আজ বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

দুর্বা ঘাসের চমৎকার কিছু গুন

দুর্বা ঘাসের চমৎকার কিছু গুন

 

এটি একটি ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ। সাধারণত দুর্বা ঘাস দীর্ঘকাল প্রতিকুল পরিবেশে বেঁচে থাকার ক্ষমতা রাখে। মাঠে ময়দানে ঘরবাড়ীর আনাচে কানাচে আপনা আপনি এ ঘাস জন্মায়। এর পাতা সরু, লম্বা। মসৃণ ও সবুজ বর্ণের হয়। মাতির নিচে এর গুচ্ছ মূল থাকে। দুর্বা ঘাস আলাদা ভাবে চাষের কোন প্রয়োজন হয় না।

দুর্বা ঘাসের পরিচিতি-

প্রচলিত নাম- দুর্বা ঘাস

ইউনানী নাম- দুর্বা / দুব

আয়ুর্বেদিক নাম-দুব

ইংরেজী নাম- Bermuda grass, Dove grass.

বৈজ্ঞানিক নাম- Cynodon dactylon Pers.

পরিবার- Poaceae (Gramineae)

দুর্বা ঘাসে যে সমস্ত রাসায়নিক উপাদান আছে- টারপিনয়েড যৌগ যেমন অরুনডেইন, লুপিনোন ইত্যাদি বিদ্যমান। এছাড়া দুর্বা ঘাসে প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট ও বেশ কিছু অর্গানিক এসিড পাওয়া যায়।

দুর্বা ঘাস সাধারণত রক্তক্ষরন, কেটে যাওয়া বা আঘাত জনিত রক্তপাত, অতিরিক্ত ঋতুস্রাব, বমন, চুল পড়া, চর্ম রোগ, দন্তরোগ ও আমাশয়ে কার্যকরী।

রোগ অনুযায়ী এর ব্যবহার পদ্ধতি-

# কেটে যাওয়া বা আঘাত জনিত রক্তক্ষরনে দুর্বা ঘাস সামান্য পানি মিশিয়ে পিষে কাটা স্থানে বেধে দিলে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়। কাটা স্থান দ্রুত জোড়া লাগে এবং শুকিয়ে যায়। তবে এ ক্ষেত্রে দুর্বার শিকড় ব্যবহার করলে বেশী উপকার পাওয়া যায়।

# চুল পড়া রোগের জন্য একটি পাত্রে এক লিটার নারিকেল তেল মৃদু তাপে জ্বাল করে ফেনা দুর করে নিতে হবে। তারপর দুর্বার ঘাসের টাটকা রস ২০০ মিলি সম্পূর্ণ তেলে মিশিয়ে পুনরায় জ্বাল দিয়ে চুলা হতে নামিয়ে ছেঁকে টা সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতিদিন গোসলের ১ ঘন্টা আগে ঐ তেল চুলে মাখতে হবে। নিয়মিত২-৩ মাস প্রয়োগ করলে উপকার পাওয়া যাবে।

#বমি ভাব বন্ধের জন্য দুর্বা ঘাসের রস ২-৩ চামচ ১ চা চামচ চিনি সহকারে ১ ঘন্টা পর পর খেতে হবে, বমি ভাব কেটে গেলে খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।

আরও পড়ুন   দেশি পাবদার চাষ প্রযুক্তি

# অধিক ঋতুস্রাব রোগের জন্য দুর্বা ঘাসের রস ২-৩ চামচ প্রতিদিন মধু সহ ৩-৪ বার খেতে হবে। এভাবে ১০-১৫ দিন খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

#আমাশয় রোগের জন্য দুর্বা ঘাসের রস ২-৩ চামচ ডালিম পাতা কিংবা ডালিমের ছালের রস ৪-৫ চামচ মিশিয়ে প্রতিদিন ৩-৪ বার খেতে হবে। এভাবে ১০-১৫ দিন খেলে আমাশয় ভাল হয়ে যাবে।

আমাদের আনাচে কানাচে জন্ম নেয়া দুর্বা ঘাসের কত ঔষধি গুণাবলী। প্রয়োজনে এর ব্যবহার করতে পারেন। আজ এই পর্যন্ত।

সকলে ভাল থাকুন ও সুস্থ্য থাকুন। সকলকে ধন্যবাদ। ভাল লাগলে মন্তব্য করতে কার্পণ্য করবেন না।
এটি একটি ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ। সাধারণত দুর্বা ঘাস দীর্ঘকাল প্রতিকুল পরিবেশে বেঁচে থাকার ক্ষমতা রাখে। মাঠে ময়দানে ঘরবাড়ীর আনাচে কানাচে আপনা আপনি এ ঘাস জন্মায়। এর পাতা সরু, লম্বা। মসৃণ ও সবুজ বর্ণের হয়। মাতির নিচে এর গুচ্ছ মূল থাকে। দুর্বা ঘাস আলাদা ভাবে চাষের কোন প্রয়োজন হয় না।

দূর্বাঘাসের গুণাগুণ:

চিকিৎসায় দূর্বাঘাস ব্যবহারের উপায়:

  • দূর্বাঘাসের রস: ১০-২০ মি.লি.
  • দূর্বা মূল চূর্ণ: ৩-৬ গ্রাম
  • পাতার চূর্ণ: ১-৩ গ্রাম
  • পানি: ৪০-৮০ মি.লি।

সবগুলো একত্রে মিশিয়ে জুস তৈরি করে পান করবেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: দূর্বা ঘাস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে বিদ্যমান ভাইরাস ও ব্যকটেরিয়ারোধী ক্ষমতা শরীরকে যেকোন ধরনের রোগের বিরুদ্ধেই লড়ার শক্তি প্রদান করে।

পুষ্টিতে ভরপুর থাকায় দূর্বাঘাস শরীরকে সক্রিয় ও শক্তিপূর্ণ রাখতে সহায়ক। এটি অনিদ্রা, ক্লান্তি, স্ট্রেস ইত্যাদি রোগের জন্য লাভজনক।

ত্বকের সমস্যা: দূর্বাঘাসে বিদ্যমান প্রদাহরোধী ও জীবাণুরোধী গুণের কারণে তা ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন চুলকানি, লাল লাল ফুসকুড়ি, একজিমা ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। এজন্য দূর্বাঘাস ও  হলুদ পিসে ত্বকে লাগাবেন। দূর্বার রস পান করলে ঘনঘন পিপাসা লাগা থেকে মুক্তি মেলে।

আরও পড়ুন   ছাদে ঘরে মাশরুম চাষ : ঘরে বসে আয়

 

রক্তশূণ্যতা: দূর্বার রসকে সবুজ রক্ত বলা হয়। কারণ রস পান করলে রক্তশূণ্যতার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। এই রস রক্ত পরিষ্কারক এবং লোহিত রক্তকণিকা বাড়াতে সাহায্য করে। এগুলো ছাড়াও চোখের জ্যোতি বাড়াতেও সহায়তা করে। এজন্য নগ্ন পায়ে ঘাসের উপর হাঁটতে হয়। শীতের সকালে নরম-কোমল দূর্বাঘাসের উপর হাঁটতে পারেন।

মানসিক রোগে: দূর্বার রস মৃগী, হিস্টিরিয়া ইত্যাদি মানসিক রোগের চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী। মাথায় দূর্বাঘাস পিসে লেপ দিলে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়!

হজম শক্তি বৃদ্ধি: দূর্বাঘাস নিয়মিত সেবন করলে পেটের অসুখ থেকে মুক্তি মেলে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য, এসিডিটি থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। এর রস পানে পিত্তজনিত কারণে সৃষ্ট বমি ঠিক হয়ে যায়।

অন্যান্য ব্যবহার: উপর্যুক্ত উপকারীতা ছাড়াও দূর্বাঘাস নিম্নোক্ত উপকারও করে।

  • দূর্বাঘাসেপ্রচুরফ্লেভিনয়েডসথাকে।যাআলসারপ্রতিরোধেকার্যকর।
  • এটিগ্লুকোজেরপরিমাণকমকরতেসহায়ক।যাডায়াবেটিসনিয়ন্ত্রণকরতেসক্ষম।
  • রক্তেকোলেস্টেরলেরমাত্রাকমকরেহৃদপিণ্ডকেসুস্থরাখে।
  • সর্দি-কাশিরসমস্যাদূরকরে।
  • কেটেগেলেদূর্বাপিসেলাগিয়েদিলেরক্তপাতবন্ধহবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

Comments are closed.

© All rights reserved © 2014 Ajkerkrishi.com