আজ মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন
বাঙালি জীবনযাত্রায় পানীয় হিসাবে চা অবিচ্ছেদ্য ভাবে মিশে আছে। এই উপমহাদেশে বৃটিশদের হাত ধরে ১৮০০ শতকে চায়ের আগমণ ঘটলেও ১৬০০ শতকে চীনে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে অনেক রকম চা প্রচলিত আছে এর মধ্যে গ্রিন টি বা সবুজ চা মানব দেহের জন্য বিশেষ উপকারী হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। গ্রিন টির মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, বি, বি৫, ডি, ই, সি, ই, এইচ সেলেনিয়াম, ক্রোমিয়াম, জিংক, ক্যাফেইন ও মেঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান৷ ধারণা করা হয় প্রায় ৪ হাজার বছর আগে মাথা ব্যথার ওষুধ হিসেবে চীনে গ্রীন টি এর ব্যবহার শুরু হয়। গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে গ্রিন টি বা সবুজ চা পানে মহিলাদের যকৃত, পাকস্থলী, স্তন, মলাশয় এবং কণ্ঠনালীর ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণাধর্মী নিবন্ধের আলোকে গ্রিন টি বা সবুজ চায়ের বহুমাত্রিক উপকারীতা নিয়ে চারপাশে’র আজকের এই আয়োজন।
সবুজ চা মেটাবলিসম বাড়িয়ে ফ্যাট বার্নে সহায়তা করে যা ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
গ্রীন টি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
কিডনি রোগের জন্য গ্রিন টি বিশেষভাবে উপকারী।
রক্তে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমাতে গ্রিন টি একটি যাদুকরী পানীয়।
নিয়মিত গ্রীন টি পানে ধমনী শিথিল হয় এবং দেহে রক্ত প্রবাহের মাত্রা ভাল থাকে।
সবুজ চায়ের লিকার দাঁতের ক্ষয় রোধ এবং মাড়িকে মজবুত করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী।
আল্ট্রা-ভিওলেট রশ্মী ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে।
শরীরের কোন স্থানে কেটে গেলে আক্রান্ত অংশে লিকার লাগালে দ্রুত রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
ক্ষতিকর পোকামাকড় কামড়ালে আক্রান্ত স্থান গ্রিন টির পাতায় মুড়ে দিলে দ্রুত আরাম অনুভূত হয়।
গ্রিন টি ত্বককে সহজে বুড়িয়ে যেতে দেয় না।
নিয়মিত সবুজ চা পানে ব্রন সমস্যা দূর হয়।
সবুজ চায়ে থাকা ভিটামিন সি আমাদের সর্দি কাশি প্রতিরোধ করে।
গ্রীন টি epigallocatechin-3-gallate (EGCG) এলার্জি নিরাময়ে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।
এই চা নিয়মিত পান করলে মানব দেহের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়৷
এটি শরীরে এনার্জি এবং স্ট্যামিনা ধরে রাখে।
সবুজ চা পান আমাদের হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
দেহের পানিশূন্যতা রোধ করতে পালন করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
নিয়মিত সবুজ চা পানে শ্বাসতন্ত্রের মাসল রিল্যাক্স হয় এবং এতে এজমার সমস্যা প্রশমিত হয়।
গ্রিন টি বা সবুজ চায়ের অনেক উপকারীতা থাকলেও মাত্রাতিরিক্ত পানে কিছু অপকারীতাও রয়েছে, এবার সেগুলি জেনে নেয়া যাক।
অতিরিক্ত সবুজ চা পানের কিডনি এবং লিভারের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
অতিরিক্ত গ্রিন টি পান করলে মানব দেহে প্রয়োজনীয় লবন, পটাশিয়াম এবং মিনারেল হ্রাস পায়।
সুস্বাস্থ্যের জন্য সবুজ চা একটি কার্যকরী উপাদান। আমাদের অনেকের মাত্রাতিরিক্ত চা পান করার অভ্যাস রয়েছে যা অবশ্যই পরিহার করা উচিত। আর যেহেতু মাত্রাতিরিক্ত চা পান ক্ষতির কারণ সেহেতু সবুজ চা বা গ্রিন টি পানের পরিপূর্ণ সুফল পেতে দিনে সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ কাপের বেশী পান করা থেকে বিরত থাকুন।