Home মৎস্যসম্পদ ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি

ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি

74
0
ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ
ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ

ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি

আজকে আমরা আলোচনা করবো ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি নিয়ে যাতে কৃষি উদ্যোক্তারা নদীতে অল্প খরচে খাঁচায় মাছ চাষ করতে পারে। সবাই পড়ে শেয়ার করে দিন অন্যদের কাছে। 

খাঁচায় হাঁস-মুরগী পালনের পাশাপাশি এবার নদীতে ও পুকুরে মানুষ খাঁচায় বা জালের খাঁচায় মাছের চাষ শুরু করেছেন যা সত্যি অবাক করার মতো ব্যাপার।

খাঁচায় মুরগী পালনের পদ্ধতিটি যেমন ত্বরিৎ গতিতে প্রসারিত হয়েছে, ফলশ্রুতিতে অনেক মানুষই আজ এ পেশায় নিজের কর্ম সংস্থানের ব্যাবস্থা করে নিয়েছেন।

জালের খাঁচায় মাছের চাষ পদ্ধতিও একদিন জনপ্রিয় হবে এবং এ খাতে হাজারও মানুষের কর্মের সংস্থান হবে, উপরন্তু আমিষের চাহিদাও পূরণ হবে।

যাদের পুকুর নেই মাছ চাষ আজ আর তাদের জন্য সমস্যাই নয়। জালের খাঁচায় মাছ চাষের আদর্শ ক্ষেত্রই হচ্ছে নদী-নালা, খাল-বিলসহ উন্মুক্ত জলাশয়। যেখানে প্রবল স্রোত নেই অথচ আছে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ। মাছ চাষের জন্য উত্তম জায়গা হচ্ছে এমন উৎসগুলো।

মশারির মতো বিশাল আকারের জাল প্রবহমান পানিতে ডুবিয়ে চারকোণা বেধেঁ তাতে ২”- ৩” সাইজের পোনা ছেড়ে চার মাস লালন-পালন করলে পুকুরের তুলনাই উৎপাদন ২০ গুণ বেশি পাওয়া যাবে।

কেননা পুকুরের পানি বদ্ধ আর নদীর পানিতে সব সময়ই স্বাভাবিক প্রবাহ থাকে বলেই এখানকার পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ পুকুরের চাইতে অনেক বেশি যা মাছের বৃদ্ধির জন্য সহায়ক।

পুকুরে মাছকে সরবরাহকৃত খাবারের উচ্ছিষ্ট এবং মাছের মল জমে পানি কিছুটা হলেও দূষিত হয় যা নদীতে হওয়ার এখানে সে সুযোগ নেই। সরবরাহকৃত খাবারের উচ্ছিষ্ট এবং মাছের আবর্জনা জালের সরু ফাঁক দিয়ে প্রবাহিত পানিতে চুয়ে যায় যার ফলে পানি সব সময়ই বিশুদ্ধ থাকছে।

পুকুর বদ্ধ হওয়ার জৈব খাবারের পরিমাণ কম থাকে ।কিন্তু নদীতে জৈব খাবার উৎপাদনের সুযোগ অনেক বেশি যা মাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। তাই জালের খাঁচায় মাছ চাষ অত্যন্ত সুবিধাজনক ও লাভজনক পদ্ধতি।

এ পদ্ধতিতে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মাছ চাষ শুরু করেছেন গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থানার উলুখেলিক গ্রামের হাবিবুর রহমান। তিনি স্থানীয় বালু নদীতে বহুদিন বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে সফল হয়েছেন এবং এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবে এই পদ্ধতিতে মাছের চাষ করতেছেন।

বাংলাদেশে প্রকৃতিগত কারণেই জালের খাঁচায় মাছের চাষ ব্যবস্থাটি জনপ্রিয় হবে। কারণ বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশের অর্ধেক পানির নিচে থাকে। এই ৪/৫ মাস সময়ে নদী-নালা, খাল-বিলই হতে পারে মাছ চাষের মোক্ষম স্থান।

আরও পড়ুন   বন্যায় মৎস্য চাষীদের ক্ষতি কমানোর জন্য যা যা করণীয়
ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি
ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি

খাঁচায় মাছ চাষের সুবিধাঃ

খাঁচায় মাছ চাষ করলে পুকুর বা কোনো জলাশয়ের প্রয়োজন হয় না, উপরন্তু যে কোনো সময়ই খাঁচার সংখ্যা বৃদ্ধি করে খামার সম্প্রসারণ সম্ভব।


নদীর প্রবহমান পানিতে প্রচুর অক্সিজেন থাকায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
খাঁচার মাছের মাছের বর্জ্য প্রবাহমান নদীর পানির সাথে অপসারিত হয় বিধায় পানি দূষিত হয় না।


নদীর পানি প্রবাহমান থাকায় প্রতিনিয়ত খাঁচার অভ্যন্তরের পানি পরিবর্তন হতে থাকে ফলে পুকুরের চেয়ে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষ করা যায়। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উৎস্য থেকেও অনেকটা খাবার পায়।


ভাসমান খাঁচা তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ:

খাঁচা তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ এখন দেশেই পাওয়া যায়। উপকরণ সমূহের তালিকা হলো:

খাঁচা তৈরির মূল পলিইথিলিন জাল (৩/৪ ইঞ্চি থেকে ১ ইঞ্চি মেসের)
রাসেল নেট (খাদ্য আটকানোর বেড়া তৈরীতে)
নাইলনের দড়ি ও কাছি
কভার নেট বা ঢাকনা জাল (পাখির উপদ্রব থেকে রক্ষার জন্য)
১ ইঞ্চি জিআই পাইপ (৭০ ফুট প্রতিটি খাঁচার জন্য)
ফ্রেম ভাসমান রাখার জন্য শূন্য ব্যারেল/ড্রাম (২০০ লিটারের পিভিসি ড্রাম, ওজন ৯ কেজি’র উর্ধ্বে)
খাঁচা স্থির রাখার জন্য গেরাপি (অ্যাঙ্কর)
ফ্রেমের সাথে বাঁধার জন্য মাঝারী আকারের সোজা বাঁশ (প্রয়োজনীয় সংখ্যক)


খাঁচা বসানোর উপযোগী স্থান:

বর্ষা মৌসুমে যে সমস্ত এলাকা ডুবে যায়, সেখানে অথবা নদীর বাঁকে যেখানে স্রোত থাকে খুব কম সেখানে খাঁচা বসাতে হবে অথবা নদীর এমন অংশ যেখানে একমূখী প্রবাহ কিংবা জোয়ার ভাটার শান্ত প্রবাহ রয়েছে সেখানে খাঁচা স্থাপন করা ভালো। নদীর মূল প্রবাহ যেখানে অত্যধিক তীব্র স্রোত বিদ্যমান সে অঞ্চলে খাঁচা স্থাপন না করাই ভালো।

নদীতে প্রতি সেকেন্ডে ৪-৮ ইঞ্চি মাত্রার পানি প্রবাহে খাঁচা স্থাপন মাছের জন্য উপযোগী, তবে প্রবাহের এ মাত্রা সর্বোচ্চ সেকেন্ডে ১৬ ইঞ্চি এর বেশী না হলেই ভালো।

মূল খাঁচা পানিতে ঝুলন্ত রাখার জন্য নূন্যতম ১০ ফুট গভীরতা থাকা প্রয়োজন।খাঁচার তলদেশ নিচের কাদা থেকে নূন্যতম ৩ ফুট ব্যবধান থাকা আবশ্যক।


স্থানটি লোকালয়ের নিকটে হওয়া ভালো যাতে সহজে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
খাঁচা স্থাপনের স্থান থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হতে হবে যাতে সহজে মাছ বাজারজাত করা যায়।খাঁচা স্থাপনের কারণে যাতে কোনভাবেই নৌ চলাচলে সমস্যা না হয় এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে।


খাঁচা স্থাপনের জায়গাটি এমন হতে হবে যাতে কলকারখানার বর্জ্য কিংবা কৃষিজমি থেকে বন্যা বা বৃষ্টিতে কীটনাশক প্রভাবিত পানি নদীতে পতিত হয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে খাঁচার মাছ মরে না যায়।


খাঁচার মাপঃ

প্রথমে (দৈর্ঘ্য ২০ ফুট × প্রস্থ ১০ ফুট × উচ্চতা ৬ ফুট) বা (দৈর্ঘ্য ১২ ফুট × প্রস্থ ১০ ফুট × উচ্চতা ৬ ফুট) সাইজের আয়তকারের ফ্রেম তৈরি করতে হবে জিআই পাইপ দ্বারা । ওই ফ্রেমের প্রতিটি কোণে ১০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট একটি করে জিআই পাইপ ঝালাই করে বসিয়ে দিতে হবে। তারপর ফ্রেমের চারপাশে জাল বেঁধে দিতে হবে।

আরও পড়ুন   মাছ চাষে বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিকার

প্রতি দুই ফ্রেমের মধ্যে তিনটি করে প্লাস্টিকের ড্রাম স্থাপন করে পানিতে সারিবদ্ধভাবে ফ্রেমগুলো স্থাপন করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক নোঙর দিয়ে খাঁচাটি পানির নির্দিষ্ট স্থানে বসাতে হবে। এ ক্ষেত্রে জিআই পাইপের স্থলে বাঁশও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে স্থায়িত্বকাল কম হবে।

খাঁচা তৈরির জন্য জালগুলোর মেস ৩/৪ ইঞ্চি থেকে ১১/৪ ইঞ্চির মধ্যে হওয়া ভালো যেন কাঁকড়া, গুইসাপ, কচ্ছপ ইত্যাদি ক্ষতিকর প্রাণী জালগুলো কাটতে না পারে।

খাঁচায় চাষযোগ্য মাছঃ


খাঁচায় সব ধরনের মাছ চাষ করা যায় না। উৎপাদন ভালো পাওয়ার জন্য নিম্নোক্ত মাছসমুহ চাষ করা ভালো-

১. বিদেশী ঘাওর
২. নাইলোটিকা
৩. রাজপুঁটি
৪. কার্প প্রজাতি
৫. পাঙ্গাশ।
এসব মাছের গড় উৎপাদন ৪-৫ মাসে প্রতি ঘনমিটার ৫-১৫ কেজি।

খাঁচায় পোনা ছাড়ার পরিমাপঃ

পোনা সব সময়ই বড় সাইজের ছাড়াই ভালো। এতে সুবিধা হলো চাষকালীন সময় কম লাগবে, আবার মৃত্যু হারও কম হয়। পোনা আকারে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি এর কম হলে চলবে না,বরং জালের ওপর নির্ভর করে পোনা ছাড়তে হবে।

খাঁচায় মাছের প্রজাতি ভেদে যেমন প্রতি ঘনমিটারে ৩০ থেকে ৪০টি পর্যন্ত মনোসেক্স তেলাপিয়া পোনা মজুত করা যাবে। মজুদকালে পোনার আকার এমন হতে হবে যাতে জালের মেসের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে অর্থাৎ নূন্যতম ২৫-৩০ গ্রাম আকারের পোনা মজুত করতে হবে।

ভাসমান খাঁচা তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ:
ভাসমান খাঁচা তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ:

খাঁচায় মাছের সম্পূরক খাদ্য প্রদানঃ

খাঁচায় মাছের ঘনত্ব বাশি থাকায় বাইরে থেকে প্রয়োজনমতো খাদ্য দিতে হবে। যদিও চলমান বা খোলা পানিতে কিছু উদ্ভিদ ও প্রাণীকণা সব সময়ই আসে। তবে তা যথেষ্ট নয়।কিছু খাল-বিলে কোনো কোনো মৌসুমে প্রচুর উদ্ভিদ কণার জন্ম হয়।

ফলে অল্প ঘনত্বে মাছ ছেড়ে বিনা খাদ্যেই প্রতি ঘনমিটারে ৪-৫ মাসে ৫-৭ কেজি মাছ উৎপাদন করা যায়। তবে সুষম খাদ্য হিসেবে দৈনিক ২-৩ বার খাবার দিতে হয়। এখানে প্রাণিজ আমিষ, যেমন- শুঁটকি মাছ, শামুকের মাংস, গরু-ছাগলের রক্ত, গরু-ছাগলের নাড়ি-ভুঁড়ি ইত্যাদি।

দ্বিতীয়ত খৈল। যে কোনো খৈল, যেমন- সরিষা, তিল, নারকেল, বাদাম, সয়াবিন, তিসি, তুলা ইত্যাদি। উচ্ছিষ্ট ভাত। এছাড়া প্রচুর ঘাস খায় নাইলোটিকা, গ্রাস কার্প ও রাজপুঁটি।

ঘাসের মধ্যে নরম ঘাস, যেমন- রাইদা, ইছাদল, পোটকা প্রভৃতি। সুষম খাদ্যের জন্য শুঁটকি অথবা যেকোনা প্রাণিজ আমিষ ১০-৩০%, খৈল ২০-৪০%, গমের ভুষি বা মিহি কুঁড়া ২০-৫০%, তার সাথে ৫% চিটাগুড় ও ৫-১০% সস্তা দামের আটা ও ০.৫% ভিটামিন। খাবার তৈরির সময় একটু পানি মেশাবেন যেন খাবারটা মাখতে মাখতে সাবানের মতো শক্ত হয়। মনে রাখতে হবে, তৈরি বল ১৫-২০% মিটার পর্যন্ত পানিতে যেন না গলে।

খাদ্য বাঁশের ঝুড়িতে করে খাঁচার মধ্যে পানির ১ হাত নিচে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। মাছ ৫-১০ মিনিটের মধ্যে সব খাদ্য শেষ করে ফেলবে। মাছের ওজন ৩০০-৫০০ গ্রাম হওয়া পর্যন্ত সম্পূরক খাদ্য প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে। মজুদ থেকে শুরু করে বাজারজাত পর্যন্ত ৭৫০-১০০০ গ্রাম ওজনের মাছ উৎপাদন করতে সর্বোচ্চ ১.৫ কেজি খাদ্যের প্রয়োজন হয়।

আরও পড়ুন   পাঙ্গাস মাছ চাষ পদ্ধতি
খাঁচায় মাছের সম্পূরক খাদ্য প্রদানঃ
খাঁচায় মাছের সম্পূরক খাদ্য প্রদানঃ

দৈনিক খাঁচায় খাদ্য প্রদানের পরিমাণঃ

মাছ তার দৈহিক ওজনের গড়ে ৩-৫% খাদ্য খায়। তবে দৈহিক ওজন ১ গ্রাম থেকে ২০ গ্রাম পর্যন্ত পৌছতে মাছ ১০-২০% পর্যন্ত খাদ্য খায়। এ সময় মাছের বাড়তিও বেশি হয়।

গড়ে সুষম খাদ্য দিয়ে ১ কেজি মাছ উৎপাদন করতে ২/৩ কেজি খাদ্য দরকার হয়। তবে খাবারের সাথে সাথে কাঁচা গোবর, মুরগীর বিষ্ঠা ও প্রচুর ঘাস দিলে খাদ্য সরবরাহের খরচ কিছুতা কমে যায়।

খাঁচায় মাছ বাছাইকরণ:

সাধারণত প্রত্যাশিত উৎপাদনের জন্য খাঁচায় পোনা মজুদের তিন সপ্তাহ পর প্রথম বার খাঁচার মাছ বাছাই করতে হবে (তবে জাত ভেদে ভিন্ন সময় হতে পারে) । দিনের তাপমাত্রার দিকে লক্ষ্য রেখে সকাল বেলা কিংবা পড়ন্ত বিকেলে খাঁচার জন্য মাছ বাছাই করা উচিত।

যখন নদীর পানি বেশি প্রবাহমান থাকে তখন খাঁচার পানি দ্রুত পরিবর্তিত হতে থাকে। এ সময় খাঁচার মাছ বাছাই করা অধিক উপযোগী। বাজারজাত করার পূর্বে প্রয়োজন অনুসারে দুই তিনবার বাছাই করতে হবে।

খাঁচা তৈরির সম্ভাব্য খরচ ও মাছের উৎপাদনঃ

২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি খাঁচা তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ১৬ হাজার টাকা, যা চার-পাঁচ বছর স্থায়ী হয়। মাছের আকার ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম হলেই বিক্রির উপযোগী হয়, আর এ ক্ষেত্রে সময় লাগে মাত্র ছয় মাস।

এ ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটারে কমপক্ষে ৩০ কেজি মাছ উৎপাদিত হয়ে থাকে। সাধারণত চাষকৃত পোনার ওজন ১০ গ্রাম হয়ে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে আকারে বড় অর্থাৎ ২০ থেকে ৩০ গ্রাম ওজনের পোনা চাষ করলে সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়া যায়।

খাঁচা তৈরি, পোনার মূল্য, খাদ্য, শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে প্রতি ১০টি খাঁচা থেকে প্রতি ছয় মাসে কমপক্ষে এক লাখ ১০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। কেবল খাঁচায় চাষ করলে অল্প মূলধনে, অল্প সময়, অল্প খরচে অধিক উৎপাদন সম্ভব হয়। উন্নত বিশ্বে বিজ্ঞানীরা আজ প্রতি বর্গমিটা প্রতি মাসে ১০ কেজি মাছ উৎপাদন এ হিসাবে দাঁড়ায় প্রতি বিঘায় মাসে ১০ মেট্রিক টন বা ১০ হাজার কেজি।

এর মদ্যে স্থায়ী খরচ ৬ হাজার ৫শ’ টাকা বাদ দিলে মোট মুনাফা ১৯ হাজার ৬শ’ ৫০ টাকা প্রতি খাঁচায় প্রতি ৩/৪ মাসে। খাঁচায় মাছ চাষ করতে রাত-দিন সব সময় দারোয়ান অবশ্যই থাকতে হবে। কেননা অল্প জায়গায় এত অধিক মাছ থাকায় চুরির সম্ভাবনা বেশি। তারপরও এতি বাংলাদেশের জন্য লাভজনক হতে পারে।

আমাদের দেশে সাম্প্রতিক সময়ে খাঁচায় মাছ চাষ নতুন আঙ্গিকে শুরু হলেও বিশ্ব অ্যাকুয়াকালচারে খাঁচায় মাছ চাষের ইতিহাস অনেক পুরোনো। বাংলাদেশে প্রচুর খাঁচায় মাছ চাষের উপযোগী নদী রয়েছে। সারা বছর খাঁচায় মাছ চাষ করে মাছের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।

প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার কারণে আধুনিক সময়ে খাঁচায় মাছ চাষ দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিভিন্ন ধরনের জলাশয়ে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে উপযোগী আকারের খাঁচা স্থাপন করে বেশি ঘনত্বে বাণিজ্যিকভাবে মাছ উৎপাদনের প্রযুক্তি হলো খাঁচায় মাছ চাষ।