ছাদ থেকে সতেজ সবজি
ছাদে বাগান করার শখ রয়েছে অনেকেরই। ফ্ল্যাটে বা বাসা-বাড়িতে সব সময় শখ পূরণের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকে না। থাকলেও ফুলের টবে কয়েকটি ফুল গাছ—ব্যস, এ পর্যন্তই। শাকসবজি করার কথা তাঁরা ভাবতেই পারেন না। ভাবেন, নিশ্চয় বড় জায়গা লাগবে। আর পরিচর্যাই বা কীভাবে করবেন।
সঠিক প্রক্রিয়া জানা থাকলে এই ভেজাল ও ফরমালিনের দিনে ঘরেই পেতে পারেন সতেজ সবজি। মডেল ও অভিনয়শিল্পী ফারিয়াদের বাসার কথাই ধরা যাক। তাঁর মা এম এ জাহান সারা বছর ছাদেই সবজি ফলান।মৌসুমের প্রায় সব শাকসবজি তাঁর বাগানে রয়েছে।
তিনি নিজে জৈব সার তৈরি করেন তাঁর বাগানের জন্য। এম এ জাহান বলেন, ‘এখনকার বাজারে যেসব শাকসবজি পাওয়া যায়, তার বেশির ভাগই রাসায়নিক পদার্থ ও ফরমালিনযুক্ত। পরিবারের সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবেই এই বাগান করা। শুধু শাকসবজি নয়, নানা ধরনের ফলের গাছও রয়েছে আমাদের বাগানে।’ ফারিয়াও সময় পেলে মাকে বাগান পরিচর্যার কাজে সাহায্য করেন।
কীভাবে করবেন ছাদের বাগান
প্রশিকার প্রকল্প সমন্বয় সহযোগী ও কৃষিবিদ হাসি রানি বিশ্বাস বলেন, ‘বাড়ির ছাদের ৩০০ বর্গফুট জায়গায় সারা বছরের সবজি উৎপাদন করা যায়। এতে ছাদের কোনো ক্ষতি হয় না। বাগানের পেছনে প্রতিদিন এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় দিলেই হবে।’
ছোট ছোট বেড তৈরির মাধ্যমে অনেক ধরনের সবজি উৎপাদন করা সম্ভব। আর একটা বেডে তিন ধরনের সবজি চাষ করা সম্ভব। যেমন যদি কেউ চান তাহলে একটা বেডে টমেটো, বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ করতে পারেন।
বেডগুলো তৈরি করার জন্য ৮ x ২ ফুট আকারের বাঁশের ফ্রেম তৈরি করে নিতে হবে। এবার তা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে তাতে ৮ ইঞ্চি পরিমাণ জৈব মাটি দিতে হবে। জৈব মাটির সঙ্গে জৈব সার মিশিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চারা রোপণ বা বীজ বপন করা হয়। গ্রীষ্মকালে এক দিন পর পর পানি দিতে হবে। সকালে বা দুপুরে পানি দেওয়া যাবে না। শুধু বিকেলে পানি দিলেই হবে। চারা লাগানোর এক মাস পর প্রতি গাছে ২৫০ গ্রাম জৈব সার এবং ১০০ গ্রাম ছাই দিতে হবে। যাঁরা টবে করতে চান, তাঁরাও একইভাবে জৈব মাটি দিয়ে বাগান করতে পারেন। মাটি দিয়ে টবের সম্পূর্ণ ভরাট করা যাবে না। টবে করলে দুই দিন পর পর নিড়ানি দিয়ে হালকাভাবে খুঁচিয়ে মাটি আলাদা করে দিতে হবে। বাড়ির আবর্জনা দিয়ে জৈব মাটি তৈরি করা যায়।
বর্তমানে ঢাকায় প্রশিকা নামক একটি সংস্থা কম খরচে বাড়ির ছাদে অরগ্যানিক ফসল চাষের জন্য প্যাকেজ-সেবা চালু করেছে। এতে প্রতি বেডের তিন বছরের জন্য খরচ পড়বে এক হাজার ৪৪০ টাকা। এর সঙ্গে প্রতি মৌসুমে চারা বাবদ খরচ ১৩০ টাকা।