7.7 C
New York
Saturday, December 2, 2023
spot_img

টিপস এন্ড ট্রিকস জবা গাছের যত্ন

টিপস এন্ড ট্রিকস জবা গাছের যত্ন

ফুল ভালবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের দেশের খুব কমন একটা ফুল জবা। সারাবছর ফুল হয় বলে আর অনেক দিন বেচে থাকার কারণে আমাদের দেশের অনেকেই বাড়ির ছাদের টবে এই ফুলগাছ লাগিয়ে থাকে। জবা সাধারণতঃ লাল রঙের হলেও, পরবর্তিতে অনেক সংকর বের করা হয়েছে । যার জন্য এখন সাদা, হলুদ , গোলাপী, কমলা থেকে শুরু করে মিশ্রিত রঙের জবা ফুলও দেখা যায় ।
 
একটু পরিকল্পনা করে টবে জবাগাছ রোপণ করলে সারা বছরই কিছু না কিছু ফুল পাওয়া যাবে।
 
সঠিক চারা নির্বাচন:
প্রথমেই টবের জন্য নার্সারী থেকে ছোট আকাড়ের মোটা কান্ডের সুস্হ সবল চারা নির্বাচন করে সর্বনিম্ন ১২ ইন্চি টবে চারাটি রোপন করতে হবে।
 
মাটি প্রস্তুত করন:
টবে চারা রোপণের আগে শুকনো গোবর ৪০%, বেলে দোঁআশ মাটি ৫০%, লাল সিলেকশন বালি ১০% মিশিয়ে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। সঙ্গে একমুঠো হাঁড়ের গুঁড়া, দু’মুঠো ছাই মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে টবের মাটির উর্বরতা অটুট থাকবে দীর্ঘদিন। চারাটি যেন সতেজ ও প্রানবন্ত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরী। গাছ লাগানোর পর আস্তে আস্তে চাপ দিয়ে গোড়ার মাটি শক্ত করে দিতে হবে। তারপর ৫ টাকা দামের “ঝিনুক চুন” ৫ লিটার পানিতে ১ চা চামচ ভাল ভাবে মিশিয়ে মাটিতে গাছের জন্য যতটুকু দরকার ততটুকু প্রয়োগ করতে হবে।
 
গাছ লাগানোর পরপরই কড়া রোদে রাখবেন না। কয়েক দিন ছায়ায় রেখে সহনশীল করে তারপর রোদে দিন।
 
দ্রুত বেড়ে ওঠা শুরু করলে গাছকে সোজা রাখার জন্য বাঁশের কঞ্চি বা স্টিক ব্যবহার করতে পারেন।
 
তিন কারনে ফুল ঝরে যায়:
** জবা গাছে পরিমিত পানি দিতে হয় যাতে পানি না জমে, আর সপ্তাহে ১ দিন মাটি কিছুটা কুঁড়ে দিতে হয়। মাটি স্যাঁতস্যাঁতে হলে কলি ঝরে যায়, পাতা ঝরে যায়।
** গাছে ছত্রাক/মিলিবাগ সংক্রমণ হলে, ফুলের বোটা নরম হয়ে পচে যায়।
** বোরনের অভাবে গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। ফুল সংখ্যায় কম আসে এবং ফুল ঝরা বৃদ্ধি পায়।
 
বোরনের ঘাটতি পূরন:
জবাগাছে ফুল আসার আগে বোরন প্রয়োগ করলে ভাল রেজাল্ট পাওয়া যাবে, এক চামচ বোরন/বরিক এসিড ৫ লিটার পরিষ্কার পানিতে গুলিয়ে সকালে রেখে দিয়ে তা শেষ বিকেলে গাছের মাটির জন্য যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকুই ঢেলে দিন অবশিষ্ট তরল অন্য গাছে দিন।
 
কীটনাশক প্রয়োগ:
জবাগাছে মিলিবাগ ও ছত্রাকের আক্রমন হয় খুব বেশী। তাই প্রতিমাসে একবার নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। বাড়িতে তৈরি কীটনাশক গাছ বান্ধব। বাড়িতে আপনি একটি আস্ত ছোট দেশী রসুন, একটি ছোট দেশী পেঁয়াজ, ১ চা চামচ আস্ত সাদা গোল মরিচ ভালো করে বেটে পেস্ট করে মিশ্রণটি কে পুনরায় ব্লেন্ডার মেশিনে ভাল করে ব্লেন্ড করে, এই মিশ্রনটি ১ লিটার পানিতে গুলিয়ে তার সাথে ১ টেবিল চামচ “ট্রিকস”লিকুইড ডিসওয়াশ যোগ করে সকালে বোতল ভরে রেখে দিতে হবে। শেষ বিকেলে বোতল জাত মিশ্রনটি চা এর পরিস্কার ছাকনি দিয়ে ছেকে প্রাপ্ত তরলটুকু গাছের ডালে, পাতার নিচে উপরে স্প্রে করতে হবে।
 
সতর্কতা…মিশ্রনটি যেন মাটিতে না পড়ে সে জন্য মাটিতে গাছের গোড়ায় ভাল করে খবরের কাগজ বিছিয়ে দিতে হবে। তা না হলে মিশ্রনটি সরাসরি মাটিতে পরলে মাটির গুনাগুন নষ্ট হয়ে যাবে।
 
গাছের পুষ্টি পূরণ:
টবের গাছে খাদ্য চাহিদা প্রচুর প্রয়োজন হয় তাই হাতের কাছে দুপুরের ভাতের মারের সাথে তিনভাগ পানি মিশিয়ে চা এর ছাকনি দিয়ে ছেকে তা শেষ বিকেলে গাছের গোড়ায় সপ্তাহে একদিন প্রয়োগ করলে গাছ প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে।
 
উপরোক্ত নিয়মগুলো অনুসরন করলেই আপনার বাগানে হাসবে গাছ, হাসবে ফুল সেই সাথে আপনিও।
 
আজ এ পর্যন্তই ভাল থাকবেন সবাই।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,913FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles