Home ঘরে বাগান দোপাটি (Balsam)ফুলের চাষ পদ্ধতি

দোপাটি (Balsam)ফুলের চাষ পদ্ধতি

114
0
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

দোপাটি (Balsam)ফুলের চাষ পদ্ধতি

দোপাটি ফুলের গাছ এ দেশের প্রায় প্রত্যেক বাড়ীতেই দেখা যায়। ইহার চাষ পদ্ধতি খুব সহজ এবং এই গাছে প্রচুর ফুল ফোটে। সব ঋতুতেই এ গাছ জন্মায়। বর্ষায় এটা আকারে বড় ও সুন্দর ফুল দেয়। দোপাটি গাছের উচ্চতা ১.৫০-২ ফুট বা ৪৫-৬০ সেমি. এর মত ফুল হয়। এর কান্ড খুব নরম এবং গাছ বেশ ঝোপালো হয়। এর ফুল সাদা, লাল, বেগুনি, গোলাপি প্রভৃতি রঙের হয়ে থাকে। ফুল সিঙ্গল ও ডাবল হয়। এই ফুল বর্ডারের জন্য বিশেষ উপযোগী।

জাত ও মৌসুম:

জাতঃ ক্যামেলিয়া এবং বালসাম রোজ।

উৎপাদন মৌসুমঃ জুন মাসে বীজ বপন করা হয়।

মাটি ও জলবায়ু:

মাটি ও জলবায়ুঃ হালকা উর্বর দো-আঁশ মাটি এ ফুল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। এ ফুলের জন্য বড় দিন, উষ্ণ আর্দ্র আবহাওয়া আবশ্যক। কিন্তু ক্রমাগত ও দীর্ঘকালীন বৃষ্টিপাতে এ ফুলের ক্ষতি হয়। সমভাবে ব্যাপ্ত ১০০-১২৫ সেমি. বৃষ্টিপাত ও ৩০-৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালীন মরশুমি ফুলের পক্ষে বিশেষ অনুকূল।

জমি তৈরী ও বীজ বপন:

জমি তৈরিঃ জমি ৩-৪ বার কুপিয়ে অথবা লাঙল ও মই দিয়ে মাটি বেশ গভীরভাবে কর্ষণ করে ঝুরঝুরে ও নরম করে আগাছা পরিষ্কার করে মোরগঝুটি চাষের জন্য জমি তৈরী করতে হবে। এইসময় প্রতি ১০০ বর্গ মিটার জায়গায় ২০০ কেজি কম্পোষ্ট বা গোবর সার, ৩ কেজি হাড়েরগুড়া অথবা সিঙ্গল সুপার ফসফেট প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ঐ গুলি মিশিয়ে দিতে হবে। তারপর, জমিকে সমতল করে ৩ মিটার লম্বা এবং ১.৫ মিটার প্রস্থর ছোট ছোট প্লটে এমনভাবে ভাগ করতে হবে যেন পানি সেচ ও নিস্কাশনের সুবিধা পাওয়া যায়।

টবের জন্য সাধারণত ১০ ইঞ্চি বা ২৫ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট মাটি বা সিমেন্টের টবে মোরগঝুটির চাষ করা হয়। ইহার জন্য টবের তলদেশের ছিদ্রটি কলসি ভাঙ্গা বা ইটের টুকরা দিয়ে ঢেকে দিয়ে তার উপর শুষ্ক ঝরাপাতা বিছিয়ে দিতে হবে। তার উপর ২-৩ সেমি গভীর বালি দিয়ে পাতাগুলি ঢেকে দিতে হবে। টবের বাকি অংশ নিম্নলিখিত মিশ্রণের যে কোনটি দিয়ে ভর্তি করতে হবে। ঝুরা দোআঁশ মাটি ৩ ভাগ, পাতা-পচা সার ১ ভাগ, খামারের সার ১ ভাগ, ১০০ গ্রাম হাড়গুড়া ও ৫০ গ্রাম খইল- এর মিশ্রণ অথবা লাল মাটি ২ ভাগ, বালি ২ ভাগ, পাতা-পচা সার ২ ভাগ, খামারের সার ২ ভাগ, দোআঁশ মাটি ১ ভাগ, কাঠকয়লার গুড়া চার ভাগের এক ভাগ এবং ১০০ গ্রাম হাড়গুড়া।

আরও পড়ুন   পেয়ারা ডাল বাঁকালেই ফলন হবে দশগুণ

বীজ হারঃ প্রতি ১০০ বর্গমিটার জমিতে চারা রোপনের জন্য ৫-৬ গ্রাম বীজ লাগে।

বীজ বপনঃ বীজতলায় দোপাটির বীজ বপন করে চারা তৈরি করতে হয়।

চারা রোপন ও পরবর্তী পরিচর্যা:

চারা রোপনঃ চারা ৮-১০ সেমি. এর মত বড় হলে তুলে মূল জমিতে একফুট বা ৩০সেমি. দূরে দূরে অথবা টবে রোপন করতে হবে।

সার প্রয়োগ ও পরিচর্যাঃ চারা রোপনের প্রায় ১৫-২০ দিন পর থেকে গাছের গোড়ায় ৭ দিন পর পর তরল সার (খৈল ও কাচা গোবর ১০ দিন মাটির পাত্রে ভিজিয়ে রেখে তার পানি) দিতে হবে। ফুল আসার সময় এ তরল সারে প্রতি লিটারে ১০০ গ্রাম সুপার ফসফেট মিশিয়ে দিলে ফুলের রং ও গড়ন ভালো হবে।

পানি সেচঃ গাছের গোড়া শুকিয়ে এলে হালকা সেচ দিতে হবে। টবে গাছ রোপন করলে পরিমিত সেচ দিতে হয়।

আগাছা পরিস্কারঃ বাগানের এবং টবের দোপাটি গাছের গোড়ার মাটি নিয়মিত খুড়ে আলগা করতে হবে এবং ঘাস আগাছা ইত্যাদি তুলে ফেলতে হবে।

পোকা দমনঃ থ্রিপস, লাল মাকড়সা, জাবপোকা ও শোষক পোকা আক্রমণ করতে পারে। উপযুক্ত কীটনাশক ওষুধ ছিটিয়ে নানা প্রকার রোগ দমন করা যায়

বীজ সংগ্রহ:

বীজ সংগ্রহঃ দোপাটি ফুল সারা বছরই চাষ করা যায়। দোপাটি ফুল সম্পূর্ণরুপে পেকে গেলে ফেটে যায় এবং বীজ ছড়িয়ে পড়ে। সেজন্য ফল পাকার আগেই বীজ সংগ্রহ করতে হয়।