Home চাষাবাদ পদ্ধতি বারোমাসি আম বারি ১১ এর বিশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি

বারোমাসি আম বারি ১১ এর বিশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি

230
0
বারোমাসি আম বারি ১১

বারোমাসি আম বারি ১১ এর বিশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি

আজকের কৃষি এর কাছে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন বারোমাসি আম বারি ১১ এর বিশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য তাই আজকে আমরা আর্টিকেলটি সেই সকল কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য করেছি। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং ভালো লাগলে শেয়ার করে দিন অন্য কৃষি উদ্যোক্তাদের কাছে।

বারোমাসি আম বারি ১১ যা জানা দরকার 

বারি আম-১১
উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠান : বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)

জাতের ধরণ : উফশী

জাতের বৈশিষ্ট্য :
লম্বাটে, হলুদাভ সবুজ

আম কম বেশি সবারই পছন্দের একটি ফল। কিন্ত পছন্দের এই ফলটি যখন আমাদের দেশে সারা বছরই পাওয়া যাবে তখন কতই না ভালো হবে আম প্রেমিক মানুষের জন্য। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এমনি একটি আমের জাত উদ্ভাবন করেছে যা সারা বছর ফল দিবে। আমের এই জাতটি হলো বারি আম ১১।

বারি আম ১১ এর বিশিষ্ট্যঃ

. বারি আম ১১ বারোমাসি জাতের আম অর্থাৎ সারা বছরই ফল দিয়ে থাকে।
. বছরে তিনবার ফল প্রদান করে থাকে। নভেম্বর, ফেব্রুয়ারি ও মে মাসে গাছে মুকুল আসে এবং মার্চ-. । . এপ্রিল, মে-জুন এবং জুলাই-আগস্ট মাসে ফল আহরণের উপযোগী হয়।
. ফল লম্বাটে ( লম্বায় ১১.৩ সেমি ) এবং প্রতিটি আমের গড় ওজন ৩০০-৩৫০ গ্রাম।
. কাঁচা আমের ত্বক হালকা সবুজ। আর পাকলে ত্বক হয় হলুদাভ সুবজ।
. আম গাছটির উচ্চতা ৬-৭ ফুট। গাছটির কোনো অংশে মুকুল, কিছু অংশে আমের গুটি, কিছু অংশে . . . . কাঁচা আম, আবার কোথাও পাকা আম। একটি গাছেই ফুটে উঠেছে আমের ‘জীবনচক্র’।
. এটি খেতে সুস্বাদু, তবে একটু আঁশ আছে। ফলের শাঁস গাঢ় হলুদ বর্ণের।
. এই জাতের ৪-৫ বছর বয়সী গাছ থেকে প্রতিবার ৬০-৭০টি আম আহরণ করা যায়। এছাড়াও এই . . . . . জাতের একটি গাছে বছরে প্রায় ৫০ কেজি পর্যন্ত আম হয়ে থাকে।
. বারি আম ১১ এর এক বছর বয়সী গাছে আমের মুকুল আসে।
. আম গাছের একটি থোকার মধ্যে ৫-৬ টি আম থাকে।
. আমের উচ্চফলনশীল এই জাতটি বাংলাদেশের সব এলাকায় চাষ উপযোগী।
. আমের এই জাতটি সম্পূর্ণ দেশীয় আম হাইব্রিড নয়। এটি প্রাকৃতিকভাবে সংকরায়ণের ফলে সৃষ্ট।

আরও পড়ুন   পেঁপে চারা রোপণের সঠিক সময়


চাষের উপযুক্ত জমিঃ

মাঝারি উঁচু জমি এবং দোআঁশ মাটি বারি আম-১১ চাষের জন্য উপযোগী।

চারা বপনের নিয়মঃ

লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব (ইঞ্চি ) : ৩১৪

চারা থেকে চারার দূরত্ব (ইঞ্চি) : ৩১৪

শতক প্রতি ফলন (কেজি) : ৮০ – ৯০

হেক্টর প্রতি ফলন (টন) : ২২

উপযোগী ভূমির শ্রেণী : মাঝারি উচু

উপযোগী মাটি : দোআঁশ

উৎপাদনের মৌসুম : সারা বছর

বপনের উপযুক্ত সময় :

জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় / ভাদ্র – আশ্বিন (মে-জুন/ আগস্ট-সেপ্টেম্বর)

ফসল তোলার সময় :

মে মাস আমের মৌসুম হওয়ায় এ মাসে আমের ফলন বেশি হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে আগস্ট মাসে, তৃতীয় পর্যায়ে নভেম্বর এবং চতুর্থ পর্যায়ে ফেব্রুয়ারি মাসে আম পাকবে।

বংশবিস্তারঃ বারি আম-১১ বীজের বা কলমের মাধ্যমে বংশবিস্তার করা যায়। বীজ থেকে চারা উৎপাদন করলে মাতৃগাছের মতো ফল পাওয়া যায় না। তাই কলমের মাধ্যমেই এই জাতের আমের চারা উৎপাদন ও বংশবিস্তার করা উত্তম। এক্ষেত্রে জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় / ভাদ্র – আশ্বিন (মে-জুন/ আগস্ট-সেপ্টেম্বর) করাই উত্তম।

আম পাকার সময়ঃ মে মাস আমের মৌসুম হওয়ায় এ মাসে আমের ফলন বেশি হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে আগস্ট মাসে, তৃতীয় পর্যায়ে নভেম্বর এবং চতুর্থ পর্যায়ে ফেব্রুয়ারি মাসে আম পাকবে।

বারি আম ১১ এর ফলনঃ বারি আম ১১ এর ফলন ২২,০০০ কেজি/হেক্টর বা ২২ টন/ হেক্টর। এছাড়াও প্রতি শতকে ৮০-৯০ কেজি আমের ফলন হয়ে থাকে।

প্রাপ্তিস্থানঃ বারি আম -১১ বা বারমাসি আমের এই জাতটি এখন বাংলাদেশের সব উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্রেই চাষ হচ্ছে। আমের এই জাতটি দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দেশের সকল আঞ্চলিক উদ্যানতত্ব কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্ছে।

বারি আম ১১ এর সম্ভাবনাঃ বারি আম-১১ থেকে সারা বছর ফুল,ফল ও পাকা আম পাওয়া যায বিধায় ভবিষ্যতে এই জাতের আমের চাষ বাড়বে। এছাড়াও বাড়ির ছাদেও বারি আম-১১ চাষ করা সম্ভব।

আরও পড়ুন   কাঁঠাল চাষ পদ্ধতি

সম্পূর্ন আরটিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অন্য কৃষি উদ্যোক্তাদের মাঝে শেয়ার করে দিন।