি ফসল:
আনারস চাষে অন্যান্য লাভের সাথে আরেকটি লাভ মুড়ি ফসল। মুড়িগাছ একাধিক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে এবং ফল ধরে। সাধারণত: মুড়ি ফসল থেকে ৫ থেকে ৬ বছর সফলভাবে ফল সংগ্রহ করা যায়। ঘোড়াশাল জাতের বেলায় কাপাসিয়া এলাকায় ৪০ থেকে ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুড়ি ফসল থেকে ফল পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে আগাছা পরিষ্কার, শূন্যস্থান পূরণ, সার প্রয়োগ, বালাই ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে।

আরও পড়ুন   মাছ ধরার পর সংরক্ষণের সহজ পদ্ধতি

আনারসের সাথে সাথী ফসল চাষ:
আনারসের সাথে অনায়াসে আদা, সয়াবিন, সরিষা, কলাই, কচু ইত্যাদি সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা যায়।

সার ব্যবস্থাপনা:

গাছ প্রতি সার প্রয়োগের পরিমান যথাক্রমে পচা গোবর ৩১০ গ্রাম, ইউরিয়া সার ৩৬ গ্রাম, টিএসপি সার ১৫ গ্রাম, এমওপি সার ৩৫ গ্রাম, জিপসাম সার ১৫ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়।  ইউরিয়া ও পটাশ সরি চারা রোপণের ৪-৫ মাস পর থেকে শুরু করে ৫ কিসি-তে প্রয়োগ করতে
হবে। অন্যান্য সার বেড তৈরির সময় মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:

শুকনো মৌসুমে আনারস ক্ষেতে সেচ দেওয়া দরকার। তাছাড়া বর্ষাকালে যাতে অতিরিক্ত পানি না জমে সে ব্যবস্থা করতে হবে।  চারা বেশি লম্বা হলে ৩০ সে.মি পরিমান রেখে আগার পাতা সমান করে কেটে দিতে হবে। আগাছা আনারসের খুবই ক্ষতি করে। বছরে অন-তঃ দু’বার আগাছা পরিষ্কার করতে হবে; একবার আগষ্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ফল সংগ্রহ করার পর ও দ্বিতীয় বার অক্টোবর-নভেম্বর মাসে। জমিতে সেচ প্রদান এবং সার প্রয়োগের পর মালচিং করে নিলে জমি আগাছা মুক্ত থাকে। আগাছা দিয়ে মালচিং করার পর একসময় পচে জৈব সার হিসেবে মাটিতে যুক্ত হয় এবং এতে করে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়।

ফসল তোলা:

চারা রোপণের ১৫-১৬ মাস পর জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য ভাদ্র মাসে সংগ্রহ করতে হয়।

পাহাড়ী এলাকায় আনারস চাষ:

পাহাড়ী এলাকায় সাধারণত: ট্যারেসিং বা কন্টুর পদ্ধতিতে (৬০ সেমি গভীর ও ৩০ সেমি প্রস’) চাষ করা ভালো। পাহাড়ী এলাকায় জমি তৈরিতে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে । কেনো না বেশি নাড়াচাড়া করলে ভূমি ক্ষয় হয়ে যাবে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now