প্রযুক্তির ছোঁয়ায় চাষাবাদে ভাগ্য বদল
‘মাছে ভাতে বাঙ্গালি’ এই প্রবাদটি হাজার বছরের। আর এই মাছ ভাতের যোগান আসে আমাদের কৃষি থেকেই। দিন যত যাচ্ছে ততটাই ভোগবাদী মানুষের চাহিদা বাড়ছে ক্রমাগত। বাড়ছে দেশের জনসংখ্যা, বাড়ছে খাদ্য চাহিদা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য দিন দিন কমছে আবাদি জমি। তবুও আমাদের এই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা মেটাচ্ছেন কৃষক। শুধু তাই নয়, চাহিদার উদ্বৃত্ত খাদ্য এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এর নেপথ্যে মূলত: দেশে চাষাবাদে আদিম প্রথার বদলে এখন ব্যবহার হচ্ছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। এর ফলে কৃষিতে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সেকেলের কাঠের লাঙ্গলের বদলে এখন ব্যবহার হচ্ছে ‘কলের লাঙল’ ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার প্রভৃতি। প্রযুক্তির ব্যবহারে ফলন বেড়েছে কয়েকগুণ। এ কারণে চাষাবাদে খরচ, শ্রম, সময় সবই কমেছে। আর বাড়ছে ফসল উৎপাদন, বদলাচ্ছে মানুষের ভাগ্যের চাকা, দেখা দিচ্ছে সৌভাগ্যের আলো। কৃষিতে সাম্প্রতিক বিপ্লব, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা বিশ্বখাদ্য সংস্থা এজন্য বাংলাদেশকে পুরস্কৃত করেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করর্পোরেশন সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষিকাজে সেকেলে যন্ত্রপাতির বদলে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। কেবল জমি চাষই নয়, জমিতে নিড়ানি, সার দেওয়া, কীটনাশক ছিটানো, ধান কাটা, মাড়াই, শুকানো ও ধান থেকে চালসহ সবই আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশের মোট আবাদি জমির ৯০ ভাগ চাষ হচ্ছে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে। যতদূর জানা যায়, চীনে ২০২ থেকে ২২০ খ্রিস্টাব্দে মানুষ প্রথম লাঙল ব্যবহার করে জমি চাষ শুরু হয়। কাঠ দিয়ে লাঙল তারাই প্রথম তৈরি করে। লাঙলের ফলা তৈরিতে ব্যবহার করে লৌহদণ্ড। জোয়াল তৈরিতে ব্যবহার করত কাঠ। সেই থেকে কৃষি প্রযুক্তিতে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন কৌশল ও যন্ত্রপাতি, বালইনাশক, সার বীজ প্রভৃতি। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কৃষিতে যে বিপ্লব সাধিত হচ্ছে তা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা আল্লাহ মুলুম। যাক এনিয়ে কিশোরগঞ্জের মরমি কাব, সাধক ও গীতিকার ইবনে সালেহ মুনতাসির রচিত কৃষিপ্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ শীর্ষক লিরিকটি যথার্থ বলে মনে হয়। লিরিকটি হচ্ছে: মান্ধাতার আমলের কৃষি চাষাবাদ পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন ঘটেছে/ গরুর লাঙ্গল জোয়াল টানার দিন অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে/ গরুর লাঙ্গল জোয়ালের পরিবর্তে আধুনিক যান্ত্রিক চাষাবাদ পদ্ধতি এসেছে/ দোন পদ্ধতিতে কুন উরির পরিবর্তে যান্ত্রিক সেচ পদ্ধতি অনেক আগেই এসেছে। প্রচলিত সাধারণ বীজের পরিবর্তে উফশী হাইব্রিড বীজ ব্যবহার করা হচ্ছে/খাদ্য উৎপাদন বহুগুণে বেড়েছে/ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন হয়েছে/ সার কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে ফলন অনেক বেড়েছে সময় কম লাগছে/ খাদ্য উৎপাদন মজুদকরণ বাজারজাত করণে অনেক পরিবর্তন এসেছে। গ্রাম আজ আর গ্রাম নেই শহরে পরিণত হয়েছে/ উন্নত যোগযোগ ব্যবস্থায় গ্রামের আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় পরিবর্তন ঘটেছে/ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি বিদ্যুৎ সৌর বিদ্যুৎ গ্রামে গ্রামে পৌঁছেছে/ ফ্রিজ টিভি ইন্টারনেটসহ আধুনিক সকল প্রকার উপকরণ গ্রামে ব্যবহার করছে।
বাংলাদেশ আজ বিশ্ব নেতৃত্বের কাতারে দাঁড়িয়েছে/ সম্মান আর মর্যাদার বিবেচনায় বিশেষায়িত হয়েছে/ সময়ের পালায় যুগ পরিবর্তনের ঠেলায় ঘুরে দাঁড়াতে শিখেছে/ পোশাক আর কৃষি শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বের রোল মডেল। বাংলাদেশের উন্নয়নের কাহিনিতো সাধারণের অসাধারণ গল্পের কাহিনী/ সারাবিশ্বের টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে রোল মডেলের যামিনী/ আধুনিক চিন্তাচেতনায় সক্ষমতায় কর্মসংস্থান পরিবেশ উন্নয়নের ক্ষেত্রে আদরিনী/সাবাস বাংলাদেশ এগিয়ে যাও বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই কামিনী। কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে আশির দশকের শুরুতে কৃষিতে ধীরে-ধীরে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার শুরু হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত ৯/১০ বছর আগে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি বিজ্ঞানীরা কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবনের কাজ হাতে নেন। বর্তমানে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি কৃষিকাজে ব্যবহার হচ্ছে। লাগসই প্রযুক্তির সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে কৃষিতে প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন সম্ভব। বর্তমানে দেশে যে সব কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে তার অন্যতম হচ্ছে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার। এ যন্ত্রের মাধ্যমে ফসল কাটা, খোসা হতে ফসলের দানা আলাদা করার কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া ছোট জমি চাষের জন্য পাওয়ার টিলার, বড় জমি চাষে ট্রাক্টর বা হুইল ট্রাক্টর, বীজ বপন, সার প্রয়োগ ও কীটনাশক ছিটানোর জন্য ব্রডকাস্ট সিডার, নির্দিষ্ট অবস্থানে বীজ বপনের জন্য সিড ড্রিল, গভীরভাবে কঠিন স্তরের মাটি কর্ষণের জন্য সাব ব্রয়লার, ধান/বীজ শুকানোর যন্ত্র ‘ড্রায়ার’, ধান, গম, ভুট্টা শুকানোর যন্ত্র ব্যাচ ড্রায়ার, পাওয়ার রিপার মেশিন (শস্য কাটার যন্ত্র), ঝাড়ার যন্ত্র ইউনারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি চাষাবাদে ব্যবহার হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাওয়ার টিলার, পাওয়ার রিপার, ঝাড়ার যন্ত্র ইউনার, নিড়ানির যন্ত্র ইউডার, ধান ও গম মাড়াই কল, ভুট্টা মাড়াই কল ইত্যাদি যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর, বগুড়া, রংপুর, যশোর, শেরপুরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সেচপাম্প, ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারের খুচরা যন্ত্রপাতি তৈরির বেশকিছু কারখানা গড়ে উঠেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে রীতিমতো বিপ্লব ঘটেছে। চাষাবাদে কাঠের লাঙ্গলের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। কৃষি কাজের মধ্যে সবচেয়ে শ্রমনির্ভর কাজ হচ্ছে বীজ বা চারা রোপণ, আগাছা দমন ও ফসল কাটা। মৌসুমের নির্দিষ্ট সময়ে বীজ বপন, চারা রোপণ এবং ফসল কেটে ঘরে তুলতে কৃষককে বেশ সংকটে পড়তে হয়। ওই সময়ে কৃষি শ্রমিকের মজুরি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। কখনো কখনো দ্বিগুণ মজুরি দিয়েও কৃষি শ্রমিক পাওয়া যায় না। ফলে বিলম্বে বীজ রোপণের জন্য ফলন কম হয়, পোকা-মাকড় ও রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ বৃদ্ধি পায়।
তিনি বলেন, কখনো কখনো বিলম্বে ফসল কাটা ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে উৎপাদিত শস্যের একটি বড় অংশ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া আগাম ফসল বিক্রি করতে না পারার কারণে প্রত্যাশিত মূল্য থেকেও কৃষক বঞ্চিত হন। এসব থেকে রক্ষা পেতেই কৃষি কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে যেমন সময় কম লাগছে, তেমনি বেশি ফসলও উৎপাদন হচ্ছে। কৃষক দিয়ে এক বিঘা জমির ধান কাটাতে খরচ হয় তিন হাজার টাকা। আর ‘রিপার’ দিয়ে ধান কাটতে বিঘা প্রতি খরচ হয় মাত্র ৫০০ টাকা। সময়ও লাগে কম। গরু দিয়ে হালচাষ করতে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৭০০ টাকা। আর পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করতে খরচ হয় প্রতি বিঘায় ৪০০ টাকা। ট্রাক্টর দিয়ে হয় মাত্র ২৫০ টাকা। তাই তারা এসব আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন। তবে এসব যন্ত্রপাতির দাম কমানো দরকার।
কৃষিবিজ্ঞানী ড. রাশিদ উল হক সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, দেশে প্রতি বছর গড়ে প্রায় চার কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়। উৎপাদন থেকে বাজারজাত পর্যন্ত প্রায় ১৫ শতাংশ খাদ্যশস্য বিনষ্ট হয়, যার পরিমাণ ৪৩ লাখ টন। অথচ চাষাবাদে পুরোপুরি আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এসব সমস্যা দূর করা সম্ভব বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক রফিকুল ইসলাম মণ্ডল এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিতে ইনস্টিটিউটের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ প্রতিনিয়ত কাজ করছে। বারি উদ্ভাবিত ‘পাওয়ার টিলার অপারেটেড সিডার’-এর উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এই যন্ত্রটি দিয়ে একইসাথে জমি চাষ, জমি লেভেল, সার ও বীজ দেয়া যায়। দিন দিন আমাদের জমি কমে যাচ্ছে, কিন্তু খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে। তাই কৃষিতে বিপ্লব ঘটাতে চাষাবাদের সব পর্যায়ে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেন তিনি। তবে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কৃষিতে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ও উন্নতি সাধিত হয়েছে তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দেশের তৃণমূলে এই খাতে জড়িত কৃষক, তরুণ উদ্যোক্তাদের এ প্রযুক্তি সম্পর্কে আপডেট ধারনা দেয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে মাঠ পর্যায়ে সমন্বিত ভাবে কাজ করবেন। আর এর তদারকি করতে হবে কৃষি মন্ত্রণালয়সহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট উইংকে। এ ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠান কৃষকদের পাশে থেকে প্রযুক্তিগত ধারণা প্রদান, প্রশিক্ষণ, পরার্মশ ও কৌশলগত সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন এই প্রত্যাশা থাকল।
জুমে এবার সাথী ফসল হবে নতুন প্রযুক্তির ‘তুলা চাষ’
পাহাড়ে জুম চাষে ধানের সাথে উন্নত জাতের তুলা চাষের নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে কৃষি বিজ্ঞানিরা। এ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ করা গেলে দেশে তুলা উৎপাদনে বিরাট মাইল ফলক সূচিত হবে বলে মনে করছে কৃষি বিজ্ঞানিরা। পার্বত্য তিন জেলার পাহাড়ি টিলা ভূমির সনাতনী পদ্ধতির জুম চাষ। ঐতিহ্যবাহী এ চাষে একই জমিতে ফলানো হয় ধান, নানা জাতের সবজি এবং আদা হলুদ,তিলসহ হরেক রকম ফসল। এখন থেকে জুম চাষের উপযোগী জমিতে উন্নত জাতের তুলা চাষ করা সম্ভব। কৃষি বিভাগের হিসেব অনুযায়ী তিন পার্বত্য জেলায় ৫০ হাজার হেক্টর জুম চাষের উপযোগি জমি রয়েছে। এই জমিতে জুমিয়া (জুম চাষিদের) আত্ম নির্ভরশীলতার পাশাপাশি দেশে তুলা উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। পরিদর্শন প্লটের তুলা চাষী জয়দেবী ত্রিপুরা জানান, আগে কার্পাস(জুম) তুলা চাষে করে ভালো ফলন হতোনা। কিন্তু উন্নত জাতের তুলা চাষে ফলন হয় ভালো। দামও অনেক বেশি। বাংলা কৃষি গবেষনা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ)’র পৃষ্ঠপোষকতায় তুলা চাষে স্থানীয় জুম চাষিদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ে এর আগে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত তুলা দিয়ে স্থানীয়দের কাপড় পিনন,খাদি, গামছা তৈরির উপযোগি ছিল। এসব তুলা বিঘা প্রতি ৪৫ কেজি থেকে ৫০ কেজির বেশি উৎপাদন হতো না। কিন্তু তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নতুন হাইব্রিট আমেরিকান জাতের টেক্সটাইল তুলার উৎপাদন দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। এ জাতের তুলা বিঘা প্রতি দে’শ থেকে দু’শ কেজি উৎপাদন হচ্ছে। আড়া আড়ি পদ্ধতিতে দুই লাইন ধানের পাশাপাশি এক লাইন তুলা পদ্ধতির চাষাবাদ মাটি ক্ষয় রোধসহ পরিবেশ সম্মত হওয়ায় জুম চাষিদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের তুলা চাষের আওতায় আনা সম্ভব। জুমে উন্নত আমেরিকার জাতের তুলা চাষের সম্ভাবতা নিয়ে গত তিন বছর ধরে গবেষণা করে সফল হয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড গত তিন বছর ধরে পাহাড়ের জুম চাষে তুলা চাষের সম্ভাব্যতা নিয়ে গবেষণা করে সফলতা পেয়েছে। সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রনালয়ে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে উন্নত জাতের তুলা গবেষণা প্লট পরিদর্শন করেন। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ফরিদ উদ্দিন বলেন, পাহাড়ের মাটি খুবই উর্বর। এই মাটিতে নতুন উদ্ভাবিত তুলা চাষ সম্ভব। আমরা যদি এখানকার ৫০ হাজার হেক্টর জুম চাষের উপযোগি জমিতে উন্নত জাতের তুলা চাষ করতে পারি তাহলে দেশের ব্যাপক একটি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। আর অন্য ফসলের সাথে তুলা চাষ করে কৃষকদের আর্থিক উন্নয়ন ঘটানো যাবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান জানান, পাহাড়ের মানুষগুলোর জীবনের প্রধান অবলম্বন জুম চাষ। জুমে উৎপাদিত কৃষি পণ্য খেয়ে তারা বেঁচে থাকেন। এই চাষের সাথে আয়বর্ধক দেশী তুলার সাথে উন্নত জাতের তুলা যদি সংযোজন করা যায় তাহলে জুম চাষীরা বেশি লাভবান হবেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যামল কান্তি ঘোষ জানান, জুমে পাহাড়ীরা ধানের সাথে বিভিন্ন ফসল চাষ করছে। এখন এই ফসলের সঙ্গী তুলা। জুম চাষিরা ধান কেটে ফেলার পরও উন্নত জাতের তুলা থেকে তারা অতিরিক্ত টাকা আয় করতে পারবেন। আর বাজারে এই তুলার মূল্য অনেক বেশি বলেও জানান তিনি। বিশেষজ্ঞদের মতে এ জাতের তুলা প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের গার্মেন্টস শিল্পের সর্বোচ্চ আমদানি পণ্য কাঁচামাল সুতা উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্য সম্ভব হবে।
কৃষিতে যান্ত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহারে রংপুরে গমের ফলন বেড়েছে
রংপুর থেকে জয়নাল আবেদীন: কৃষি ক্ষেত্রে যান্ত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল পেতে শুরু করেছে রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা। যান্ত্রিক কৃষি উপকরণের ফলে সহজ হয়েছে চাষাবাদ। এই জেলায় ধান, চাল, পাটসহ গম চাষে কৃষকের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।
গত বছর রংপুর জেলায় সাড়ে ৩হাজার হেক্টর জমিতে গমের চাষাবাদ হয়েছিল আর এ বছর ৪ হাজার হেক্টর জমিতে গম চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি অধিদপ্তরের আবিস্কার কম্বাইন হারভেষ্টার মেশিন যা ধান ও গম কাটা এবং মাড়াই করে অল্প খরচে খুব সহজে। এসব বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গম চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে রংপুর জেলার কৃষকরা। সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা ও গভীর নলকূপের মাধ্যমে যে বোরো চাষাবাদ করা হচ্ছে সেটিকে কমিয়ে যান্ত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গম এবং আউস চাষ বাড়ানোর লক্ষে কৃষি অধিদপ্তর উন্নত বারি ২৫গম বীজ সরবরাহ করায় এবার গমের ব্যাপক ফলন হয়েছে রংপুরে। হাসি ফুটেছে এ অঞ্চলের গম চাষিদের মুখে।
আগে ৬০ শতক জমির গম ফলন, কাটা, মাড়াই করতে খরচ হতো ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। এখন কম্বাইন হারভেষ্টার মেশিনের মাধ্যমে খরচ হচ্ছে মাত্র টাকা ৬ থেকে ৭শ টাকা। কৃষি অধিদপ্তরের দেওয়া বীজ, সার, কিটনাশক ও বৈজ্ঞানিক উপকরণ এবং বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় আগামীতে আরো বেশি চাষাবাদে আগ্রহী হবে কৃষক। একদিনে গম কাটা মাড়াই ও বস্তাবন্দি করে ভালো দামে বাজারজাত করতে পারায় আবারও কৃষিতে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে কৃষকের। তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকতা মোঃ রেজাউল করিম জানান কৃষি অধিদপ্তর ও আইডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রদর্শনী ও নতুন প্রযুক্তর মাধ্যমে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধকরণ এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় কৃষিতে যে সংকট দেখা দিয়েছিল সে সংকট মোকাবেলায় এখন গম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে ও আগামীতে আরো বেশি জমিতে এ গম চাষাবাদ করে সরকারের যে খাদ্য চাহিদা তা পূরণ হবে বলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশাবাদী ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের খামার বাড়ির উপ-পরিচালক মোঃ জুলফিকার হায়দার বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর রংপুর জেলায় গম চাষ বেড়েছে এবং রংপুরের প্রতিটি উপজেলায় সিড ভিলেজ তৈরি করা হচ্ছে। কৃষিতে নতুন প্রযুক্তি, ভালো উন্নত মানের বীজ সরবরাহ অব্যাহত থাকলে আগামীতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করতে পারবে এ অঞ্চলের গম।
শেকৃবিতে মৌচাষের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে অধিক পরিমানে মধু, পরাগরেণু, প্রপোলিস ও মোম উৎপাদন
বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগীয় প্রধান, ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেনের তত্ত্বাবধায়নে, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় সুশীলন এনজিওর সাথে যৌথ উদ্যোগে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমাদের দেশে যেসব মৌচাষী রয়েছেন, এই মৌচাষীদেরকে আরও বেশি প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত চাষপদ্ধতি অবহিত করা।
এরই আলোকে গবেষকদল গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, সাতক্ষীরা জেলায় মোট বিশ জন করে ষাট জন চাষীকে প্রশিক্ষন দিচ্ছে সেই সাথে বিভিন্ন চাষাবাদ উপকরণ দিচ্ছে। প্রথমে বিশটি আধুনিক মৌবাক্স দেয়া হয় যাতে মধু, মোম, পোলেন, প্রপোলিস, এই চারটি জিনিস সংগ্রহ করা যাবে। এক বছর যাবত গবেষণা করে দেখা যায়, এতে গতানুগতিক পদ্ধতির চেয়ে দেড়গুন বেশি ফলন দেয়। সেই সাথে মধুর গুনগত মান অর্থাৎ আর্দ্রতা কম থাকে যা আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন।
উন্নত বাক্স গুলোতে ১৮-১৯% আর্দ্রতায় মধু সংগ্রহ করা যায়। সেই তুলনায় গতানুগতিক বা´ গুলোতে আর্দ্রতা ২৩-২৪%। অনেক ক্ষেত্রে এর পরিমান ২৭-২৮% হয়। মধুতে আর্দ্রতা যত বেশি থাকে সে মধু তত দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এতে মধু তার কার্যকরীতা হারায়। তবে আর্দ্রতা ১৭-১৮%রাখলে গুণগত মান হারায় না।
মৌমাছি ফুল থেকে পিলেট আকারে যে পরাগরেণু সংগ্রহ করে তা পোলেন ট্রাপ প্রযুক্তি ব্যাবহার করে হারভেষ্ট করা যায়। এ পোলেন ট্রাপটি ষাট জন চাষীর গতানুগতিক মৌবাক্সে ব্যবহার করে দেখা যায়, প্রতিটি মৌসুমে আধা কেজি পরাগরেণু পাওয়া যায়। এ পরাগরেণু ক্যাপসিউল হিসেবে বা সরাসরি চা, কফি, দুধ ইত্যাদির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। যা এর আগে বাংলাদেশে কখনো সংগ্রহ করা হয়নি।
প্রপোলিস ট্রাপ যা ষাট জন চাষী কে একশত বিশটি প্রদান করে মৌ-আঠা সফলভাবে পাওয়া যায়। এটি ও বাংলাদেশে প্রথম সংগ্রহ করা হয়। এর অত্যাধিক ঔষুধি গুনাগুণ রয়েছে।
এছাড়াও কুইন এক্সক্লুডার সফলভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, এক্ষেত্রে সাধারণত আমাদের দেশে ব্রুড পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় যার একটি চেম্বারে মৌমাছি, লার্ভা, পিউপা, ডিম, মধু, মোম, পোলেন, প্রপোলিস থাকে ফলে গতানুগুতিক ধারায় মধু সংগ্রহ করলে বাচ্চা মৌমাছি মারা যায়, তাই পরবর্তী মৌসুমে মৌমাছির সংখ্যা কমে যায়, ফলশ্রুতিতে মধু উৎপাদন ব্যাহত হয়। আর কুইনএক্সক্লুডার পদ্ধতিতে দোতলা বাক্স থাকে এতে রাণী মৌমাছি নিচের বাক্সে থেকে উপরে যেতে পারেনা, আর কর্মী মৌমাছিরা উপরে থাকে। ফলে মধু সংগ্রহ করলে ,বাচ্চা মৌমাছি মারা যায় না এবং মধুর গুনাগুণ অক্ষুন্ন থাকে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগীয় প্রধান, ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান এবং এই কাজটি যেন দ্রুত বাংলাদেশি সকল মৌচাষীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সেজন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
রংপুরে এই ডিমের হালি ৮০০ টাকা, এলাকায় চাঞ্চল্য
রংপুর : অবিশাস্য হলেও এটাই সত্যি। ৮শ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে ডিম। তবে এ ডিম মুরগি বা হাঁসের না। এটা রংপুর নগরীর জলকর এলাকায় কলেজছাত্র আব্দুর রহমান সৌরভের গড়ে তোলা খামারের টার্কি মুরগির ডিমের দাম।
এছাড়াও খামারে উৎপাদিত ডিম এবং বাচ্চা ছড়িয়ে পড়ছে আশেপাশের এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। লেখাপড়ার পাশাপাশি শখের বশে স্বল্প পরিসরে শুরু করেছিলেন টার্কি বার্ডের খামার। এখন খরচ ওঠার পর প্রতিমাসে ডিম এবং টার্কি বিক্রি করে আয় করছেন রংপুর সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র সৌরভ।
খেতে সুম্বাদু টার্কি মুরগির মাংসের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিক ভাবে টার্কির খামার গড়ে তুলতে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তিনি।
সৌরভ জানান, প্রথমে ফেসবুকে টার্কি মুরগি সম্পর্কে জানতে পারেন। পরে ঢাকা, নওগাঁ এবং সিলেটে গড়ে ওঠা টার্কি খামারে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে সিলেট থেকে ১৭টি টার্কি মুরগি কিনে এনে খামার শুরু করেন।
দুই মাস বয়সের প্রতিটি টার্কি কিনেছেন ২ হাজার টাকা করে। টার্কিগুলোর মধ্যে মুরগি ৯টি এবং মোরগ ছিল ৮টি। ৬ থেকে ৭ মাস বয়সে টার্কি ডিম দেয়া শুরু করে। দেশি মুরগির মতো ১৫ থেকে ২০টি ডিম দেওয়ার কিছুদিন পর আবার ডিম দেয়ার কথা থাকলেও গত কুরবানি ঈদের পর থেকে তিনি প্রতিদিন ৬ থেকে ৭টি করে ডিম পাচ্ছেন।
সৌরভ বলেন, ৯টি স্ত্রী টার্কির জন্য সমান সংখ্যক পুরুষ টার্কির দরকার নেই। সংখ্যায় বেশি হলে পুরুষ টার্কি অধিকাংশ সময় মারামারিতে লিপ্ত হয়। তাই দুটি পুরুষ টার্কি রেখে বাকি গুলো বিক্রি করেছেন। প্রতিটি টার্কি বিক্রি করেছেন ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। সাধারণ মুরগির মত রোগ বালাই হলেও টার্কির খামার করার পর তেমন বড় ধরনের কোনো অসুখ দেখা দেয়নি।
তিনি দাবি করেন, টার্কির রোগবালাই প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই প্রবল। ৬ মাসে একটি পুরুষ টার্কির ওজন হয়েছে ৫ থেকে ৬ কেজি এবং স্ত্রী টার্কির ওজন হয়েছে ৩ থেকে ৪ কেজি। বেশ কিছু বাচ্চা বিক্রির পরও বর্তমানে তার খামারে টার্কির সংখ্যা ৭০টি। এর মধ্যে বাচ্চা আছে ৩০টি।
এছাড়াও বর্তমানে বেশ কিছু দেশি মুরগির মাধ্যমে টার্কির ডিম ফোটানোর ব্যবস্থা করেছেন। এক মাস বয়সের একা জোড়া বিক্রি করেছেন ২ হাজার ৫শ টাকায় এবং প্রতিটি ডিম বিক্রি করছেন ২শ টাকা করে।
তিনি বলেন, তার খামারে উৎপাদিত ডিম ইতোমধ্যে নিজ এলাকা ছাড়াও ঢাকা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, হবিগঞ্জ এবং গোপালগঞ্জ থেকে এসেও কিনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। খামার শুরুর সময় ৪০ হাজার টাকা খরচ হলেও টার্কি মুরগি এবং ডিম বিক্রি করে সে টাকা উঠে এসেছে। তিনিই প্রথম ‘রংপুর টার্কি ফার্ম’ নামে বাণিজ্যিকভাবে এ খামার করেছেন।
সৌরভ বলেন, টার্কির মাংসের সুখ্যাতি বিশ্বজুড়ে। তাই উৎপাদন খরচ তুলনামূলক অনেক কম হওয়ায় টার্কি মুরগিপালন করা অনেক লাভজনক। খাবার বলতে ঘাস হচ্ছে টার্কির প্রধান খাবার। এছাড়া পাতা কপি, কচুরিপনা এবং দানাদারযুক্ত খাবার হচ্ছে টার্কির খাবার। তাই যে কেউ অনায়াসে টার্কি পালন করে লাভবান হতে পারেন।
উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, একটি পুরুষ টার্কি ৬ মাসে ৫ থেকে ৬ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। যদি ৩শ টাকা কেজি ধরা হয় তাহলে ৬ কেজি ওজনের একটি টার্কির মূল্য হচ্ছে ১ হাজার ৮শ টাকা। এর জন্য খরচ সর্বসাকূল্যে ৫শ টাকার বেশি হবে না। অন্যদিকে ৬ মাসে গরুর খামারে ওই সময়ে শুধু খরচই হবে কিন্তু তেমন লাভ সম্ভব নয়।
বর্তমানে তিনি ১শ ডিমপাড়া টার্কির খামার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এজন্য এক ব্যাচে ৫শ বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ইনকিউবেটর মেশিন স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন।
তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভারত থেকে নিম্নমানের টার্কির বাচ্চা নিয়ে আসছে একটি প্রতারক চক্র। কম টাকায় বাচ্চাগুলো বিক্রি করায় সহজে ক্রেতা আকৃষ্ট হচ্ছেন। কিন্তু এ গুলোর মান খুবই খারাপ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাচ্চাগুলো মারা যাচ্ছে। কিন্তু সহজে নিম্নমানের বাচ্চা চেনার কোনো উপায় না থাকায় তিনি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে বাচ্চা সংগ্রহের পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে আলাপকালে রংপুরের হাঁস মুরগি খামারের সহকারী পরিচালক ডা. জিতেন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, টার্কি হচ্ছে পাখি প্রজাতির অন্তর্ভূক্ত। এখনো আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে এর প্রচরণ শুরু হয়নি। তবে এর মাংস খুবই সুস্বাদু। অল্প খরচে টার্কি পালন সম্ভব হয় বলে খামারিরা সহজে লাভবান হতে পারেন।