Home অন্যান্য ফসল মাশরুম কি , মাশরুম চাষ , মাশরুমের পুষ্টিমান ও উপকারিতা

মাশরুম কি , মাশরুম চাষ , মাশরুমের পুষ্টিমান ও উপকারিতা

138
0
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

মাশরুম কি , মাশরুম চাষ , মাশরুমের পুষ্টিমান ও উপকারিতা

মাশরুম হলো এক ধরণের ভক্ষণযোগ্য মৃতজীবী ছত্রাকের ফলন্ত অংগ। এগুলো মূলত Basidiomycetes অথবা Ascomycetes শ্রেণীর অন্তরগত ছত্রাক। মাশরুম একপ্রকার অপুষ্পক উদ্ভিদ। এটি ছত্রাকের বা ইউমাইসেটিসের অন্তর্ভুক্ত । এতে সবুজ কণা (Chlorophyll) নাই বিধায় সবুজ কণাযুক্ত উদ্ভিদের মতো নিজের খাদ্য নিজে প্রস্তুত করতে পারে না। সে কারণে খাদ্যের জন্য এরা প্রাণীজ বা উদ্ভিজ বস্তুর ওপর নির্ভরশীল।

মাশরুম ব্যাঙের ছাতার মতো এক ধরণের ছত্রাক জাতীয় গাছ। মাশরুম ও ব্যাঙের ছাতা দেখতে একই রকম হলেও এদের মাঝে অনেক পার্থক্য আছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে জন্ম নেওয়া কোন কোন মাশরুম বিষাক্ত হয় এবং সেগুলো খাওয়া যায় না। সূর্যের আলোয় প্রাকৃতিকভাবে খুব বেশি মাশরুম জন্মাতে পারে না তাই প্রাকৃতিক উপায়ে খাবারের জন্য বেশি করে মাশরুম পাওয়া যায় না।
পৃথিবীতে প্রায় ৩ লাখ প্রজাতির মাশরুম রয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রায় ২ লাখ ৯০ হাজার প্রজাতি খাওয়ার অযোগ্য। আনুমানিক ১০ হাজার প্রজাতির মাশরুমের ওপর গবেষণা চলছে। সব ধরনের ছত্রকই মাশরুম না। শুধুমাত্র খাওয়ার উপযোগী ছত্রাকই মাশরুম। অর্থাৎ সকল মাশরুমই ছত্রাক কিন্তু সকল ছত্রাক মাশরুম নয়। পৃথিবীতে ৩ লক্ষ্য প্রজাতির ছত্রাক থাকলেও এ যাবত কাল পর্যন্ত মাত্র ২০০ প্রজাতির খাওয়ার উপযোগী ছত্রাক তথা মাশরুমের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩০ টি প্রজাতি বানিজ্যিক ভিত্তিতে এবং ১০ টি ইন্ডাট্রিয়াল স্কেলে চাষ করা সম্ভব। বলে রাখা ভালো প্রতিটি প্রজাতিরই আবার অসংখ্য চাষ উপযোগী স্ট্রেইন (বর্ন) রয়েছে। বর্তমানে জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারন কেন্দ্রে ১৫৭ টি চাষ উপযোগী মাশরুমের স্ট্রেইন রয়েছে।
পবিত্র কোরআন ও হাদীসে মাশরুমকে অত্যন্ত মর্যাদাকর খাবার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সহীহ বুখারী শরীফে রাসুল (সঃ) বলেছেন, আল কামাতু মিনাল মান্না ওয়া মাহা সাফা আল্ আইন” অর্থাৎ মাশরুম এক শ্রেণীর মান্না এবং এর রস চোখের জন্য ঔধষ বিশেষ। আর মান্না সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে সূরা বাকারার ৫৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে – অযাল্লালনা আলাইকুমুল গামামা ওয়া আনযালনা আলাইকুমুল মান্না-ওয়াস্-সালওয়া কুলুমিন তায়্যিবাতি মা রাযাক্বনাকুম; ওমা জলামুনা আলাকিন কানূ আনফুছাহুম ইয়াযলিমূন অর্থাৎ আর আমি মেঘমালা দিয়ে তোমাদের উপর ছায়া দান করেছি এবং তোমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মানিত খাবার পাঠিয়েছি মান্না ও সালওয়া। তোমরা খাও সে সব পবিত্র বস্তু যা আমি তোমাদের জন্য দান করেছি।

ছত্রাকের উঁচু ও নিচু এই দুটি স্তর রয়েছে, মাশরুম উঁচু স্তরের ছত্রাক এবং প্রধানতঃ

ব্যাসিডিউমাইসেটিস শ্রেনীর অন্তর্ভূক্ত, এতে যৌন স্পোর হয়। ক্যারিওগ্যামী (Karyogamy) ও মিওসিসের (meosis) ফলশ্রুতিতে এই স্পোর উৎপন্ন হয় এবং এগুলো এক নিউক্লিয়েট বিশিষ্ট এবং হ্যাপলয়েড (Haploid)| ব্যাসিডিওমাইসেটিস ব্যতিত এসকোমাইসেটিস শ্রেণীর অন্তর্গত কিছু মাশরুম রয়েছে এগুলো স্পঞ্জ মাশরুম বা মোরেল (morels) নামে পরিচিতি। এক্ষেত্রেও যৌন স্পোর হয় তবে তা বেসিডিও স্পোর নয়, তা এসকোস্পোর (ascospore) নামে পরিচিতি। স্পঞ্জ মাশরুমও ভক্ষণযোগ্য। আমরা ছাতার মতো মাশরুমের যে অংশটি দেখতে পাই এটিকে ছত্রাকের ফ্রুটিং বডি (fruiting body) বলা হয়। মাশরুমের ফ্রুটিং বডি বা ভক্ষণযোগ্য অংশটি সাধারণতভাবে চারভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১। টুপী বা পিলিয়াস (Pilius)
২। জিল (gills) বা ল্যামেল্যা (lamellae)
৩। আবরণ বা ভেইল এনুলাস (veil annulus)
৪। দন্ড বা স্টাইপ (stipe)

টুপী (Pilius)
টুপী বা পিলিয়াস অনেকটা ছাতার আকৃতি বিশিষ্ট। এটি সাধারণত: মাংশ (fleshy) এবং পুরু হয়। জাতভেদে টুপী বিভিন্ন আকৃতি, মাপ ও বর্ণের হয়।

জিল (gills)
জিলাস বা ল্যমেলা মাশরুমের টুপীর নীচের অংশ। এর মধ্যে বংশবিস্তারের অতি প্রয়োজনীয় স্পোর (spore) থাকে। জাতভেদে স্পোরের রং বিভিন্ন হয় এবং বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে রংয়ের পরিবর্তন হয়। জিল এক ধরণের অসংখ্যা সমান্তরাল সুতো দিয়ে তৈরী এবং এরই মধ্যে গদাকৃতির কোষের শীর্ষে বেসিডিওস্পোর থাকে। স্পোরগুলো খালি চোখে দেখা যায় না তবে অনেকগুলো স্পোরকে একত্রে ধুলোর মতো মনে হয়। স্পোরগুলো ঝরে পড়লে তা বাতাসে অন্যত্র নিতে হয় । অনুকুল পরিবেশে স্পোরগুলো গজায়। উচ্চবর্ণের উদ্ভিদও যেমন বীজ থাকে, মাশরুমের তেমনি থাকে স্পোর। স্পোর গজিয়ে সুতোর মত এক ধরণের দন্ড জন্ম নেয়। এগুলোকে হাইফা (hypha) বলা হয়। অনেকগুলো হাইফাকো একত্রে মাইসেলিয়াম বলে। মাইসেলিয়াম বৃদ্ধি পেয়ে দীর্ঘায়িত হয় এবং খাদ্যবস্তু সংগ্রহ করে। হাইফাই ছত্রাকের মূল কাঠামো।

আবরণ (veil )
মাশরুমের সদ্যোজাত ফ্রুটিং বডির জিল (gills) এক ধরণের কোষেকলা দিয়ে আবৃত থাকে যা টুপীর (Pilius) প্রান্ত থেকে দন্ড পর্যন্ত বিস্তৃত। এই কোষকলাকে আবরণ বা veil বলা হয়। ধীরে ধীরে ফ্রুটিং বডির বৃদ্ধি হতে থাকলে টুপীর দিককার আবরণ ছিড়ে যায় এবং এর কিছু অংশ টুপীর প্রান্তভাগ সংলগ্ন থাকে অন্য অংশ দন্ডের (stipe) চারিদিকে আংটির মতো থাকে এটিকে এনুলাস বলা হয়।

দন্ড (stipe or stalk)
টুপী বা (Pilius) কে এই দন্ডই (stipe) ধারণ করে রাখে। এই দন্ডটি সাধারণভাবে টুপীর মাঝামাঝি থাকে। কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষ এটি একপাশেও থাকতে পারে। দন্ডটির ভেতরের অংশ ভরাট কিংবা ফাঁপা থাকতে পারে। দন্ডটির সর্বাংশ একই ধরণের পরিধি বিশিষ্ট হতে পারে কিংবা মধ্যম বা শেষ প্রান্ত কিছুটা ফুলে থাকতে পারে।

খাবারের উপযোগী মাশরুমঃ
আমাদের দেশে সাধারণত খাবারের উপযোগী তিন জাতের মাশরুম চাষ হয় ।
১। স্ট্র মাশরুমঃ ধানের খড়, শিমুল তুলা, ছোলার বেসন ও চাউলের কুড়া ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করে স্ট্র মাশরুম চাষ করা হয়। আমাদের দেশে সাধারণত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এর চাষ করা যায়।
২। ইয়ার মাশরুমঃ সাধারণত বর্ষাকালে প্রাকৃতিকভাবে আম গাছে ইয়ার মাশরুম পাওয়া যায়। ইয়ার মাশরুম দেখতে কালচে রঙের। ইয়ার মাশরুম সারাবছর চাষ করা গেলেও সাধারণত বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়।
৩। অয়েস্টার মাশরুমঃ আমাদের দেশে এই জাতের মাশরুম চাষ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। সারাবছরই এই মাশরুম চাষ করা যায় তবে শীত ও বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়। অয়েস্টার মাশরুম খুব সহজে চাষ করা যায় এবং এর জন্য খুব অল্প জায়গার প্রয়োজন হয়।

আরও পড়ুন   দুর্বা ঘাসের চমৎকার কিছু গুন

মাশরুম চাষের সুবিধাসমূহঃ
বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু মাশরুম চাষের অত্যন্ত উপযোগি। সে সাথে মাশরুম চাষের প্রয়োজনীয় উপকরণও (যেমন- খড়, কাঠের গুড়া, আখের ছোবড়াসহ বিভিন্ন কৃষিজ ও শিল্পজ বর্জ্য) অত্যন্ত সস্তা এবং সহজলভ্য।
মাশরুম চাষের সাধারন সুবিধাসমূহঃ
(১) মাশরুম চাষে আবাদী জমি দরকার হয় না।
(২) ঘরের মধ্যে চাষ করা যায়।
(৩) তাকে তাকে সাজিয়ে একটি ঘরকে কয়েকটি ঘরের সমান ব্যবহার করা যায়।
(৪) অত্যন্ত অল্প সময়ে অর্থাৎ মাত্র ৭-১০ দিনের মধ্যে মাশরুম পাওয়া যায় যা বিশ্বের অন্য কোন ফসলের বেলায় প্রযোজ্য নয়।
(৫) বাড়ির যে কেউ মাশরুম চাষে অংশ নিতে পারে।

মাশরুম চাষে অর্থনৈতিক সুবিধাঃ
মাশরুম চাষ একটি সর্বোত্তম লাভজনক ব্যবসা। অর্থনৈতিক দৃষ্টিতে কোন ব্যবসা সর্বাধিক লাভজনক তখনই ধরা যাবে যখন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নের বিষয়গুলো সর্বোচ্চ অনুকূল অবস্থা থাকবে। যেমন-
(ক) কম পুঁজির দরকার হবে।
(খ) বিনিয়োগকৃত অর্থ অল্প সময়ের মধ্যে তুলে আনা সম্ভব হবে এবং
(গ) অল্প শ্রমের মাধ্যমে তা সম্ভব হবে।
অপরদিকে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রাপ্তির ক্ষেত্রেঃ
(ক) যদি একক প্রতি ফলন অধিক হয়
(খ) বাজার মূল্য অধিক হয়
(গ) একক প্রতি লাভ অধিক হয়, তবে তা সর্বোত্তম ব্যবসা বটে।

মাশরুম চাষের সামাজিক সুবিধাঃ
মাশরুম চাষে যে সমস্ত সামাজিক সুবিধা পাওয়া যায় সেগুলো হলোঃ
(১) ঘরে ঘরে মাশরুম চাষ করে অত্যন্ত পুষ্টিকর এই সবজি নিয়মিত খেয়ে দেশে পুষ্টিহীনতা দূর করা সম্ভব হবে।
(২) পুষ্টিহীনতা দূর হলে রোগব্যাধী জনিত ব্যয় সাশ্রয়সহ সমাজের সুস্ততা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
(৩) আর সুস্থ্য সবল দেহই অধিক কর্মক্ষম, ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
(৪) মাশরুম চাষে, সংরক্ষণে, প্রক্রিয়াজাতকরণেও বাজারজাতকরণে কর্মহীন লোকদের নিয়োজিত করে জনগণকে অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।
(৫) যে সমস্ত শিক্ষিত যুবক-যুবতী বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত, প্রচলিত সামাজিকতার কারণে শিক্ষিত হবার পর যারা রোদে পুড়ে, মাঠে কাদামাটির সাথে মিশে নিজেদেরকে প্রচলিত উৎপাদন পদ্ধতিতে সম্পৃক্ত করতে অনীহা প্রকাশ করেন, সে সমস্ত বেকার ছেলেমেয়েদের জন্য মাশরুম চাষ একটি আর্শীবাদ। কারণ মাশরুম চাষ করতে রোদে পুড়তে হয়না, কাদামাটির সংস্পর্শে আসতে হয় না, ঘরের মধ্যে তাকে তাকে সাজিয়ে সামান্য শ্রমে অল্প সময়ে ন্যূনতম পুজিতে অধিক এবং স্বাধীন উপার্জন করা সম্ভব।

মাশরুম উৎপাদন কৌশলঃ

চাষের উপযোগী স্থানঃ মাশরুম খোলা জায়গায় চাষ করা যায় না। তাই এর জন্য আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না। মাশরুম চাষ করার জন্য ছায়াযুক্ত জায়গায় ছন বা বাঁশের চালা দিয়ে ঘর তৈরি করতে হয়। মাটির দেওয়াল দিয়েও ঘর তৈরি করা যায়। আবার বাঁশের বেড়াও দেওয়া যায়। ঘরের ভেতর যাতে আলো ঢুকতে না পারে সেজন্য বাঁশের বেড়ায় মাটি লেপে দিতে হয়।

অয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতিঃ অয়েস্টার মাশরুম বীজ বা স্পন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করে মাশরুম চাষ শুরু করা যাবে। ধাপে ধাপে মাশরুম চাষ করতে হয়।

১ম পদ্ধতিঃ

১। মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে মাশরুমের বীজ বা স্পন প্যাকেট সংগ্রহ করতে হবে। বীজ বা স্পনের দুই পাশে কিছুটা গোল করে কেটে চেঁছে নিতে হবে।
২। মাশরুমের প্যাকেট পানিতে ৩০ মিনিটের জন্য ডুবিয়ে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পরে পানি থেকে মাশরুমের প্যাকেট উঠিয়ে নিতে হবে।
৩। অতিরিক্ত পানি ঝরানোর জন্য মাশরুমের প্যাকেট ৫ থেকে ১০ মিনিট উপুড় করে রাখতে হবে। পানি ঝরে গেলে ঘরের নির্ধারিত জায়গায় রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন এর উপর তিন থেকে চারবার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
৪। সাধারণত ৩ থেকে ৪ দিন পর কাটা জায়গা থেকে অঙ্কুর গজায়। অঙ্কুর গজানোর পর মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
৫। খাওয়ার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হতে ৫ বা ৬ দিন সময় লাগে। খাবার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হলে তা গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
৬। বীজের যে জায়গা কাটা হয়েছিল তা ব্লেড দিয়ে একটু চেঁছে দিতে হবে। এই বীজ থেকে আবার মাশরুম গজাবে।
৭। একটা আধা কেজি ওজনের বীজ বা স্পন প্যাকেট থেকে ৩-৪ বার মাশরুম পাওয়া যায়। এতে মোট ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যাবে।

২য় পদ্ধতিঃ

১। মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে বীজ বা স্পন সংগ্রহ করতে হবে। এক কেজি ওজনের একটি বীজের পলিথিন খুলে ভিতরের কম্পোস্ট গুঁড়ো করে নিতে হবে।
২। দুই কেজি পরিমাণ ধানের পরিষ্কার ও শুকনো খড় সংগ্রহ করতে হবে। খড়গুলোকে এক ইঞ্চি মাপে কেটে টুকরা করতে হবে।
৩। পরিমাণ মতো পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। খড়গুলো জীবাণুমুক্ত করার জন্য ফুটন্ত পানিতে খড়ের টুকরোগুলো এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
৪। খড়গুলো পানি থেকে তুলে চিপে পানি শূন্য করে একটি পাত্রে রাখতে হবে।
৫। পাঁচটি পলিব্যাগ নিয়ে পলিব্যাগের ভেতরে প্রথমে কিছু খড় বিছিয়ে নিতে হবে। খড়ের উপর মাশরুম বীজের গুঁড়ো দিতে হবে। এভাবে একটি পলিব্যাগে চার স্তরে খড় আর মাশরুম বীজের গুঁড়ো বিছিয়ে দিতে হবে। শেষ স্তরে আবার খড় বিছিয়ে দিতে হবে।
৬। খড় বিছানো শেষ হলে খুব শক্ত করে পলিব্যাগ বাঁধতে হবে। এভাবে প্রতিটি পলিব্যাগ বাঁধতে হবে।
৭। পলিব্যাগের চার দিকে ১০-১২টি ছিদ্র করতে হবে। এরপর ব্যাগগুলোকে বীজে পরিণত হওয়ার জন্য ১৫-১৮ দিন রেখে দিতে হবে।
৮। ১৫-১৮ দিন পরে পলিব্যাগগুলো খুলে বীজের দলাগুলো বের করে নিতে হবে।
৯। প্রতিটি বীজের দলা শিকায় করে ঝুলিয়ে রাখতে হবে এবং প্রতিদিন ৪-৫ বার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
১০। ৩-৪ দিন পর চারদিক দিয়ে মাশরুমের অঙ্কুর গজাতে শুরু করবে। ৪-৬ দিন পর খাওয়ার উপযোগী মাশরুম গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
১১। এভাবে মাশরুম চাষে লাভ বেশি হবে। কারণ প্রতিটি পলিব্যাগ থেকে প্রায় আধা কেজি মাশরুম পাওয়া যাবে। সুতরাং পাঁচটি ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই কেজি মাশরুম উৎপন্ন হবে।

আরও পড়ুন   লাউয়ের ফলন বৃদ্ধির উপায়

সাবধানতাঃ

১। বীজ বা স্পনে কোনভাবেই সূর্যের আলো পড়তে দেওয়া যাবে না। সবসময় ঘরটি ঠান্ডা রাখতে হবে। খুব বেশি গরম পড়লে ঘরের চারদিকে বস্তা ঝুলিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
২। মাশরুম ঘর ও ঘরের বাইরের চারদিক সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অপরিচ্ছন্ন জায়গায় মাশরুম ফ্লাই নামের পোকা মাশরুমের ক্ষতি করে।
৩। কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না।

অয়েস্টার মাশরুমের পাপড়ি বেশি ছড়ানোর আগেই তুলে গোড়া থেকে সামান্য কেটে ফেলতে হবে। পলি প্রোপাইলিনের প্যাকেটে কয়েকটা ছিদ্র করে এর মধ্যে মাশরুমগুলো ভার মুখ বন্ধ করে এই প্যাকেট বাজারজাত করতে হবে। প্রতিটি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ২০০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যায়। সুতরাং ২০০টি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ৪০ কেজি মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে।

মাশরুমের পুষ্টিমানঃ

মাশরুমে খনিজ পদার্থের পরিমান মাছ ও মাংসের তুলনায় বেশী এবং প্রচলিত সবজীর তুলনায় প্রায় দ্বিগুন। মাশরুমে আমিষের পরিমান আলু থেকে দ্বিগুন, টমেটো থেকে চারগুন এবং কমলা লেবুর থেকে ছয়গুন বেশী।

পুষ্টির বিচারে মাশরুম নিঃসন্দেহে সবার সেরা। কারণ আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যেসব উপাদান অতি প্রয়োজনীয় যেমন – প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল সেগুলো মাশরুমে উচ্চ মাত্রায় আছে। অন্যদিকে যেসব খাদ্য উপাদানের আধিক্য আমাদেরকে জটিল ব্যাধীর দিকে নিয়ে যায়,যেমন -ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেড তা মাশরুমে নেই বললেই চলে।প্রতি ১০০ গ্রাম শুকনা মাশরুমে নিম্নলিখিত পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।

 

মাশরুমের পুষ্টিমূল্য (১০০ গ্রাম শুকনা মাশরুম)
খাদ্য উপাদানের নাম পরিমাণ(গ্রাম) মন্তব্য
আমিষ ২৫-৩৫ উন্নত ও সম্পূর্ণ আমিষ
ভিটামিন ও মিনারেল ৫৭-৬০ সব ধরণের ভিটামিন ও মিনারেল
শর্করা ৫-৬ পানিতে দ্রবনীয়
চর্বি ৪-৬ অসম্পৃক্ত চর্বি

প্রোটিন মূল্যঃ  মাশরুমের প্রোটিন হল অত্যন্ত উন্নত,সম্পূর্ণ এবং নির্দোষ।একটি সম্পূর্ণ প্রোটিনের পূর্বশর্ত হলো মানব দেহের অত্যাবশ্যকীয় ৯টি এমাইনো এসিডের উপস্থিতি। মাশরুমে অপরিহার্য এ ৯টি এমাইনো এসিডই প্রশংসনীয় মাত্রায় আছে। অন্যান্য প্রাণীজ আমিষ যেমন-মাছ,মাংস,ডিমের আমিষ উন্নতমানের হলেও তার সঙ্গে সম্পৃক্ত চর্বি থাকায় তা গ্রহণে দেহে কোলেস্টরল সমস্যা দেখা দেয়।যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ,হৃদরোগ,মেদভূড়ি ইত্যাদি জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পক্ষান্তরে মাশরুমের প্রোটিন নির্দোষ। তাছাড়াও প্রোটিনের বিপরীতে ফ্যাট এবং কার্বো-হাইড্রেটের সর্বনিম্ন উপস্থিতি এবং কোলেস্টরল ভাঙ্গার উপাদান লোভাস্টাটিন,এন্টাডেনিন,ইরিটাডেনিন ও নায়াসিন থাকায় কোলেস্টরল জমার ভয় থাকে না।এ কারণে প্রোটিনের অন্যান্য সব উৎসের তুলনায় মাশরুমের প্রোটিন সর্বোৎকৃষ্ট ও নির্দোষ।নিচের ছকে প্রোটিনের অন্যান্য উৎসের সাথে মাশরুমের তুলনা দেখানো হলঃ

প্রতি ১০০ গ্রাম আহার উপযোগী খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ
খাবারের নাম প্রোটিন (গ্রাম)
মাংস ২২-২৫ গ্রাম
মাছ ১৬-২২ গ্রাম
ডিম ১৩ গ্রাম
ডাল ২২-৪০ গ্রাম
মাশরুম ২৫-৩৫ গ্রাম
মাশরুমের ৯টি অত্যাবশ্যকীয় এমাইনো এসিডের পরিমাণ (গ্রাম / ১০০ গ্রাম)
এমাইনো এডিসের নাম Agaricus bisporus Agaricusb edodes Pleurotus florida Pleurotus ostreatus Pleurotus sajorcaju Volvereilla volvacea
Leucine ৭.৫ ৭.৯ ৭.৫ ৬.৮ ৭.০ ৪.৫
Isoleucine ৪.৫ ৪.৯ ৫.২ ৪.২ ৪.৪ ৩.৪
Valine ২.৫ ৩.৭ ৬.৯ ৫.১ ৫.৩ ৫.৪
Tryptophan ২.০ ১.১ ১.৩ ১.২ ১.৫
Lysine ৯.১ ৩.৯ ৯.৯ ৪.৫ ৫.৭ ৭.১
Threonine ৫.৫ ৫.৯ ৬.১ ৪.৬ ৫.০ ৩.৫
Phenylalanine ৪.২ ৫.৯ ৩.৫ ৩.৭ ৫.০ ২.৬
Methionine ০.৯ ১.৯ ৩.০ ১.৫ ১.৮ ১.১
Histidine ২.৭ ১.৯ ২.৮ ১.৭ ২.২ ৩.৮
Total essential ৩৮.৯ ৩৬.০ ৪৬.০ ৩৩.৪ ৩৭.৬ ৩২.৯

 

ফ্যাট মুল্যঃ  মাশরুমের ফ্যাট অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড দ্বারা তৈরি যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।এছাড়া স্ফিঙ্গলিপিড ও আরগেস্টেরল থাকায় এর মানকে আরও উন্নত করেছে।স্ফিঙ্গলিপিড থাকায় হাড়ের মজ্জা ও ব্রেন ডেভেলপমেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং আরগেস্টেরলের উপস্থিতির কারণে ভিটামিন-ডি সিনথেসিসে সহায়ক হয় যা হাড় ও দাঁত তৈরি এবং ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে।এছাড়া মাশরুমের ফ্যাটে ৭০-৮০% লিনোলিক এসিড আছে যা শরীর সুস্থ্য রাখতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে।

কার্বোহাইড্রেট মূল্যঃ  আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি যা সম্পূর্ণ খরচ না হয়ে শরীরে জমা হয় এবং নানা ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করে।মাশরুমে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম এবং তা পানিতে দ্রবনীয়।ফলে মাশরুমের কার্বোহাইড্রেড শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।এছাড়া এরমধ্যে অধিকাংশ পলিস্যাকারাইড যেমন- গ্লাইকোজেন,বেটা-ডি-গ্লুক্যান,ল্যাম্পট্রোল,লোভাস্টাটিন,এন্টাডেনিন,ইরিটাডেনিন,ট্রাইটারপিন,এডিনোসিন,ইলুডিন প্রভৃতি থাকায় দেহের জটিল রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এছাড়া মাশরুম এ্যাসিডিক সুগার ও এ্যাসিডিক পলিস্যাকারাইড বিশেষ করে H৫১ সরবরাহ করে।মাশরুমে আঁশের পরিমাণও বেশি।জাত ভেদে ১০-২৮% আঁশ পাওয়া যায়।ফলে ডায়াবেটিকস রোগীদের ইনসুলিনের চাহিদা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আরও পড়ুন   গোপালপুরে আউশ ধান চাষে কৃষকদের প্রণোদনা

ভিটামিন ও মিনারেলঃ  ভিটামিন ও মিনারেল দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। প্রতিদিন চাহিদা মাফিক নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিটামিন ওমিনারেল গ্রহণ না করলে দেহে বিভিন্ন জটিল রোগের সৃষ্টি হয়।অল্প পরিমাণে অথচ অত্যাবশ্যকীয় এ খাদ্য উপাদানগ্রহণ নিশ্চিত করা গেলে এ অবস্থার সৃষ্টিই হবে না।ভিটামিন ও মিনারেলের উৎস হিসেবে মাশরুমের অবস্থান খুবইউচ্চে।শুকনা মাশরুমে ৫৭%-৬০% ভিটামিন ও মিনারেল (অত্যাবশ্যকীয় ট্রেস এলিমেন্টসহ) বিদ্যমান।আমাদের শরীরের জন্য প্রতিদিন প্রধান প্রধান ভিটামিন ও মিনারেলের যে পরিমাণ প্রয়োজন এবং ১০০ গ্রাম শুকনা মাশরুম যেপরিমাণ সরবরাহ ।

 ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা এবং ১০০ গ্রাম শুকনা মাশরুমে এদের পরিমাণ
প্রধান প্রধান ভিটামিন ও মিনারেলের নাম দৈনিক চাহিদা মাশরুমে প্রাপ্তি
থায়ামিন (বি ১) ১.৪ মিলি গ্রাম ৪.৮ – ৮.৯ মিলি গ্রাম
রিবোফ্লাভিন (বি ২) ১.৫ মিলি গ্রাম ৩.৭-৪.৭ মিলি গ্রাম
নায়াসিন ১৮.২ মিলি গ্রাম ৪২-১০৮ মিলি গ্রাম
ফসফরাস ৪৫০ মিলি গ্রাম ৭০৮-১৩৪৮ মিলি গ্রাম
লৌহ ৯ মিলি গ্রাম ১৫-১৭ মিলি গ্রাম
ক্যালসিয়াম ৪৫০ মিলি গ্রাম ৩৩-১৯৯ মিলি গ্রাম
কপার ২ মিলি গ্রাম ১২-২২ মিলি গ্রাম

মাশরুমের মধ্যে পটাসিয়াম,ফসফরাস,সোডিয়াম,ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ প্রায় ৭০ ভাগ,যার মধ্যেআবার ৪৫ ভাগই হচ্ছে পটাসিয়াম।এছাড়া কপার ও সেলিনিয়াম যথেষ্ট পরিমাণে থাকায় চুলপড়া,চুল পাকা  রোধসহ মহিলাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

মাশরুমের স্বাদঃ  মাশরুম অত্যন্ত সুস্বাদু সবজি।প্রাচীনকাল থেকে মানুষ মুখোরোচক এই মাশরুমের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে খাদ্য তালিকায়মাশরুমকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে।এমনকি রাষ্ট্রীয় অতিথিদের আপ্যায়নে ব্যবহৃত হতো মাশরুম।বিশ্বব্যাপী ভোজনরসিকরা মাশরুমকে স্বর্গীয় খাবারের সাথে তুলনা করে।মাশরুম অন্য খাবারের সাথে ব্যবহার করলে তার স্বাদ ও মান বহুগুণে বেড়ে যায়।

 

মাশরুমের উপকারিতাঃ     
মাশরুমে প্রচুর প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন আছে। তাই খাদ্য হিসেবে এটা খুবই পুষ্টিকর।
১।  মাশরুমে চর্বি ও শর্করা কম এবং আঁশ  রক্তে চিনির সমতা রক্ষা করে ফলে ডায়াবেটিক রোগী এবং যারা স্থুল বা স্বাস্থ্যবান তাদের জন্য উপযুক্ত খাবার।  
২। মাশরুম দেহের ক্ষয়পূরণ, হাড় গঠন ও দাঁত মজবুত করে।  
৩। রক্তহীনতা, বেরিবোধ, হৃদরোগ, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।  
৪। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৫। মাশরুমে প্রচুর ক্যালসিয়াম , ফসফরাস ও ভিটামিন ডি আছে। যা শিশুদের দাঁত ও হাড় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৬। মাশরুমে আছে প্রচুর ফলিক এসিড ও লৌহ , যা রক্তশূন্যতা দূর করে।
৭।  মাশরুমে ট্রাইটারপিন থাকায় এটা বিশ্বে এইডস প্রতিরোধে ব্যবহৃত হচ্ছে। 
৮।  মাশরুমে ইলুডিন এম ও এস থাকায় এটা আমাশয় প্রতিরোধী।
৯।  মাশরুমে এডিনোসিন থাকায় ডেঙ্গুজ্বরের প্রতিরোধক। 
১০।  মাশরুমে আছে এনজাইম ,যা হজমে সহায়ক ও পেটের পীড়া দূর করে।
১১।  মাশরুমে আছে নিউক্লিক এসিড ও অ্যানটি-এলারজেন যা কিডনি রোগ প্রতিরোধক।
১২।  মাশরুমে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেল এমন সম্বনিতভাবে আছে যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে গর্ভবতী মা ও শিশু নিয়মিত মাশরুম খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
১৩।  রক্তের কোলেষ্টেরল কমানোর অন্যতম উপাদান ইরিটাডেনিন’ ‘লোবাষ্টটিনএবং এনটাডেনিনমাশরুমে থাকায় এটি হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ নিরাময় করে ।
১৪।  এতে লিংকজাই-৮ নামক পদার্থ থাকায় হেপাটাইটিস-বি জন্ডিস প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
১৫।  মাশরুমের বেটা-ডি, গ্লুকেন, ল্যাম্পট্রোল, টারপিনওয়েড এবং বেনজোপাইরিন ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধক।
১৬।  মাশরুমে সালফার সরবরাহকারী এমাইনো এসিড থাকায় তা চুল পড়া ও চুল পাকা প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

যে সমস্ত কারণে মাশরুম বিভিন্ন জটিল রোগের প্রতিরোধক এবং নিরাময়ক হিসেবে কাজ করেঃ

যে সকল রোগ নিরাময় হয় যে যে উপাদানের কারনে নিরাময় হয়
ইমুন সিস্টেম উন্নত করে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেলের অপূর্ব সমন্বয়
ডায়াবেটিস চর্বি ও শর্করা কম এবং আঁশ বেশী, পলিস্যাকারাইড,ইনসুলিন উপাদানেয় সহায়ক
কোলেস্ট্রেরল, হৃদরোগ,উচ্চরক্তচাপ ইরিটাডেনিন, লোভাষ্টাটিন, এন্টাডেনিন ও নায়াসিন
দাঁত ও হাড়ের গঠন ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন – ডি
রক্ত শূন্যতা ফলিক এসিড ও লৌহ
হেপাটাইটিস বি, জন্ডিস লিঙ্কজাই-৮, ফলিক এসিড
ক্যান্সার, টিউমার বেটা-ডি-গ্লুকেন, ল্যাম্পট্রোল, টারপিনওয়েড গ্রুপ ও বেনজোপাইরিন অর্গানিক জার্মানিয়াম
এইড্‌স ট্রাইটারপিন
আমাশয় ইলুডিন এম ও ইলুডিন এস
যৌন অক্ষমতা গ্লাইকোজেন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন-ই
ডেঙ্গু জ্বর এডিনোসিন
হাইপার টেনশন ও মেরুদন্ড স্ফিঙ্গলিপিড ও ভিটামিন বি-১২, এন্টি অক্সিডেন্ট
পেটের পীড়া এনজাইম
কিডনি ও এলার্জি নিউক্লিক এসিড ও এন্টি এলার্জেন
চুলপড়া ও চুল পাকা সালফার এমাইনো এসিড, সেলিনিয়াম ও কপার

মাশরুম চাষের মাধ্যমে এদেশের পুষ্টি উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা বেকারত্ব দূরীকরণ (বিশেষ করে মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি), আমদানী ব্যয় হ্রাস এবং রপ্তানী আয় বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশ উন্নয়নের এক অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব।