আজ শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন

রেড লেডি পেঁপের বীজ ও চাষ পদ্ধতি

রেড লেডি পেঁপের বীজ ও চাষ পদ্ধতি

রেড লেডি পেঁপের বীজ ও চাষ পদ্ধতি

পেঁপে চাষ বাংলাদেশে নতুন কোন ফসল নয় তবে রেড লেডী পেঁপে চাষ পদ্ধতি এখনও তেমন ব্যপকতা পাইনি। আজকে আমরা আলোচনা করবো রেড লেডী পেঁপের বীজ সম্পর্কে এবং রেড লেডী পেঁপের চাষ পদ্ধতি নিয়ে।

বাংলাদেশে পেঁপে খুবই জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ন। পেঁপের কতগুলো বৈশিষ্ট রয়েছে- প্রথমত এটা একটা স্বল্প মেয়াদী, দ্বিতীয়ত ইহা কেবল ফলই নয় সবজি হিসেবেও এর ব্যপক ব্যবহার রয়েছে,তৃতীয়ত পেঁপে অত্যান্ত সুসাদু , পুষ্টিকর এবং ঔষধি গুন সম্পন্ন। এদেশে বর্তমানে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয় এবং মোট উৎপাদন প্রায় ৪৮ হাজার টন। কাঁচা পেঁপেতে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য আছে।

রেড লেডি হাইব্রিড পেঁপে জাতের বৈশিষ্ট্যঃ-

  • এটি তাইওয়ানের উচ্চ ফলনশীল বামন প্রজাতির পেঁপে।
  • রেডলেডি জাতের প্রত্যেক টি গাছে পেঁপে ধরে ।
  • রেডলেডি জাতের পেঁপে গাছ সর্বচো ১০’ ফিট হয়।
  • গাছের উচ্চতা ৬০-৮০ সেঃ মিঃ হয় তখন ফল ধরা শুরু হয়।
  • প্রতিটি গাছে ৫০-১২০ পর্যন্ত ফল ধারন করে।
  • ৫-৬ মাসের মধ্য ফুল আসে এবং প্রথম ফল পাওয়া যায় ৭-৯ মাসের মধ্য।
  • এই জাতের পেঁপে গুলি বেশ বড়।
  • ফলের রং লাল-সবুজ।
  • এক একটি ফলের ওজন ১..৫ থেকে ২ কেজি।
  • মাংস বেশ পুরু, গাঢ় লাল, স্বাদে বেশ মিষ্টি ও সুগন্ধিযুক্ত।
  • কাঁচা ও পাকা উভয়ভাবে বাজারজাত করা যায়।
  • পাকা অবস্থায় সহজে নষ্ট হয় না বলেই, দূর দুরান্তে বাজারজাত করা যায়।
  • এই জাতের পেঁপে রিং স্পট ভাইরাস রোগ সহ্য ক্ষমতা আছে।
  • এই জাতের জীবন কাল ২ বছর অধিক।

বীজ সংরহঃ- অনেক কোম্পানী নিন্মমানের বীজ প্যাকেট জাত করে রেড লেডি বলে বিক্রি করে প্রতারনা করছে। তাই বীজ কেনার সময় ভাল ভাবে যাচাই বাছাই করে ক্রয় করতে হবে।  চায়না ও তাইওয়ানের রেড লেডি বীজ পাওয়া যায় তবে তাইওয়ানের বীজ ফলাফল অনেক ভাল। তাই তাইওয়ানের বীজ ক্রয় করা ভাল।

আরও পড়ুন   রেড লেডি পেঁপে চাষ কেন করবেন জেনে নিন

বীজের মূল্যঃ- তাইওয়ানের রেড লেডি.২ গ্রাম বীজের প্রতি প্যাকেট ৫৫০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বীজের হারঃ- প্রতি গ্রামে বীজের সংখ্যা ৬০-৭০টি। হেক্টর প্রতি ৭০-১০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন। সে হিসেবে ৩০০০-৩২০০ চারা দিয়ে ১ হেক্টর জমিতে পেঁপে চারা লাগানো যায়।

চারা তৈরিঃ- বীজ থেকে বংশ বিস্তার করা যায়। বীজের প্যাকেট কেটে ২ ঘন্টা রোদে শুকানোর পর ২ ঘন্টা রোদে শুকানোর পর ঠান্ডা জায়গায় রেখে ঠান্ডা করে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পানিতে ভেজানোর পর পলেথিন ব্যাগে চারা তৈরি করতে হবে। পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করলে রোপনের পর চারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ৫X৬ সেঃ মিঃ আকারে ব্যাগে সম পরিমাণ বেলে দোয়াশ মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ ভর্তি করে, ব্যাগের তলায় ২-৩ টি ছিদ্র করতে হবে। তারপর এতে সদ্য সংগৃহীত বীজ হলে একটি এবং পুরাতন বীজ হলে ২টি বীজ বপন করতে হবে। ১টি ব্যাগে এক এর অধিক চারা রাখা উচিৎ নয়।

চারা রোপনঃ- ১.৫ থেকে ২ মাস বয়সের চারা রোপন করা হয়। ২ মিটার দূরে দূরে ৬০X৬০X৬০ সেঃ মিঃ আকারে গর্ত করে রোপনের ১৫ দিন পূর্বে গর্তের মাটির সার মিশাতে হবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য ২ সারির মাঝখানে ৫০ সেঃ মিঃ নালা রাখতে হবে।

সারের পরিমানঃ- প্রতি পেঁপে গাছে নিন্মরূপ সার ব্যবহার করতে হবে।

রোপনের সময়ঃ- চারা লাগানোর পর নতুন পাতা আসলে ইউরিয়া ও এমপি সার ৫০ গ্রাম করে প্রতি ১ মাস অন্তর প্রয়োগ করতে হবে। গাছে ফুল আসলে এ মাত্রা দ্বিগুণ হবে। শেষ ফল সংরহের পূর্বেও সার প্রয়োগ করতে হবে।

অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যাঃ- বাগান সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। গাছের গোড়া থেকে আগাছা তুলে ফেলে দিতে হবে। গাছের গোড়া মাটি কোদাল দিয়ে হালকা করে দিতে হবে। গাছে অতিরিক্ত ফল ধরলে কিছু ফল পেরে নিয়ে হালকা করে দিলে, বাকি ফল গুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। পেঁপে গাছে বিভিন্ন হরমোন প্রয়োগ করে বেশ সুফল পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন   ছোলার চাষ পদ্ধতি ও উপকারিতা

ফল সংরহঃ- পেঁপে গাছে সাধারণত ৫-৬ মাসের মধ্য ফুল আসে এবং প্রথম ফল পাওয়া যায় ৭-৯ মাসের মধ্যে। পুষ্ট হওয়ার সময় কোন কোন ফলে হলুদ রং ধারন করবে। পুষ্ট ফলে কিছু দিয়ে খোচা দিলে থেকে পানির মত তরল আঠা বের হবে। অপুষ্ট ফল থেকে দুধের মত ঘন আঠাবের হবে।

ফলনঃ- রেডলেডি জাতের পেঁপে থেকে ৫০-১২০ টি ফল পাওয়া যায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

Comments are closed.

© All rights reserved © 2014 Ajkerkrishi.com
Developed By One Planet Web