আজ মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১২ পূর্বাহ্ন
পেয়ারা চাষ পদ্ধতি নিয়ে আজকে আমাদের সকল কৃষি টিপস ভালো লাগলে শেয়ার করে দিন বন্ধুদের মাঝে।
বাংলাদেশে যত ফল চাষাবাদ হয়ে থাকে তার মধ্যে পেয়ারা তার মধ্যে অন্যতম। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা পেয়ারা চাষ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো।
ভূমিকা: পেঁয়ারা গাছের পাতা, কান্ড, শাখা-প্রশাখা ও ফল এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এক ধরণের ছত্রাকের আক্রমনে এমনটি হয়ে থাকে।
পুষ্টি মূল্য: পেঁয়ারা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল।
ভেষজ গুণ: শিকড়, গাছের বাকল, পাতা এবং অপরিপক্ক ফল কলেরা, আমাশয় ও অন্যান্য পেটের পীড়া নিরাময়ে কাজ করে।
উপযুক্ত জমি ও মাটি: সুনিষ্কাসিত উঁচু জমি ও মাঝারি উঁচু জমি পেয়ারা চাষের জন্য উপযোগি।
জাত পরিচিতি:স্থানীয় জাতের মধ্যে-স্বরুপকাঠি, কাঞ্চননগর, মুকুন্দপুরী এবং উন্নত জাতের মধ্যে কাজী পেঁয়ারা, বারি পেঁয়ারা -২ অন্যতম।
কাজী পেঁয়ারা: ফল আকারে বেশ বড়। ওজন ৪০০-৫০০ গ্রাম। পরিপক্ক ফল হলুদাভ সবুজ এবং ভিতরের শাঁস সাদা। এ ফল ৭-১০ দিন ঘরে সাধারণ তাপমাত্রায় সংরক্ষন করা যায়। কাজী পেঁয়ারা খেতে সামান্য টক।
বারি পেঁয়ারা-২: গাছ ছাতাকৃতি ও কাজী পেঁয়ারার চেয়ে খাটো হয়। পাতার অগ্রভাগ সুচালো। এ জাতটি বর্ষাকাল ও শীতকাল ২ বার ফল দেয়। পেঁয়ারা খেতে সুস্বাদু ও মিষ্টি।
চারা তৈরি:
গুটি কলমের মাধ্যমে চারা তৈরি করা হয়।চারা রোপণ: সমতল ভূমিতে বর্গাকার ও ষড়ভূজী এবং পাহাড়ি ভূমিতে কন্টুর পদ্ধতিতে করা হয়। পেঁয়ারার চারা মধ্য জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য আশ্বিন মাসে রোপণ করা হয়। রোপণের আগে গর্ত তৈরি করে নিতে হয়। প্রতি চারা থেকে চারার দূরত্ব ৪ মিটার রাখতে হয়।
সার ব্যবস্থাপনা:
প্রতি গর্তে গোবর ২০ কেজি, পচা খৈল ২ কেজি, টিএসপি সার ২০০ গ্রাম, এমওপি সার ২০০ গ্রাম প্রযোগ করতে হয়। তবে বয়সবৃদ্ধির সাথে সাখে সারের পরিমানও বৃদ্ধি করতে হয়।
অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা:
পেঁয়ারা সংগ্রহের পর ভাঙ্গা, রোগাক্রান্ত ও মরা শাখা-প্রশাখা ছাঁটাই করে ফেলতে হয়। তাতে গাছে আবার নতুন নতুন কুঁড়ি জন্মায়। পেঁয়ারা গাছে প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক ফল দিয়ে থাকে। তাই মার্বেল আকৃতি হলেই কিছু ফল ফেলে দেয়া দরকার।
সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:
খরার সময় ২-৩ বার পানি সেচ দিতে হয়। তাছাড়া গাছের গোড়া থেকে আগাছা পরিষ্কার করতে হয়।
রোগব্যবস্থাপনা
রোগের নাম:
পেঁয়ারার এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দমন
ক্ষতির নমুনা:
প্রথমে পেঁয়ারার গায়ে ছোট ছোট বাদামী রঙের দাগ দেখা যায়। দাগগুলো ক্রমান্বয়ে বড় হয়ে পেঁয়ারার গায়ে ক্ষত সৃষ্টি করে। আক্রান্ত ফল অনেক সময় ফেটে যায়। তাছাড়া এ রোগে আক্রান্ত ফলের শাঁস শক্ত হয়ে যায়।
অনুকূল পরিবেশ:
বাতাস ও বৃষ্টির মাধ্যমে রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।
বিস্তার:
গাছের পরিত্যক্ত শাখা প্রশাখা, ফল এবং পাতায় এ রোগের জীবাণু বেঁচে থাকে এবং পরে বিস-ার লাভ করে।
প্রতিকার:
গাছের নিচে ঝরে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হয়। গাছে ফুল ধরার পর টপসিন-এম প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম অথবা টিল্ট ২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি হারে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ৩-৪ বার ভালভাবে সেপ্র করে এ রোগ দমন করা যায়।
ফসল তোলা: সবুজ থেকে হলদে সবুজ রঙ ধারণ করলে ফল সংগ্রহ করতে হয়।