কম খরচের ব্যাটারী চালিত বাইক আবিস্কার করে সারা দেশে আলোচনার ঝড় তোলা সীতাকুণ্ডের মুন্নার আবিস্কৃত নতুন যন্ত্রে এবার কাটা হবে কৃষকের ধান। অল্প খরচে ধান কাটা মেশিনটি দেশের কৃষিতে বয়ে আনতে পারে নতুন বিপ্লব। গবেষনাধর্মী যন্ত্রটি নিজস্ব কারিগরি সহায়তায় তৈরী করা হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। নতুন ধরনের ধান কাটার মেশিন দেখে জনতার মুখে ফুটেছে হাসি। এ সময় জানতে চাওয়া উৎসুক জনতার নিকট মুন্না বর্ণনা করেন তার নতুন আবিস্কৃত যন্ত্রের কথা।
মুন্না বলেন,‘ আমি সামান্য একটি গরীব ঘরের সন্তান। মাছ চাষের মাধ্যমে অতি কষ্টে সাংসারের ভরন-পোষন চালান বাবা। ভাই-বোনের মধ্যে বড় ছেলে, পড়া-লেখায় একটি বেসরকারী পলিটেকনিক্যাল কলেজে অধ্যায়ন করছি। জন্মসূত্রে মিরশ্বারাই উপজেলার অধিবাসী হলেও বর্তমানে সীতাকুণ্ড উপজেলার ৪ নং মুরাদপুর ইউনিয়নের পূর্ব মুরাদপুর গ্রামের পেশকার পাড়ার অধিবাসী। পড়া-লেখার পাশাপাশি সব সময় মাথায় কাজ করে গরীব দেশের মানুষদের জন্য কিছু করার। এরপর থেকে অল্প আয়ের মানুষদের জন্য আবিস্কার করছি নতুন নতুন যন্ত্র। স্কুল জীবনে গবেষনার মাধ্যমে অল্প বিদ্যুৎ খরচের মসল্লা ভাঙার যন্ত্র তৈরীর করে আবিস্কারের যাত্রার সূচনা। এরপর ব্যাটারী চালিত একটি অটো বাইক আবিস্কার করে দেশ-বিদেশে আলোচনা ঝড় তোলি। বাইকটি পরিক্ষামূলক চালানোর সময় চোখে পড়ে নানা মহলে। এরপর বিভিন্ন পত্রিকায় আবিস্কার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গবেষনা কাজে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি মন্ত্রী। নতুন যন্ত্রের আবিস্কারক হিসেবে সরকারী অনুদানসহ একটি ল্যাপটপ উপহার দেয়া হয়। তারপর থেকে শুরু হয় নতুন গবেষনার। আবিস্কারে সক্ষম হই ধান কাটার নতুন যন্ত্র। এ যন্ত্রের সাহায্যে ঘন্টায় ১ একর জমির ধান এক সাথে কাটা যাবে। একই মেশিনের সাহায্যে জমিতে হাল দেয়া, ধান কাটা, ধান মাড়াই ও ধান ভাঙার কাজ চলানো সম্ভব।
মুন্না আরো বলেন, ‘দীর্ঘ ৭ মাস গবেষনামূলক পরিশ্রম চালিয়ে নিজস্ব প্রযুক্তিতে কৃষকভাইদের জন্য নতুন যন্ত্রটি আবিস্কার করি। এই যন্ত্র আবিস্কারে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার যন্ত্রাংশ ক্রয় করতে হয়েছে। রাত-দিন পরিশ্রম করে শিপ ইয়ার্ডের মোটা আকৃতির চেইন, লোহার প্লেট, এলমোনিয়াম, ব্যায়ারিংসহ বহু মূল্যবান যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরী করা হয় ধান কাটার এই মেশিন। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ভবিষ্যতে আরো গবেষনা চালিয়ে দেশের উন্নয়নে সব রকমের কাজ করা ইচ্ছা পোষন করেন তিনি।