আজ বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন

সবুজ ঘাস সংরক্ষণ পদ্ধতি

ভূমিকাঃ বাংলাদেশে বৃষ্টির মৌসুমে কোন কোন এলাকায় প্রচুর পরিমানে ঘাস পাওয়া যায়। যেমনঃ দূর্বা, আরাইল, সেচি, দশ, শষ্য খেতের আগাছা ইত্যাদি। বৃষ্টির মৌসুমে গো-সম্পদের স্বাস্থ্যের যথেষ্ট উন্নতিও হয়। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে ঘাসের অভাবে স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। তাই এ সময়ে উৎপাদিত অধিক পরিমান ঘাসকে সংরক্ষন করে রাখার জন্য বাংলাদেশ পশুসম্পদ গবেষণা ইনষ্টিটিউট দেশীয় পদ্ধতিতে সবুজ ঘাসে সংরক্ষণে পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। এ পদ্ধতিতে গর্তের মর্ধ্যে ঘাস সংরক্ষণ করা হয়।
সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ
  • প্রথমে শুষ্ক ও উঁচু যায়গা যেখানে পানি জমেনা এরকম স্থনে একটি গর্ত তৈরী করতে হবে।
  • গর্তের গভীরতা ৩ ফুট, প্রস্থের তলায় ৩ ফুট, মাঝে ৮ ফুট ও উপরে ১০ ফুট হবে। দৈর্ঘের মাপ নির্ভর করবে ঘাসের পরিমাণের উপর। গর্তটির তলা পাতিলের মত সমভাবে বক্র থাকলে ঘাস চাপানো সহজ হবে।
  • ১০০ সিএফটি একটি মাটির গর্তে ২.৫০ থেকে ৩.০০টন সবুজ ঘাস সংরক্ষণ করা যায়।
  • সবুজ ঘাসের শতকরা ৩-৪ ভাগ চিটাগুড় মেপে একটি চাড়িতে নিতে হবে।
  • তারপর ঘন চিটাগুড়ের মধ্যে ১:১ অথবা ৪:৩ পরিমান পানি মিশালে এটি ঘাসের উপর ছিটানো উপযোগী হবে। ঝরনা বা হাত দ্বারা ছিটিয়ে এ মিশ্রণ ঘাসে সমভাবে মিশানো যাবে।
  • গর্তের তলায় পলিথিন দিলে আগে বিছিয়ে নিতে হবে। পলিথিন না দিলে পুরু করে খড় বিছাতে হবে। এরপর দু’পার্শ্বে পলিথিন না দিলে ঘাস সাজানোর সাথে সাথে খড়ের আস্তরণ দিতে হবে।
  • এরপর পরতে পরতে সবুজ ঘাস এবং শুকানো খড় দিতে হবে। প্রতি পরতে ৩০০  কেজি সবুজ ঘাস এবং১৫ কেজি শুকানো খড় দিতে হবে।
  • ৩০০ কেজি ঘাসের পরতে পূর্বের হিসেবে ৯ থেকে ১২ কেজি চিটাগুড় ও ৮ থেকে ১০ কেজি পানির মিশ্রণ ঝরনা বা  হাত দিয়ে সমভাবে ছিটায়ে দিতে হবে।খড়ের মধ্যে কোন চিটাগুড় দিতে হবে না ।
  • এভাবে পরতে পরতে ঘাস ও খড় সাজাতে হবে এবং ভালভাবে পাড়িয়ে ভিতরের বাতাস যথাসম্ভব বের করে দিতে হতে।
  • এভাবে গর্ত ভর্তি করে মাটি উপরে ৪-৫ ফুট পর্যন্তঘাস সাজাতে হবে। ঘাস সাজানো শেষ হলে খড় দ্বারা পুরু করে আস্তরণ দিয়ে সুন্দর করে মাটি দিতে হবে। সম্পূর্ণ ঘাস একদিনেই সাজানো যায়। তবে বৃষ্টি না থাকলে প্রতিদিন কিছু কিছু করেও কয়েকদিন ব্যাপপী সাইলেজ তৈরী করা যায়।
সাবধানতাঃ
  • নীচু জায়গায় গর্ত করা যাবে না। তাতে পানি জমে ঘাস নষ্ট হয়ে থেতে পারে।
  • উপরের পলিথিন সুন্দর ভাবে এটে দিতে হবে যাতে কোন পানি ঘাসের ভিতরে প্রবেশ না করে।
  • চিটাগুড় পাতলা হলে পরিমান বাড়িয়ে পানি কম করে মিশাতে হবে। বেশী পাতলা হলে ঘাস হতে চইয়ে নীচে চলে যাবে। এমনভাবে দ্রবন তৈরী করতে  হবে  যাতে আঠার মত ঘাসের গায়ে লেগে থাবে।
  • ঘাস এবং খড় এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে ফাকা জায়গাগুলো যথাসম্ভাব বন্ধ হয়ে যায়।
  • গর্তের কোনাগুলো এবং পাশা সমূহ পা দিয়ে পাড়িয়ে ঘাস সাজাতে হবে যাতে ফাকা বন্ধ হয়ে যায়।
খাদ্য গ্রহণঃ এভাবে সংরক্ষিত ঘাস প্রতি ১০০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১০ কেজি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। উক্ত বর্ণিত পদ্ধতিতে বর্ষা মৌসুমের প্রাপ্ত ঘাস সংরক্ষণ করলে শুষ্ক মৌসুমে গো-খাদ্যের অভাবে কিছুটা হলেও সমাধান হবে। ঘাস সংরক্ষণের এ প্রযুক্তিটি ব্যবহারে দেশের গো-খাদ্যর অভাব কিছুটা হলেও সমাধান হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
তথ্য:
তথ্য আপা প্রকল্প
আরও পড়ুন   কলা সংরক্ষণ পদ্ধতি

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

Comments are closed.

© All rights reserved © 2014 Ajkerkrishi.com