আজ মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ অপরাহ্ন
কোন রকম রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে টবে পালং শাক চাষ পদ্ধতি এখানে তুলে ধরা হলো। টবে পালং শাক গাছের যত্ন, টবে পালং শাক চাষ পদ্ধতি, টবে পালং শাক চাষের জন্য মাটি তৈরি, পালং শাক গাছের যত্ন ও পরিচর্যা, পালং শাক গাছের রোগবালাই দমন, রাসায়নিক সার ছাড়া পালং শাক চাষ, পালং শাক গাছের রোগবালাই দমন,
টবে পালং শাক চাষ পদ্ধতি তে মাটি তৈরি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । পালং শাক চাষের জন্য মাটি তৈরি করার সময় বেশ কিছু উপাদান সঠিকভাবে মিশিয়ে নিন। দোআঁশ মাটি 50% , বালি 5 %, শুকনো গোবর বা পাতা পচা সার 40% , এবং ছাই 5% মিশিয়ে মাটি তৈরি করে নিন। মাটি তৈরির সময় আপনার কিছু বিষয় নিজেকে খেয়াল রাখতে হবে.. যেমন যদি মাটি এঁটেল হয় তবে মিশ্রনে বালির পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়ে দেবেন। যদি দেখেন মাটি বেলে দোআঁশ টাইপের তবে বালি একেবারেই দেবেন না। এরকম ব্যবহৃত মাটির অবস্থা দেখে আপনাকে মাটি তৈরি করতে হবে। এভাবে মাটি তৈরি করলে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করলেও চলে।
টবে পালং শাক চাষ করলে টবের আকার সঠিক হওয়া প্রয়োজন। কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ কেজি মাটি ধরে এমন টব, ড্রাম বা সিমেন্টের বস্তায় আপনি শাকের চারা লাগাতে পারেন। শাকের চারা মূলত বীজ থেকে তৈরি করা যায়।
রোপণের সময় প্রয়োগ কৃত জৈব সার এর বাইরে ও নিয়মিত জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে অপরদিকে রাসায়নিক সার প্রয়োগ ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয় । এছাড়া গাছের অবস্থা দেখে মাঝে মাঝে জৈব সার গাছের গোড়ার ৬” ইঞ্চি দূরে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। টবের গাছের জন্য সবচেয়ে ভালো হয় তরল সার ব্যবহার করলে। তরল সার তৈরির জন্য ২০০ গ্ৰাম সরিষার খৈল অথবা ৫০০ গ্ৰাম পরিমাণ শুকনো গোবর ২ লিটার পানিতে মিশিয়ে দুই দিন রেখে দিতে হবে। এরপর ঐ তৈরি করা তরল সার টবে প্রয়োগ করুন। প্রয়োগের সময় গাছের গোড়া থেকে অন্তত ৬-৮” ইঞ্চি দূরে তরল সার টি প্রয়োজন মত ঢেলে দিন । এই তরল সার প্রতি মাসে দুইবার প্রয়োগ করলে ফলন বেশ ভালো হবে।
রোদুর গরম দীর্ঘায়িত দিনগুলো কাটতে শুরু করলে বুঝতে হবে পালং শাক চাষের সময় এসে গেছে। ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন হয় খাদ্য অভ্যাসও। গরমের দিনগুলোতে গায়ে জুড়িয়ে থাকা পরিপাটি খাদ্যগুলোর একটা বিকল্প হিসেবে পালং শাকের খিচুড়ি বা ঝোলটা রান্নার দরকার পড়ে।
গ্রামীণ অঞ্চলগুলোতে পালং শাক চাষের জন্য এই সময়টাই বেশ উপযোগী। দীর্ঘ গরম দিনগুলোর চাহিদা মেটাতে মাঠে মাঠে পালং শাকের চারা লাগানো হয়। বাড়িতেও বারান্দা, বাগান বা ছাদে টব বা খাঁচায় পালং চাষ করা হয়। একটু যত্ন নিলে পালং শাকের রোজকার ফলন পাওয়া যায়।
পালং চাষের জন্য অবশ্যই উর্বর মাটি ও স্বাস্থ্যকর বীজের প্রয়োজন হয়। খাবারের টেবিলে তরতাজা পালং নিতে হলে নিজের হাতেই তা উৎপাদন করতে হবে। মনের মতো পরিচর্যা করলে অল্প সময়েই বসন্তের সবুজ রঙের ছোঁয়া লাগে চারপাশে।
বছরের বেশিরভাগ সময় পালং শাক পাওয়া যায় উচ্চফলনশীল জাতগুলোর কারণে। তবে এই সময়টাতে গাছগুলোর ফলন বেশি হওয়ায় পালং শাকের গ্রাম্য মজা আরও বেশি উপভোগ করা যায়। মাঠের মায়েরা তাই ছেলেমেয়েদের নিয়ে মাঠে বের হন পালং শাক তুলতে। নরম শীতলতম গাছগুলোকে দেখা যায় ঝুঁকে পড়তে থাকলে।
গরমের আগমণীতে পালং শাকের মৌসুম বলা চলে। খিচুড়ি, ঝোল, ভর্তা, পিঠা আর নানান রকম পদ্ধতিতে এই নরম লতাগুলোকে রন্ধন করে খাওয়া হয়। শহর আর গ্রামের পার্থক্য মুছে যায় সবার খাদ্যতালিকাতেই পালং শাক জায়গা করে নেওয়ার সময় এলে।
পালং শাক গাছের রোগ বালাই দমন করতে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। সাধারনত প্রায় সব ধরনের গাছে রোগ বালাই হয়ে থাকে। এখানে পালং শাক গাছের রোগ বালাই দমনের প্রাকৃতিক পদ্ধতি আলোচনা করা হলো।
জৈব কীটনাশক প্রয়োগ:
পালং শাক গাছের রোগ বালাই দমন করতে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন। জৈব কীটনাশক গুলো মানুষের জন্য একেবারেই ক্ষতিকর নয়। এই ধরনের কীটনাশক নিম পাতা সেদ্ধ করে বা গাঁদা ফুলের পাতার রস থেকে তৈরি করা যায়। এছাড়া নিমের তেল স্প্রে করেও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কীট পতঙ্গ দমন করা সম্ভব। বর্তমানে বাজারে নিমের তেল কিনতে পাওয়া যায়। পালং শাক গাছের রোগবালাই দমন।
পালং শাক গাছে মাঝে মধ্যেই গোড়ায় পচন জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে । সেক্ষেত্রে গাছের গোড়ায় শুকনো ছাই প্রয়োগ করতে হবে। ছাই পালং শাক গাছকে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে।
এগুলো ছাড়াও অধিকাংশ রোগবালাই থেকে আপনার টবের গাছটিকে বাঁচাতে চাইলে কিছু পরিমাণ শুকনো নিমপাতা গাছের গোড়ায় দিয়ে রাখুন এটি অধিকাংশ পোকা মাকড় কে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।