আজ বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪১ অপরাহ্ন

গাভী বার বার গরম হওয়ার কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি

গাভী বার বার গরম হওয়ার কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি

গাভী বার বার গরম হওয়ার কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি

গাভী বার বার গরম হওয়ার কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি

বাংলাদেশে গবাদিপশুর পালন সেক্টর এখন সব চাইতে বড় সেক্টরে অনেক খামারির একটি বড় সমস্যার সম্মুখীন হয় তা হচ্ছে গাভীর বার বার গরম হয়ে যাওয়া। আজকে আমরা আলোচনা করবো গাভী বার বার গরম হওয়ার কারণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে।

যখন কোনো গাভী সঠিক সময়ে (১৮-২১ দিন) গরম হয় ও কোনো প্রকার অসুস্থতার লক্ষণ থাকে না এবং কমপক্ষে ২ বার প্রজনন করানোর পরেও গর্ভধারণে ব্যর্থ হয় তখন তাকে বার বার গরম হওয়া গাভী বলে।

৩ বার প্রজনন করানোর পরেও গর্ভধারণে ব্যর্থ হওয়ার হার প্রায় ১০.০১%। এতে করে বাছুর প্রদানের সংখ্যা কমে যায়। বার বার প্রজনন করানো ও চিকিৎসা করানোর খরচ বেড়ে যায়। অনেক সময় উন্নত মানের গাভী অকালে বাতিল করতে হয়, ফলে খামারি মানসিক চাপে পড়েন ও অর্থনৈতিকভাবে খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন। বাণিজ্যিক ডেইরি ফার্মে চারটি প্রধান সমস্যার মধ্যে বার বার গরম হওয়া একটি অন্যতম সমস্যা।

কারণগুলো:

বাস্তবপক্ষে কিছু ক্ষেত্রে ভুল সময়ে প্রজনন করানোর ফলে হয়ে থাকে। কিছু গাভীতে প্রজনন তন্ত্রের বার্সা ও ডিম্বনালির জটিলতা ও জরায়ু সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে।

কাছাকাছি সময়ে গরম হওয়া

এ ক্ষেত্রে গাভী প্রজনন করানোর ১৭-২৪ দিনের মধ্যেই আবার গরম হয়। কারণ-১. লুটিয়াল গ্রন্থির কার্যকারিতা তাড়াতাড়ি বন্ধ হলে বা স্বাভাবিক বা নিয়মিত ঋতুচক্রের মতো করপাছ লুটিয়াম স্বল্পস্থায়ী হলে এমন হতে পারে। ২. যদি ডিম দেরিতে নিঃসরিত হয় এবং প্রজননে বীজের মান ভালো না হয়। ৩. পূর্বেই ভ্রƒণ মারা গেলে বা দুর্বল/নিম্নমানের ভ্রƒণ সৃষ্টি হলে। ৪. জরায়ুর পরিবেশ ভালো না থাকলে। ৫. Pricocious ৬. Luteolyse হলে।

জরায়ু সংক্রমণ সাধারণত ষাঁড় দ্বারা মিলনের সময়, অস্বাস্থ্যকর কৃত্রিম প্রজনন ও প্রসবের সময় ও পরে জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন   দেশি ডিম কেন খাবেন? এবং ডিমের ৭টি বিস্ময়কর উপকারিতা

এছাড়াও কিছু বিষয় বার বার গরম হওয়াকে প্রভাবিত করে। যেমন-ওলান প্রদাহ রোগ বার বার গপরম হওয়ার হার বৃদ্ধি করে ও উৎপাদন কমিয়ে দেয়। দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর। বাচ্চা প্রদানের সংখ্যার ওপর। জটিল প্রসবের ঘটনা। প্রথম প্রজনন করানোর আগে চিকিৎসা দেয়া প্রভৃতি।

চিকিৎসা:

১. প্রাথমিকভাবে গাভীর গরম হওয়ার সময় লিপিবদ্ধ করে বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে গাভীটি কাছাকাছি সময়ে গরম হচ্ছে অথবা দেরিতে গরম হচ্ছে।

২. ৩ বার প্রজনন করানোর পরও গর্ভধারণ না করলে আবার প্রজনন করানোর আগে ভালোভাবে ভেটেরিনারি ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করতে হবে।

৩. প্রজনন করানোর সময় গাভীকে ১০০-৫০০/স এহজয ১/স প্রয়োগ করা যেতে পারে।

৪. জরায়ুতে গরম হওয়ার সময় ৮ম ঘণ্টা ও ৪তম ঘণ্টায় Penicillin (40 lac) প্রয়োগ করা যেতে পারে।

প্রতিরোধ:

১. সঠিক সময়ে প্রজনন করতে হবে। গরম হওয়ার ১২ ঘণ্টা পরে ও ১৮ ঘণ্টার মধ্যে।

২. গাভী গরম হলে দুধের Progesteron level খুব কমে যায়। Progesteron এর মাত্রা নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দেয়া যায়।

৩. প্রজননকারীকে সতর্কতার সাথে গর্ভে বাচ্চা আছে কিনা তা দেখে নিয়ে তারপর প্রজনন করতে হবে।

৪. প্রজনন করানোর সময় গাভীকে কোনো প্রকার ধকল দেয়া যাবে না যেমন- অনেক দূর হেঁটে নিয়ে যাওয়া, খাদ্য পরিবর্তন করা ইত্যাদি।

৫. পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য দিতে হবে।

৬. ভালো বীজ ও দক্ষ প্রজননকারী দ্বারা প্রজনন করাতে হবে।

৭. প্রয়োজনে ২ বার প্রজনন করানো যেতে পারে।

৮. প্রজনন করানোর পর ৩ সেকেন্ড গাভীর ক্লাইটোরিসে ম্যাসেজ দিতে হবে।

৯. প্রজনন করানোর পর গাভীকে ঠাণ্ডা জায়গায় রাখতে হবে।

ডা. মনোজিৎ কুমার সরকার

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

Comments are closed.

© All rights reserved © 2014 Ajkerkrishi.com
Developed By One Planet Web