Home চাষাবাদ পদ্ধতি বারি মাল্টা-১ চাষ পদ্ধতি

বারি মাল্টা-১ চাষ পদ্ধতি

63
0

আজকে আমরা আলোচনা করবো বারি মাল্টা-১ চাষ পদ্ধতি নিয়ে যারা এই আর্টিকেল টি পড়বেন তারা আবার শেয়ার করে দিবেন অন্য কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য যাতে তারাও শিখতে পারে। 

ফল চাষ বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে আর এর মধ্যে মাল্টা ও পিছিয়ে নেই। তাই আজকে আলোচনা করা হবে বারি মাল্টা-১ চাষ পদ্ধতি নিয়ে। সবাই মনোযোগ দিয়ে আর্টিকেল টি পড়ুন এবং শেয়ার করে দিন অন্য কৃষি উদ্যোক্তাদের কাছে।

মাল্টা ফল

মাল্টা খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর একটি ফল। শিশু হতে বৃদ্ধ সবাই কমবেশি মাল্টা খেতে পছন্দ করে মাল্টা মূলত আমাদের দেশী ফল না হলেও খুব সম্প্রতি আমাদের দেশে অনেকে ছোট পরিসরে মাল্টা চাষ করছেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কতৃক উদ্ভাবিত বারি মাল্টা-১ আমাদের দেশের মাটিতে চাষের জন্য খুবই সম্ভাবনাময়।

বারি মাল্টা-১ চেনার উপায়ঃ বারি মাল্ট-১ এর মাথার দিকে গোলাকার একটা দাগ থাকে, ঠিক যেন কেউ ১ টাকার কয়েন দিয়ে সেখানে চাপ দিয়েছে।

মাল্টা চাষের জন্য জমি নির্বাচনঃ উঁচু এবং সব সময় রোদ পড়ে এমন জমি মাল্টা চাষের জন্য নির্বাচন করতে হবে।

এই বারি মাল্টা ১ চাষ করে সফল হয়েছেন অনেক কৃষি উদ্যোক্তা

বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যায় এমন জমি নির্বাচন করতে হবে অর্থাৎ জমির পানি সহজেই নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
মাল্টা চাষের জন্য নির্বাচিত জমি সমতল হতে হবে, তা না হলে মই দিয়ে সমান করে নিতে হবে।
জমিতে আগাছা থাকলে তা পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং আসপাসের ছায়া দানকারি উঁচু গাছের ডালপালা কেটে দিতে হবে।

রোপন পদ্ধতিঃ মে থেকে অগাষ্ট মাস মাল্টা গাছের চারা/কলম লাগানোর উত্তম সময়। তবে বছরের অন্যান্য সময়ে পানি সেচের ব্যাবস্থা করা গেলে যে কোন সময় মাল্টার চারা/কলম লাগানো যাবে।
চারা রোপনের জন্য ৭৫ সেমি দৈঘ্যে, ৭৫ সেমি’র প্রস্থ এবং ৭৫ সেমি গভীরতার ৩-৪ মিটার দূরত্বে গর্ত করে নিতে হবে।

আরও পড়ুন   ছাদে ব্যাপক ভিত্তিতে জারবেরা চাষ


গর্ত করার পর, জৈব সার ১৫ কেজি, ছাই ৪-৫ কেজি, টিএসপি সার ২৫০ গ্রাম, এমওপি সার ২৫০ গ্রাম এবং চুন ২৫০ গ্রাম গর্তের মাটির সঙ্গে মিশিয়ে ১৫-২০ দিন মাটি দ্বারা ঢেকে রাখতে হবে।
১৫ দিন পর গর্তের মাটি আবার কোদাল দিয়ে আলগা করে সংগ্রহীত চারা গর্তে রোপন করতে হবে।

চারা রোপনের পর প্রয়োজন মত পানি দিতে হবে এবং শক্ত খুঁটি গেড়ে তার সাথে বেঁধে দিতে হবে। যাতে করে সদ্যরোপনকৃত চারা বাতাসে হেলে না পড়ে।

মাল্টা গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

 মাল্টার চারা রোপনের পর প্রতি বছর নিয়ম করে তিন বার গাছের গোড়ায় সার দিতে হবে।

প্রথমবারঃ মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য চৈত্র মাসের মধ্যে(মার্চ মাসে)।

দ্বিতীয়বারঃ বর্ষার আগে মধ্য বৈশাখ থেকে মধ্য জ্যৈষ্ঠ মাসে (মে মাসে)।
তৃতীয়বারঃ বর্ষার পরে মধ্য ভাদ্র থেকে মধ্য আশ্বিনে (সেপ্টেম্বর মাসে)।

বছরে মোট এই তিনবারে  সার প্রয়োগ করতে হবে, তবে সেচের ব্যবস্থা না থাকেল কেবল প্রথম ও শেষ মোট দুই বারে সার প্রয়োগ করাটাই উত্তম।

গাছের বয়স অনুসারে সারের মাত্রাঃ গাছের বয়স ভেদে সারের মাত্রাও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। নিন্মে তা দেয়া হলো-

১-২ বছর বয়সেঃ জৈব সার ১০ কেজি, ইউরিয়া ২৫০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, এমওপি ১৫০ গ্রাম, জিংক অক্সাইড ১০ গ্রাম এবং বরিক এসিড ৫ গ্রাম।

৩-৪ বছর বয়সেঃ জৈব সার ১৫ কেজি, ইউরিয়া ৩৫০ গ্রাম, টিএসপি ২০০ গ্রাম, এমওপি ২৫০ গ্রাম, জিংক অক্সাইড ১৫ গ্রাম এবং বরিক এসিড ৮ গ্রাম।

৫-৭ বছর বয়সেঃ জৈব সার ১৫ কেজি, ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম, টিএসপি ২৫০ গ্রাম, এমওপি ২৫০ গ্রাম, জিংক অক্সাইড ২০ গ্রাম এবং বরিক এসিড ১০ গ্রাম।

৮-১০ বছর বয়সেঃ জৈব সার ২০ কেজি, ইউরিয়া ৬০০ গ্রাম, টিএসপি ৩৫০ গ্রাম, এমওপি ২৫০ গ্রাম, জিংক অক্সাইড ২৫ গ্রাম এবং বরিক এসিড ১২ গ্রাম।

আরও পড়ুন   সুদান ঘাসের বীজ থেকে ঘাস চাষ পদ্ধতি

১০ বছর বা তার অধিক বয়সেঃ জৈব সার ২৫ কেজি, ইউরিয়া ৭৫০ গ্রাম, টিএসপি ৫০০ গ্রাম, এমওপি ৫০০ গ্রাম, জিংক অক্সাইড ৩০ গ্রাম এবং বরিক এসিড ১৫ গ্রাম।

মূল্যঃ

মাল্টার কলমের মূল্য প্রতি পিস ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে।

আমাদের দেশে উৎপাদিত মাল্টা কৃষক ক্ষেতেই বিক্রি করছেন ১৪০-১৪৫ টাকায়।

আর্টিকেল টি পড়ে ভালো লাগলে শেয়ার করে দিন অন্য কৃষি উদ্যোক্তাদের কাছে।