বিটরুট চাষ পদ্ধতি
আধুনিক ফসল চাষাবাদে বিট্রুট পিছিয়ে নেই তাই আজকে আমরা আলোচনা করবো বিটরুট চাষ পদ্ধতি বিস্তারিত নিয়ে। মনোযোগ দিয়ে পুরো আর্টিকেল পড়ুন।
বিটরুট চাষ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতে হলে সর্বপ্রথম আমাদের উচিত বিটরুটের পরিচিতি তুলে ধরা কারন এই ফসল একটি আধুনিক ফসল এবং আমাদের দেশে এর চাষাবাদ পদ্ধতি প্রায়ই নতুন বলা চলে।
বিটরুট চাষ পদ্ধতি ও জাত পরিচিতি জানুন
জাত পরিচিতি
সুগারবিট (Beta valgaris L.) একটি শীত প্রধান দেশের ফসল। বর্তমানে উদ্ভাবিত জাত দ্বারা : Tropical এবং Sub-tropical অঞ্চলেও সুগারবিট চাষ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই) এর কৃষিতত্ব ও ফার্মিং সিস্টেম বিভাগ, সিনজেন্টা বাংলাদেশ লি. এর মাধ্যমে সুগারবিটের সীমিত সংখ্যক জাত নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করছে। একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় বিএসআরআই কর্তৃক ২০১১-২০১২ শস্য মৌসুমে বাংলাদেশের ১৬টি চিনিকল এলাকায় ট্রপিক্যাল সুগারবিটের উপর বিভিন্ন গবেষণা পরিচালিত হয়েছে যার অর্জিত ফলাফলের সারসংক্ষেপ নিম্নে দেয়া হলো :
জাত | রোপণ মৌসুম (নভেম্বর-এপ্রিল) | রোপণ মৌসুম (ডিসেম্বর-মে) | ||
ফলন ( টন/একর) | পোল (%) | ফলন (টন/একর) | পোল (%) | |
শুভ্রা | ৫৪ | ১৩.১৯ | ৩২ | ১২.২০ |
কাভেরী | ৫১ | ১৪.২১ | ৪০ | ১২.২০ |
ইবি-০৬১৮ | ৪৫ | ১৪.২৮ | ৩০ | ১১.৯৬ |
ইবি-০৬১৬ | ৩৬ | ১৪.০৩ | ২৯ | ১২.৩৭ |
ইবি-০৮০৯ | ৪০ | ১৩.৯৯ | ৩৪ | ১১.৫৬ |
তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই), ঈশ্বরদী, পাবনা
বিটরুট বপন/রোপণ প্রযুক্তি
বীজ বপনের সময়ঃসুগারবিট শীতকালীন ফসল। বাংলাদেশে এর বীজ বপনের উত্তম সময় ১৫ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর (কার্তিক মাস)।
বীজ বপন পদ্ধতিঃ প্রায় ২০ ইঞ্চি দূরে দূরে তৈরীকৃত রিজ/আইলের উপর ২০ সেমি. দূরে দূরে বীজ ২-৩ সেমি. নীচে বপন করতে হবে। কাঙ্খিত গাছের সংখ্যা পাওয়ার জন্য পাশাপাশি দুটি গর্ত করে প্রতিটি গর্তে ১টি করে বীজ বপন করতে হবে এবং পরবর্তী ২০-২৫ দিন পর প্রতি ২০ সেমি. দূরে একটি করে গাছ রেখে বাকী গাছ তুলে ফেলতে হবে।
সুগারবিট চাষে সার ব্যবস্থাপনা
সুগারবিট উৎপাদন সফলভাবে করার জন্য নিম্নরুপে সার প্রয়োগ করতে হবে-
সারের নাম | সারের পরিমাণ শতকের জন্য | মন্তব্য |
পচা গোবর | ৬০.৬ কেজি | গ্রাম বা কেজি যেকোন একটি দেখুন। এলাকা ও মৃত্তিকাভেদে সারের পরিমাণ কম-বেশী হতে পারে। |
ইউরিয়া | ১.০৫ কেজি | |
টিএসপি | ০.৪৮ কেজি | |
পটাশ | ০.৯১ কেজি | |
জিপসাম | ০.৪০ কেজি | |
দস্তা | ০.০৪ কেজি | |
বোরণ | ০.০৮ কেজি |
– টেবিলে প্রদত্ত সারের মাত্রা এলাকা ও মৃত্তিকার ভিন্নতার কারণে পরিবর্তন হতে পারে।অধিকতর তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন।
সুগারবিট চাষে অন্যান্য প্রযুক্তি
সেচ প্রয়োগঃ সুগারবিট উৎপাদনের জন্য মাটির আদ্রতা অবশ্যই ৬৫% এর উপরে রাখতে হবে।সুগারবিটের সক্রিয় মূল প্রায় ২০০-২৫০ সেমি পর্যন্ত মাটির গভীরে প্রবেশ করতে পারে তাই মাটির ৬০ সেমি গভীর থেকে সে প্রায় ৭০% পানি গ্রহণ করে। প্রতি ১০০ কেজি মূল উৎপাদনের জন্য সুগারবিট মাটি থেকে প্রায় ৪০-৪৫ কেজি পানি গ্রহণ করে। সুগারবিটের জীবনকাল মাটির আদ্রতাভেদে ৫-৬ টি সেচ প্রয়োজন হয়। অঙ্কুরোদগম ভালভাবে হওয়ার জন্য বীজ বপনের পরপরই এমনভাবে একটি সেচ দিতে হবে যাতে রিজ/আইল সম্পূর্ণভাবে ভিজে যায়। পরবর্তীতে ১৫/২০ দিন পরপর সেচ দিতে হবে। বিট উত্তোলের ১৫-২০ দিন পূর্বে সেচ প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। তবে উত্তোলনের সময় মাটি খুব শুকনা ও শক্ত থাকলে সহজভাবে বিট উত্তোলনের জন্য হালকা সেচ প্রয়োগ করা যেতে পারে।
সুগারবিট সংগ্রহ ও পরবর্তী ব্যবস্থাপনা
বিট উত্তোলন ও ফলনঃ
প্রক্রিয়াকরণঃ