আজ বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১১ পূর্বাহ্ন

ভুট্টার রোগ ও পোকামাকড় এবং প্রতিকার

ভুট্টার রোগ ও পোকামাকড় এবং প্রতিকার

ভুট্টার রোগ ও পোকামাকড় এবং প্রতিকার

ভুট্টা একটি অধিক ফলনশীল দানা শস্য। ধান ও গমের তুলনায় ভুট্টার পুষ্টিমান বেশী। এতে প্রায় ১১% আমিষ জাতীয় উপাদান রয়েছে। আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভুট্টার চাষ হয়। ভুট্টা চাষ করে আমাদের দেশের অনেক চাষীরা তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। আবার অনেকে না বুঝে চাষ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এর অন্যতম প্রধান কারণ ভুট্টার রোগ-বালাই ও পোকামাকড়। এজন্য ভুট্টা চাষের সময় খেয়াল রাখতে হবে-

ভুট্রা ক্ষেতে বিভিন্ন ধরণের রোগের লক্ষণ:

১। পাতা ঝলসানো রোগঃ আক্রান্ত গাছের নীচের দিকের পাতায় লম্বাটে ধূসর বর্নের দানা দেখা যায় এবং পরবর্তিতে গাচের উপরের অংশে ছড়িয়ে পড়ে। রোগের প্রকোপ বেশী হলে পাতা আগাম শুকিয়ে যায় ও মরে যায়।

২। কান্ড পচা রোগঃ রোগের আক্রমনে প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে গাছের কাণ্ড পচে যায় এবং গাছ মাটিতে ভেঙ্গে পড়ে। খরিপ মৌসুমে এই রোগ বেশী হয়। এছাড়া জমিতে নাইট্রোজেনের পরিমান বেশী হলে ও পটাশের পরিমান কম হলে এই রোগ হতে পারে।

৩। মোচা ও দানা পচা রোগঃ আক্রান্ত মোচার খোসা ও দানা বিবর্ন হয়ে সমস্ত মোচা পচে যায়। দানা পুষ্ট হয় না, কুচকে অথবা ফেটে যায়। মোচাতে দানার উপর বা মাঝে খালি চোখে ছত্রাক দেখা যায়। গাছে মোচা আসা থেকে পাকা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বেশী হলে এ রোগের আক্রমন বেশী হয়।

ভুট্রা ক্ষেতে বিভিন্ন ধরণের রোগের প্রতিকার:

১। পাতা ঝলসানো রোগঃ টিল্ট ২৫০ ইসি- রোগের লক্ষন দেখা মাত্রই প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ এমএল টিল্ট মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।

২। কান্ড পচা রোগঃ স্কোর ২৫০ ইসি, ০.৫ এম এল ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

৩। মোচা ও দানা পচা রোগঃ টিল্ট ২৫০ ইসি, ০.৫ এম এল ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

আরও পড়ুন   আমড়ার আঠা ঝড়া রোগ

ভুট্রা ক্ষেতে বিভিন্ন ধরণের পোকার আক্রমণের লক্ষণ:

১। কাটুই পোকাঃ কীড়া অবস্থায় এই পোকা দিনের বেলা মাটির ফাটলে বা গর্তে লুকিয়ে থাকে। রাতের বেলা বের হয়ে চারা গাছের গোড়ায় মাটি বরাবর কেটে দেয়। বেঁচে থাকার জন্য যা খায় তার চেয়ে বেশি কেটে নষ্ট করে। তীব্র আক্রমণে ক্ষেত প্রায় চারা শূন্য হয়ে পড়তে পারে।

২। মোচার কীড়াঃ কীড়া ভূট্টার কচি মোচা আক্রমন করে এবং সিল্ক নষ্ট করে। আক্রান্ত মোচা পচে যায়।

৩। উঁইপোকাঃ সাধারণত গাছে মোচা আসার পর উঁইপোকার আক্রমন হয়। উঁইপোকা গাছের গোড়ার দিকের মাটি উপরে তুলে ফেলে, এর ফলে গাছ শুকিয়ে মারা যায়।

ভুট্রা ক্ষেতে বিভিন্ন ধরণের পোকার আক্রমণের প্রতিকার:

১। কাটুই পোকাঃ সকাল বেলায় কেটে দেয়া চারার আশেপাশের মাটি খুড়ে কীড়া সংগ্রহ করে মেরে ফেলতে হবে। অথকবা ক্যারটে ২.৫ ইসি- বীজ বপনের আগে প্রতি শতাংশ জমিতে ৩ এমএল ক্যারাটে প্রয়োজনীয় পানির সাথে মিশিয়ে সারি ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। গাছের বয়স ২৫-৩০ দিন হলে এই মাত্রায় ক্যারাটে দিয়ে গাছের গোড়ার মাটি ভিজিয়ে স্প্রে করলে ভাল হয়।

২। মোচার কীড়াঃ সবিক্রন ৪২৫ ইসি (৪০০ এমএল/একর)- প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ এমএল সবিক্রন মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। পোকার আক্রমনের বেশী হলে একই মাত্রায় ১৫ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

৩। উঁইপোকাঃ একতারা ২৫ ডব্লিউজি- ২.৫ গ্রাম একতারা ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করুন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

Comments are closed.

© All rights reserved © 2014 Ajkerkrishi.com