আজ বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ অপরাহ্ন

কিভাবে তৈরি করবেন কেঁচো কম্পোষ্ট

কিভাবে তৈরি করবেন কেঁচো কম্পোষ্ট

কিভাবে তৈরি করবেন কেঁচো কম্পোষ্ট

কেঁচো কম্পোষ্ট (ভার্মি কম্পোষ্ট) প্রস্তুত পণালী নিয়ে অনেক আর্টিকেল রয়েছে কিন্তু খুব সহজেই সেখা হয় না তাই আজকে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে তৈরি করবেন কেঁচো কম্পোষ্ট তা নিয়ে। 

প্রধানত কেঁচো উপরের মাটি নিচে এবং নিচের মাটি উপরে তুলে থাকে। এসব কাজের সাথেই কেঁচোর সারও তৈরি হয়। কেঁচোর দ্বারা জৈব সার তৈরির জন্য এর সাথে তরকারির খোসা, গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগীর বিষ্ঠা, নাড়ি-ভুঁড়ি, পাতাসহ পচা আবর্জনারও প্রয়োজন হয়।

(১) কেঁচো কম্পোষ্ট তৈরি করতে হলে প্রথমে গর্র্ত তৈরি করতে হয়। এরপর এসব গর্তে ঘাস, আমের পাতা বা খামারের ফেলে দেয়া অংশ এসবের যেকোনো একটি ছোট ছোট করে কেটে এর প্রায় ২৫ কেজি হিসেবে নিতে হয়।

(২) তবে এসব আবর্জনা গর্তে ফেলার আগে গর্তের তলদেশসহ চারপাশে পলিথিন দিয়ে মুড়ে দিতে হবে। এতে করে গর্তের কেঁচো পিট থেকে বাইরে যেতে পারবে না।

(৩) কেচোঁ কম্পোস্ট তৈরির জন্য প্রথমেই পলিথিন বিছানোর পরে গর্তের নিচে ৬ ইঞ্চি পুরু করে বেড বানাতে হবে। এই বেড তৈরির জন্য ভালো মাটি ও ও গোবর সমপরিমাণে মিশাতে হবে এবং এসব মিশানো গাবর ও মাটি পরে কেঁচোর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

(৪) সাধারণত এসব কম্পোস্ট তৈরির কাজে দুই ধরণের কেঁচোর জাত রয়েছে। তাহলো- ‘এপিজিক’ ও ‘এন্ডোজিক’ নামের।

‘এপিজিক’ জাতগুলো দেখতে লাল রঙের। এরা মাটির উপরের স্তরেই বিচরণ করে থাকে।

অপরদিকে ‘এন্ডোজিক’ জাতগুলো প্রধানত ছাই রঙের হয়ে থাকে। এরা সাধারণত সার উৎপাদন করতে পারে না তবে এরা মাটির ভৌত ও জৈব গুণাবলির উন্নতি করতে পারে।

(৫) কেঁচো কম্পোষ্ট তৈরির জন্য গর্ত গোবর ও মাটি দিয়ে ভর্তি করার পর ২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১ মিটার প্রস্থ মাপের পিটে ৩০০ টি কেঁচো প্রয়োগ করতে হয়। কেঁচো প্রয়োগের পর ২ ইঞ্চি জৈব সার এবং তার উপর ৪ ইঞ্চি কাঁচা পাতা দিতে হবে। গর্তের উপরিভাগ পাটের ভিজানো চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে এবং প্রতিদিন ২ বার পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। কাঁচা পাতা কালো বর্ণ ধারণ করলে পানি দেয়া বন্ধ করতে হবে। ৪ সপ্তাহ পরে পুণরায় কাঁচা পাতা দিতে হবে এবং চট দিয়ে ঢেঁকে ভিজাতে হবে। এবার ৪ দিন পর পর কাঁচা পাতা দিতে হবে। ৬ সপ্তাহ পরে নেটে চেলে কেঁচো আলাদা করে সার ব্যবহার বা বাজারজাত করা যাবে। কেঁচো সারের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য গর্তের উপরিভাগে ছায়া প্রদানের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি।

আরও পড়ুন   কুইক কম্পোস্ট ও বোঁর্দো মিক্সচার প্রস্তুত প্রণালী

(৬) এসব কেঁচো যে সব খাবার খায় তা গর্তে নিয়মিত ভাবে সরবরাহ করতে হবে।

কেঁচোর খাবারের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় ঘাস, খামারজাত পদার্থ, আঁখের ও কলার ফেলে দেয়া অংশ ইত্যাদি।

(৭) গবেষণায় দেখা গেছে একটি আদর্শ ভার্মিকম্পোস্টে ১.৫৭% নাইট্রোজেন, ১.২৬% ফসফরাস, ২.৬০% পটাশ, ০.৭৪% সালফার, ০.৬৬% ম্যাগনেশিয়াম, ০.০৬% বোরণ, ১৮% জৈব কার্বন, ১৫-২৫% পানি ও সামান্য পরিমাণ হরমোন রয়েছে। সাধারণত পিঁপড়া, উঁইপোকা, তেলেপোকা, মুরগি, ইঁদুর, পানি এসব কেঁচোর বড় শত্রু প্রতি লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম গুঁড়ামরিচ, ১০০ গ্রাম হলুদের গুঁড়া ও সামান্য লবণ মিশিয়ে পিটের বাইরে চারিদিকে ছিটিয়ে দিলে এসব শত্রু দমন থাকে।

কেঁচোর উপকারিতা

১। কেঁচো মরা, আধাপচা বাসি লতা পাতা খায় এবং মাটি মিশ্রিত জৈব দ্রব্য খেয়ে মাটিতে জৈব পদার্থ দান করে।
২। কেঁচো দেড় মিটার পর্যন্ত গভীরতা থেকে গর্ত খনন করে মাটি আলোড়িত করে। এতে নিচু স্তরের মাটির উর্বরতা বাড়ে।
৩। উপযুক্ত পরিবেশে পর্যাপ্ত কেঁচো থাকলে প্রতি শতক জমিতে ৩০-৪০ কেজি মাটি পর্যায়ক্রমে ভক্ষন, মল ত্যাগ ও আলোড়িত করতে পারে।
৪। কেঁচোর মল মাটির উর্বরতা বাড়ায়। সাধারন মাটির চেয়ে কেঁচোর মলে উদ্ভিদ পুষ্টির পরিমান বেশি থাকে।
৫। কেঁচোর চলাচলে মাটিতে বায়ু চলাচল, পানির অনুপ্রবেশ ও শিকড়ের বৃদ্ধি ঘটে।

পাইকারী জৈবসার প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করুন 01841212935 Amader Khamar ( সকাল ১১ টা থেকে ৬ঃ৩০ পর্যন্ত)

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

Comments are closed.

© All rights reserved © 2014 Ajkerkrishi.com
Developed By One Planet Web