রাজহাঁসের বাণিজ্যিক খামার বিস্তারিত

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

রাজহাঁসের বাণিজ্যিক খামার বিস্তারিত

রাজহাঁস পালন করেও বাড়তি আয় করা সম্ভব। নানারকম সুবিধাও আছে। যেমন—রাজহাঁসের মাংস ও ডিম দুই-ই সুস্বাদু। রাজহাঁসের পালক দিয়ে লেখা, তোষক, বালিশ, তাকিয়া, কুশন ও হেলান দেয়ার নরম জিনিসপত্র তৈরি করা যায়। ডিম ও রাজহাঁস বিক্রি করে বাড়তি আয়ও করা যাবে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন পাখিও এ রাজহাঁস। পোকামাকড় খেয়ে এরা জায়গাজমি ও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে।

 

রাজহাঁস পালনের আগে জেনে নিন, কী জাতের রাজহাঁস পালন করবেন। টুলুজ জাতের রাজহাঁসের গলা, পেট ও লেজ সাদা হয়। পুরুষ রাজহাঁসের ওজন ১৪ কেজি এবং স্ত্রী রাজহাঁসের ওজন ৯ কেজি হয়ে থাকে। এ মডেলের রাজহাঁসের পা ধবধবে সাদা পালকে ভরা। চীনা রাজহাঁসের গায়ের রং ধবধবে সাদা হয়ে থাকে। পুরুষ রাজহাঁসের ওজন ৯ কেজি এবং স্ত্রী হাঁসের ওজন ৮ কেজি পর্যন্ত হয়। এখন আপনি এ তিন জাতের যে কোনো একটি জাত বেছে পালনের উদ্যোগ নিতে পারেন। এবার বলছি, রাজহাঁসের বাসস্থান কেমন হওয়া উচিত। ঘর খোলামেলা ও মুক্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।

 

ঘরের মেঝে পাকা বা কাঁচা হলেও চলবে। ঘরের চারদিক দিয়ে মোটা তারের জাল দিয়ে ঘিরে দিবেন। ঘরের ভেতর যাতে স্যাঁতসেতে না হতে পারে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন। প্রতিটি হাঁসের জন্য কম করে হলেও ৪ বর্গমিটার জায়গা রাখতে হবে। পানির পাত্র ও খাবার পাত্র আলাদা আলাদা রাখুন। ডিম পাড়ার জন্য প্রতি তিনটি স্ত্রী হাঁসের জন্য ৫০ বর্গ সেন্টিমিটার সাইজের ডিম পাড়ার বাক্স রাখবেন।

 

রাজহাঁসের ডিম পাড়ার সময় সাধারণত ফাল্গুন-চৈত্রে। প্রথম বছরের তুলনায় ৩য় ও ২য় বছরে এরা বেশি ডিম দেয় এবং ডিমের আকার বড় হয়। রাজহাঁসের ডিমের ওজন ১৪৪ থেকে ১৫০ গ্রাম হয়ে থাকে, যা সাধারণ হাঁস ও মুরগির ডিম থেকে প্রায় ৩ গুণ বেশি ওজনের। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার পর ১০ সপ্তাহ বয়স থেকেই রাজহাঁসের ওজন ৬ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত হয়। ২০টি রাজহাঁস হলে বছরে ১০টি বিক্রি করে সংসারের আয় বাড়াতে পারবেন। এক্ষেত্রে আয় হবে ১টি রাজ হাঁসের দাম ৭০০ টাকা করে ধরলে ১০টি রাজহাঁস বিক্রি করতে পারেন ৭ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন   ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন

 

রাজহাঁস পালনের জন্য এদের ছেড়ে দিলে ভালো হয়। গৃহপালিত পশু-পাখি থেকে খাদ্যাভ্যাসের দিক থেকে এরা কিছুটা আলাদা। এদের ঠোঁট এবং জিহ্বা দ্বারা ঘাস কেটে খেতে পারে। এদের বাচ্চারাও কয়েক সপ্তাহ বয়স থেকেই ঘাসের জমিতে চরতে শুরু করে।

 

মনে রাখবেন, পতিত জমিতে ছেড়ে দিলে রাজহাঁস জমিতে চরে খাদ্য সংগ্রহ করে নিতে পারে। এ জন্য খাবার খরচ কম হয়। এদের রোগব্যাধি নেই বললেই চলে, যা অন্যান্য পাখির ক্ষেত্রে খুবই সমস্যা। মাংসের গুণগত মান সাধারণ হাঁসের চেয়ে অনেক বেশি এবং রাজহাঁসের মাংস খেতেও বেশ সুস্বাদু হয়। রাজহাঁসকে গমভাঙা, ছোলা, গুঁড়ো দুধ, সরগাম ভাঙা, কোকোনাট মিল, মিট মিল, লবণ নিয়মিত খেতে দেবেন। নিজেদের উদ্বৃত্ত খাদ্য অন্যত্র না ফেলে দিয়ে রাজহাঁসকে খেতে দিন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now