বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:২৮ অপরাহ্ন

কৃত্রিম মিলনে ফলন বাড়ান

  • লাস্ট আপডেট : বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৬
  • ৮৪ টাইম ভিউ
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

কৃত্রিম মিলনে ফলন বাড়ান

কুমড়ো এমন একটা সব্জি, যেটা ভারতের প্রায় সমস্ত রাজ্যে চাষ হয়। গরমেই চাষ হয় বেশি। ছায়ায় থাকতে পারে বলে অন্য ফসলের সঙ্গেও চাষ করা যায় কুমড়ো। হুগলি ও বর্ধমান জেলার আলুচাষিরা যেমন আলুর সঙ্গে কুমড়ো চাষ করেন। আসলে আলুর জমি কুমড়ো চাষের জন্য তৈরি হয়েই থাকে। কার্তিক-অগ্রহায়ন বা পৌষ মাসে আলু লাগানোর কিছু দিন পর সবে যখন গাছ বেরোচ্ছে, আলুর ভুঁড়োতে কুমড়োর বীজ লাগিয়ে দিতে হবে। এক-একটা আলুর ভুঁড়োতে ৩-৪টে কুমড়ো বীজ লাগাতে হবে। আলুগাছের বাড়বাড়ন্তের সময় কুমড়ো গাছ মোটামুটি সুপ্ত অবস্থায় থাকে। কুমড়ো গাছ তার শাখাপ্রশাখা নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে না বলে মাটির ভিতরে আলুর কোনও ক্ষতি হয় না। আলু তোলা হয়ে গেলে কুমড়ো গাছের চারদিককার মাটি কুপিয়ে ঝুরঝুরে করে দিতে হবে এবং সব্জির বীজতলার মতো উঁচু করে গোলাকারে মাটি তুলে দিতে হবে। এবার বাড়বে কুমড়ো গাছ।

বাগানে আলাদা ভাবেও বছরভরই কুমড়ো চাষ করা যায়। এক একর জমি চাষ করার জন্য দুই থেকে আড়াই কেজি বীজের দরকার হয়। জমি তৈরি করার পর আড়াই মিটার অন্তর সারি করে প্রতি সারিতে এক থেকে দেড় মিটার অন্তর মাদা বানাতে হবে। এরপর এক-একটি মাদায় চার-পাঁচটা করে বীজ দুই থেকে আড়াই সেমি গভীরে পুঁতে দিতে হবে।

 আলুর জমিতে কুমড়ো চাষ করলে আলাদা করে আর সার দেওয়ার দরকার হয় না। কিন্তু আলাদা ভাবে চাষ করলে প্রতি মাদায় এক ঝুড়ি করে গোবর সার ঢেলে দেওয়া ভাল। সেচের জন্য জমিটাকে প্রস্থে ১০/১২ হাত অন্তর ছোট করে আল দিতে হবে। এতে জলের অপচয় হবে না। ১৫/২০ দিন পরপর রস দেখে সেচ দিন।

কুমড়োর একই গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল ফুটতে থাকে। ইতর পরাগসংযোগের জন্য উভয় ফুলেরই প্রয়োজন আছে। এমনিতে মৌমাছি ও অন্যান্য কীটপতঙ্গেরা ইতর পরাগসংযোগ ঘটায়। তবে প্রকৃতির খেয়ালের উপর নির্ভর করে থাকলে সব ফুলে পরাগসংযোগ না-ও হতে পারে। তাই কৃত্রিম ভাবে নিজেরাই পরাগ সংযোগে সাহায্য করে ফলন বাড়ানো যায়। এর জন্য পুরুষ ফুলের পরাগ রেণু পরাগধানী থেকে কখন ফেটে বেরিয়ে আসে বা কতক্ষণ সজীব থাকে সেটা জানতে হবে। একই সঙ্গে স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ড কতক্ষণ রসসিক্ত থাকে, তা-ও জানতে হবে।

আরও পড়ুন  গরমে,বর্ষায় ও শীতকালীন সময়ে মুরগী পালন বিষয়ক তথ্য

সাধারণত পুরুষ ফুলের পরাগরেণু সকাল সাড়ে ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সজীব থাকে। আর স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ড সকাল ৬টা থেকে দেড়-দু’ঘণ্টা রসসিক্ত থাকে। ঠিক সময় বুঝে পুরুষ ফুল সংগ্রহ করে পাঁপড়িগুলি ছিঁড়ে ফেলতে হবে। এরপর পরাগধানীটাকে নিয়ে গিয়ে আলতো ভাবে স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে ঝেড়ে দিতে হবে। একটি পুরুষ ফুল দিয়ে ৯-১০টি স্ত্রী ফুলের পরাগসংযোগ ঘটানো যেতে পারে।

কুমড়ো চাষে রোগপোকা দমনের জন্য তেমন ব্যবস্থা নিতে হয় না। আগাছা দমনেরও প্রয়োজন হয় না। ঠিক সময়েই ফসল উঠে আসে। নিজেরা পরাগসংযোগে সাহায্য করলে অতিরিক্ত ফলনে ভাল লাভও হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
একই রকম পোস্ট