চীনাবাদাম চাষ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা
চীনাবাদাম একটি স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল। এটি একটি উৎকৃষ্ট ভোজ্য তেলবীজ। চীনাবাদামের বীজে শতকরা ৪৮ থেকে ৫০ ভাগ তেল এবং শতকরা ২২ থেকে ২৯ ভাগ আমিষ রয়েছে। বাংলাদেশে ২০১১-১২ বছরে ৮৩ হাজার হেক্টর জমি থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন চীনাবাদাম উৎপন্ন হয়। দেশে হেক্টরপ্রতি চীনাবাদামের গড় ফলন মাত্র ১.৫২ মেট্রিক টন। উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে চীনাবাদামের ফলন বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
পুষ্টিগুণঃ পৃথিবীতে উৎপাদিত বাদামের মধ্যে চীনাবাদাম সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কাঁচা ও ভাজা তো বটেই মাখন, জ্যাম, চানাচুর, কেক, বিস্কুট, তরকারি, ভর্তা ও তেল তৈরিতে চীনাবাদাম ব্যবহার করা হয়। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চীনাবাদামের রয়েছে নানা রকমের অবদান। যেমন চীনাবাদামের প্রোটিন দেহ গঠনে ও মাংশপেশি তৈরিতে সাহায্য করে। চীনাবাদামের মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এর উচ্চমাত্রার নিয়াসিন দেহকোষ সুরক্ষা করে, বার্ধক্যজনিত রোগ প্রতিরোধ করে, মস্তিষ্ক সুস্থ রাখে ও রক্ত চলাচলে সহায়তা করে। চীনাবাদাম প্রতিরোধ করে কোলন ক্যানসার, ব্রেস্ট ক্যানসার ও হাটের্র রোগ। এতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে, যা হাড় গঠনেও সহায়ক। চীনাবাদামে আরও আছে প্রচুর আয়রন। এ উপাদান রক্তের লোহিত কণিকার কার্যক্রম বৃদ্ধি করে। চীনাবাদামের ক্যারোটিন ও ভিটামিন ই ত্বক এবং চুল সুন্দর রাখে।
মাটিঃ চীনাবাদাম চাষের জন্য হালকা বেলে-দোআঁশ, দোআঁশ এবং চরাঞ্চলের বেলে মাটি বেশি উপযোগী। চীনাবাদামের গর্ভদন্ড বা পেগ যাতে সহজে মাটি ভেদ করে নিচে যেতে পারে এবং বাদাম সহজে পুষ্ট হতে পারে, সেজন্য সুনিকাশিত হালকা বেলে-দোআঁশ মাটির প্রয়োজন হয়।
জমি তৈরিঃ চীনাবাদাম চাষের জন্য জমিতে তিন থেকে চারটি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হবে। ক্ষেতের চারপাশে নালার ব্যবস্থা করলে পরে সেচ ও পানি নিকাশের সুবিধা হয়।
জাতঃ
বাসন্তী বাদাম (ডিজি-২): প্রতি বাদামে ১-২ টি বীজ থাকে। বীজের আকার মধ্য লম্বাকৃতি এবং রং লালচে বাদামী। বীজে তেলের পরিমাণ ৪৮%। রবি ও খরিফ উভয় মৌসুমে এ জাতটি চাষ করা যায়। ফলনঃ রবি মৌসুমে প্রতি হেক্টরে ২.০-২.২ টন এবং খরিফ মৌসুমে প্রতি হেক্টরে ১.৮-২.০ টন।
ঝিংগা বাদাম (এসিসি-১২): প্রতি বাদামে ৩-৪ টি বীজ থাকে। বীজের উপরের খোসা বাদামী রঙের হয়। বীজের তেলের পরিমাণ ৪৯-৫০%। জাতটি বেশ খরা সহনশীল। ফলনঃ হেক্টর প্রতি প্রায় ২.৪-২.৬ টন।
ত্রিদানা বাদাম (ডিএম-১): বীজের উপরের খোসা গাঢ় লাল এবং প্রতি বাদামে ৩-৪ টি বীজ থাকে। বীজে তেলের পরিমাণ ৪৯-৫০%। জাতটি খরিপ মৌসুমে চাষ করা উত্তম। এ জাতটির বীজের সুপ্তি কাল নেই। ফলনঃ হেক্টর প্রতি প্রায় ২.২-২.৪ টন।
বারি চীনাবাদাম-৫: প্রতি বাদামে বীজের সংখ্যা ১-২ টি। বাদামের শিরা উপশিরা খুব স্পষ্ট, বীজের আকার বড়। বীজের সুপ্তিকাল ১০-১৫ দিন। বীজে তেলের পরিমাণ ২৫-২৭%। রবি ও খরিফ উভয় মৌসুমে চাষ যোগ্য। ফলনঃ হেক্টরপ্রতি রবি মৌসুমে ২.৭০-৩.১০ টন এবং খরিফ মৌসুমে ২.০-২.৫ টন।
বারি চীনাবাদাম-৬: বীজের রং হালকা বাদামি। বীজে তেলের পরিমাণ ৫০-৫২%। ফলনঃ হেক্টর প্রতি রবি মৌসুমে ২.৫-২.৮ টন এবং খরিফ মৌসুমে ২.০-২.৪ টন।
বারি চীনাবাদাম-৭: বাদামের খোসা মসৃণ ও কিছুটা সাদাটে ও নরম। বীজের সুপ্ততা নেই। পাতায় দাগ পড়া ও মরিচা রোগ তুলনামুলক কম হয়। ফলনঃ হেক্টর প্রতি রবি মৌসুমে ২.৮-৩.০ টন এবং খরিফ মৌসুমে ১.৮-২.০ টন।
বারি চীনাবাদাম-৮: বীজের আকার মাঝারি, বীজের রং লালচে। ফলনঃ হেক্টর প্রতি ২.৫ টন।
বারি চীনাবাদাম-৯: বাংলাদেশের সবখানে রবি ও খরিফ মৌসুমে চাষাবাদের উপযুক্ত। এই জাতটি বারি চীনা বাদাম-৬ ও ৭ থেকে ৫-৭ দিন আগে পরিপক্ক হয়। ফলনঃ হেক্টর প্রতি ২.৫-২.৮ টন।
বর্তমানে প্রাণ উদ্ভাবিত প্রাণ চীনাবাদাম-১ উত্তরাঞ্চলে চাষ করে আশাতীত ফলন পাওয়া যাচ্ছে। এ জাতের বাদামের দানা বড় এবং ফলনও প্রচলিত জাতের চেয়ে শতকরা ৩০ ভাগ বেশি।
বীজ বপনের সময়ঃ খরিপ মৌসুমে এপ্রিল মাস থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত চীনাবাদাম বপনের উপযুক্ত সময়। রবি মৌসুমে আশ্বিনের মাঝামাঝি থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত চীনাবাদাম বপন করা যায়।
বীজের পরিমাণঃ বাদাম চাষের জন্য হেক্টরপ্রতি খোসাসহ মাইজচর বাদাম ৯৫ থেকে ১০০ কেজি, ঝিঙ্গা বাদাম ১০৫ থেকে ১১০ কেজি, বাসন্তী বাদাম ১০৫ থেকে ১১০ কেজি এবং ত্রিদানা বাদাম ১১০ থেকে ১১৫ কেজি এবং অন্যান্য জাতের বাদামের ৯৫ থেকে ১০৫ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়।
সারের পরিমাণঃ ভালো ফলন পেতে হলে চীনাবাদাম চাষের জন্য হেক্টরপ্রতি ৫ থেকে ৭ টন পচা গোবর, ২০ থেকে ৩০ কেজি ইউরিয়া, ১৫০ থেকে ১৭০ কেজি টিএসপি, ৮০ থেকে ৯০ কেজি এমওপি, ১৬০ থেকে ১৮০ কেজি জিপসাম, ৪ থেকে ৫ কেজি জিঙ্ক সালফেট এবং ৯ থেকে ১১ কেজি বোরাক্স বা বরিক এসিডের প্রয়োজন হয়। অর্ধেক ইউরিয়া এবং অন্যান্য সার বীজ বপনের আগে শেষ চাষের সময় জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। বাকি অর্ধেক ইউরিয়া বপনের ৪০ থেকে ৫০ দিন পর গাছে ফুল আসার সময় প্রয়োগ করতে হবে। তবে প্রতি কেজি বীজে ৭০ গ্রাম অণুবীজ সার ব্যবহার করলে সাধারণত ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হয় না।
বপন পদ্ধতিঃ চীনাবাদাম বপনের আগে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। খোসা ছাড়ানোর সময় লক্ষ রাখতে হবে, যেন বীজের উপরের পাতলা পর্দা পড়ে না যায়। টাটকা খোসা ছাড়ানো বীজ লাগানো ভালো। খোসা ছাড়ানোর পর দুই থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে বাদামের বীজ বপন করা উচিত। বীজ সারিতে বপন করতে হবে। খরিপ মৌসুমে সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৪৫ সেন্টিমিটার এবং বীজ থেকে বীজের দূরত্ব হবে ১৫ সেন্টিমিটার। বীজ বপনের সময় জমিতে প্রয়োজনীয় রস থাকতে হবে। রস কম থাকলে সেচ দিয়ে জমি তৈরি করে দিয়ে বীজ বপন করতে হবে। বীজ ৫ সেন্টিমিটার মাটির গভীরে বপন করতে হবে।
পানি সেচঃ খরিপ-১ মৌসুমে অবস্থা বুঝে প্রয়োজনবোধে একটি সেচ দেয়া যেতে পারে। চর এলাকায় সেচ দেয়ার তেমন প্রয়োজন হয় না। রবি মৌসুমে উঁচু জমিতে মাটির রস তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় বলে ১ থেকে ২টি সেচ দেয়া দরকার।
অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যাঃ বীজ বপনের ১৫ থেকে ২০ দিন পর একবার নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে। মাটি শক্ত হয়ে গেলে এবং ফুল আসার সময় গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দিতে হবে।
রোগবালাই ব্যবস্থাপনাঃ
বিছাপোকাঃ বিছাপোকা গাছের পাতা ও কচি অংশ খেয়ে ফেলে। এ পোকার আক্রমণ দেখা দিলে ডায়াজিনন ৬০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে এক মিলিলিটার হারে মিশিয়ে সাত দিন পর পর সমস্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।
উইপোকাঃ চীনাবাদাম গাছের এবং বাদামের যথেষ্ট ক্ষতি করে এ পোকা। এরা দলবদ্ধ বা কলোনি তৈরি করে বাদাম গাছের প্রধান শিকড় কেটে দেয় এবং শিকড় ভেদ করে গর্ত সৃষ্টি করে। এতে গাছ মারা যায়। এছাড়া উইপোকা মাটির নিচে বাদামের খোসা ছিদ্র করে বীজ খায়।
দমনঃ পানির সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে সেচ দিলে উইপোকা জমি ত্যাগ করে। আক্রান্ত জমিতে ডায়াজিনন-১০জি বা বাসুডিন-১০জি বা ডরসবান-১০জি যথাক্রমে প্রতি হেক্টরে ১৫, ১৪ ও ৭.৫ কেজি হারে প্রয়োগ করতে হবে।
পাতার দাগ রোগঃ এ রোগের আক্রমণে পাতার ওপর হলদে রেখাবেষ্টিত বাদামি রঙের দাগ সৃষ্টি হয়। দাগ পাতার ওপর ছড়িয়ে পড়ে এবং পাতা ঝরে পড়ে।
প্রতিকারঃ বাসন্তী বাদাম পাতার দাগ সহনশীল একটি জাত। এ জাতের বাদাম চাষের মাধ্যমে এ রোগের আক্রমণ এড়ানো যায়। রোগ দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছে ব্যাভিস্টিন ৫০ ডবিউপি ১ গ্রাম হারে প্রতি লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে প্রতি ১২ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
পাতার মরিচা রোগঃ প্রাথমিক অবস্থায় পাতার নিচের পিঠে মরিচা পড়ার মতো সামান্য উঁচু বিন্দুর মতো দাগ দেখা যায়। দাগ ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। আক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাতার উপরের পিঠেও এ দাগ দেখা যায়।
প্রতিকারঃ ঝিঙ্গা বাদামের জাত এ রোগ প্রতিরোধী। এ জাতের চাষের মাধ্যমে এ রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এ রোগ দেখা দিলে টিল্ট-২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানির সঙ্গে আধা মিলিলিটার হারে মিশিয়ে ১২ দিন পর পর দুই থেকে তিনবার স্প্রে করতে হবে। পূর্ববর্তী ফসল থেকে গজানো গাছ, আগাছা এবং খড় পুড়ে ফেলে এ রোগের আক্রমণ অনেকটা কমানো যায়।
ফসল তোলাঃ বাদাম যখন পরিপক্ব হয়, তখন গাছের পাতাগুলো হলদে হতে থাকে এবং নিচের পাতা ঝরতে শুরু করে। এ সময় দু-একটি গাছের গোড়া খুঁড়ে পাকা বাদামের গাঢ় রং ও শিরা পরীক্ষা করে সময়মতো বাদাম তুলতে হবে। তারপর তিন থেকে চার দিন ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে বাদাম সংরক্ষণ করতে হবে। শুকনা বাদামে ১০ শতাংশ অথবা তার কম রস থাকতে হবে।
ফলনঃ ভালোভাবে যত্ন নিলে খরিপ মৌসুমে হেক্টরপ্রতি ২.০ থেকে ২.৫ টন চীনাবাদামের ফলন পাওয়া যায়।
মিশ্র ফসল হিসেবে চীনাবাদামের সাথে কাউন চাষ
প্রযুক্তি এলাকাঃ বরিশাল, কিশোরগঞ্জ ও অন্যান্য বাদাম উৎপাদন এলাকা।
চীনাবাদামের জাতঃ ত্রিদানা বাদাম
কাউনঃ তিতাস
জমি নির্বাচন ও তৈরীঃ মাঝরি উঁচু বেলে দোআঁশ মাটি এ ফসলের জন্য উপযুক্ত। মাটিতে ‘জো’ থাকা আবস্থায় ৩-৪ টি চাষ দিতে হবে।
বপনের সময়ঃ ফাল্গুন মাস (মধ্য-ফেব্রুয়ারী থেকে মধ্য-মার্চ)
বীজের হারঃ
- চীনাবাদামঃ ৯০-১১০ কেজি/হেক্টর (খোসাসহ)
- কাউনঃ ২ কেজি/ হেক্টর (একক ফসলের শতকরা ২৫ ভগ)
বপন পদ্ধতিঃ চীনাবাদামের লাইন র দূরত্ব ২৫ সেন্টিমিটার এবং গাছের দূরত্ব ১০ সেমি। চীনাবাদাম বপন করার আগে কাউন বীজ ২৫% হিসেবে ছিটিয়ে বপন করতে হবে।
সারের পরিমাণঃ
ইউরিয়াঃ ৭০-৮০ কেজি/হেক্টর
টিএসপিঃ ১০০-১২০ কেজি/হেক্টর
এমপিঃ ৭০-৯০ কেজি/হেক্টর
সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ সকল সার জমি শেষ চাষের সময় মাটির সাথে মই দিয়ে মিশিয়ে দিতে হবে।
অন্যান্য পরিচর্যাঃ বপনের সময় রস না থাকলে হাল্কা একটি সেচ দিতে হবে। চারা গজানোর পর ২৫-৩০ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে।
রোগ ও পোকা দমনঃ আক্রমণ দেখা দিলে অনুমোদিত মাত্রায় ঔষধ ব্যবহার করতে হবে।
ফসল কাটার সময়ঃ
- কাউনঃ জ্যৈষ্ঠ মাস (মধ্য-মে থেকে মধ্য জুন মাস)
- চীনাবাদামঃ আষাঢ় মাস (মধ্য-জুন থেকে মধ্য-জুলাই মাস)
ফলনঃ
- চীনাবাদামঃ ১.৬-১.৮ টন/হেক্টর
- কাউনঃ ৫০০-৭০০ টন/হেক্টর
এ পদ্ধতিতে চীনাবাদাম বপন করলে তেমন তারতম্য হয় না, তাই বাড়তি কাউন ফসল থেকে মুনাফা পাওয়া যায়।
মিশ্র ফসল হিসেবে চীনাবাদামের সাথে পেঁয়াজ চাষ
প্রযুক্তি এলাকাঃ চীনাবাদাম এলাকা
ফসলঃ চীনাবাদাম+পেঁয়াজ
জাতঃ
- চীনাবাদামঃ ঢাকা-১/বরি চীনাবাদাম-৫ ও বারি চীনাবাদাম-৬
- পেঁয়াজঃ স্থানীয়
জমি ও মাটিঃ নদীর চর অঞ্চল, মাঝরি উঁচু জমি। বেলে দোআঁশ মাটি।
বপনের সময়ঃ অগ্রহায়ণ থেকে মধ্য-পৌষ (মধ্য নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর)
বপন পদ্ধতিঃ চীনাবাদামের লাইন থেকে সরির দূরত্ব ৪০ সেন্টিমিটার এবং গাছ থেকে গাছেলর দূরত্ব ১৫ সেমি। পেঁয়াজের লাইন থেকে লাইন র দূরত্ব ১৫ সেন্টিমিটার এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১০ সেমি।
বীজের হার/হেক্টর:
- চীনাবাদামঃ ১১০ কেজি
- পেঁয়াজঃ ৪ কেজি (বীজ)
সারের পরিমাণঃ
সারের নাম
|
সারের পরিমান/হেক্টর
|
ইউরিয়া
|
১০০-১১০ কেজি
|
টিএসপি
|
১৫৫-১৬৫ কেজি
|
এমওপি
|
১৯০-২১০ কেজি
|
জিপসাম
|
১৬৫-১৭৫ কেজি
|
জিংক সালফেট (প্রয়োজনবোধে)
|
৪-৬ কেজি
|
বরিক এসিড (প্রয়োজনবোধে)
|
৯-১১ কেজি
|
সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ ৬৫ কেজি ইউরিয়া ও অন্যান্য সবগুলো সার জমি শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। বাকি ৪০ কেজি ইউরিয়া সার দুই কিস্তিতে শুধু মাত্র দুই লাইন র পেঁযাজের মাঝে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
অন্যান্য পরিচর্যাঃ আগাছা মুক্ত রাখার জন্য ১ মাসের মধ্য ১ বার নিড়ানী দিত হবে। প্রয়োজনবোধে সেচ প্রয়োগ করতে হবে।
ফসল তোলার সময়ঃ
- পেঁয়াজঃ মধ্য (চৈত্র থেকে মধ্য-বৈশাখ (এপ্রিল)
- চীনাবাদামঃ মধ্য-জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য-আষাঢ় (মে)
ফলনঃ
- পেঁয়াজঃ ৩২৩০-৩৫০০ কেজি/হেক্টর
- চীনাবাদামঃ ১৫৫০-১৬০০ কেজি/হেক্টর
মিশ্র ফসল হিসেবে চীনাবাদামের সাথে রসুন চাষ
প্রযুক্তি এলাকাঃ চীনাবাদাম এলাকা
ফসলঃ চীনাবাদাম+ রসুন
জাতঃ
- চীনাবাদামঃ ঢাকা-১/,বরি চীনাবাদাম-৫ ও বারি চীনাবাদাম-৬
- পেঁয়াজঃ স্থানীয়
জমি ও মাটিঃ নদীর চর অঞ্চল, মাঝরি উঁচু জমি। বেলে দোআঁশ মাটি।
বপনের সময়ঃ অগ্রহায়ণ থেকে মধ্য-পৌষ (মধ্য নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর)
বপনের দূরত্বঃ
- চীনাবাদামঃ চীনাবাদামের লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ৪০ সেন্টিমিটার এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১৫ সেমি।
- রসুনঃ লাইন থেকে লাইন এর দূরত্ব ১৫ সেন্টিমিটার এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৫ সেন্টিমিটার।
বীজের হার/হেক্টর
- চীনাবাদামঃ ১১০ কেজি
- রসুনঃ ৫০০ কেজি (আস্ত)
সারের পরিমাণঃ
সারের নাম
|
সারের পরিমান/হেক্টর
|
ইউরিয়া
|
১০০-১১০ কেজি
|
টিএসপি
|
১৫৫-১৬৫ কেজি
|
এমওপি
|
১৯০-২১০ কেজি
|
জিপসাম
|
১৬৫-১৭৫ কেজি
|
জিংক সালফেট (প্রয়োজনবোধে)
|
৪-৬ কেজি
|
বরিক এসিড (প্রয়োজনবোধে)
|
৯-১১ কেজি
|
সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ ৬০ কেজি ইউরিয়া ও অন্যান্য সবগুলো সার জমি শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। বাকি ৪০-৪৫ কেজি ইউরিয়া সার দুই কিস্তিতে শুধু মাত্র দুই লাইনের পেঁয়াজের মাঝে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
অন্যান্য পরিচর্যাঃ আগাছা মুক্ত রাখার জন্য ১ মাসের মধ্য ১ বার নিড়ানী দিত হবে। প্রয়োজনবোধে সেচ প্রয়োগ করতে হবে।
ফসল তোলার সময়ঃ
- রসুনঃ মধ্য (চৈত্র থেকে মধ্য-বৈশাখ (এপ্রিল)
- চীনাবাদামঃ মধ্য-জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য-আষাঢ় (মে)
ফলনঃ
- রসুনঃ ২১০০-২৩০০ কেজি/হেক্টর
- চীনাবাদামঃ ১৬০০-১৭০০ কেজি/হেক্টর
চিনাবাদামের ৬ স্বাস্থ্য উপকারিতা
বচেয়ে সহজলভ্য এবং সস্তা বাদামটি হল চিনাবাদাম। ছোট বড় সবাই চিনাবাদাম খেতে পছন্দ করে। সাধারণত স্বাদের জন্যই চিনাবাদাম খাওয়া হয়ে থাকে। তবে এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, প্রতিদিন একমুঠো চিনাবাদাম দূর করে দেবে অনেক শারীরিক সমস্যা।
● নানাবিধ রোগ নিয়ন্ত্রণ: গবেষণায় দেখা গেছে সপ্তাহে পাঁচবার চিনাবাদাম খাওয়া হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে। এছাড়া পিত্তকোষ সংক্রান্ত ব্যাধি এবং কলেক্টোরাল ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।
● কোলেস্টোরল কমায়: বর্তমান সময়ে কোলেস্টোরল খুব সাধারণ এবং পরিচিত সমস্যা। হৃদরোগের মূলে রয়েছে এই কোলেস্টোরল। চিনাবাদাম ভাল কোলেস্টোরল তৈরি করে এবং খারাপ কোলেস্টোরল দূর করে দিয়ে থাকে। এটি ফ্যাট কলেস্টোরল এবং ট্রাইগ্লিসারয়েড কমিয়ে ফেলে কোনো ধরণের ওজন বাড়ানো ছাড়া।
● ওজন হ্রাস করতে: চিনাবাদাম উচ্চ তৃপ্তিদায়ক খাবার। এটি আপনার পেট অনেক ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। সকালের নাস্তায় চিনাবাদাম অথবা চিনাবাদামের মাখন খান। এটি দীর্ঘ সময় আপনার পেট ভরিয়ে রাখবে কারণ এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থির রাখে, যা ক্ষুধা লাগা প্রতিরোধ করে।
● ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে: প্রতিদিনাকার খাদ্য তালিকায় চিনাবাদাম রাখুন। এটি ২১% পর্যন্ত ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে থাকে। এটি শর্করা শোষণকে ধীরগতি করে থাকে। সকালের নাস্তায় চিনাবাদাম রাখুন, এটি সারাদিন আপনার ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখবে।
● হতাশা রোধ করতে: সেরোটোনিন নামক উপাদান হতাশা পরিচালনা করে থাকে। চিনাবাদামে থাকা ট্রিপটোফেন উপাদান হতাশা রোধ করে থাকে। নিয়মিত চিনাবাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন অথবা প্রতি সপ্তাহে দুই টেবিল চামচ পিনাট বাটার খান। এটি হতাশা কাটাতে সাহায্য করবে।
● স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে: বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়ে থাকে। মস্তিষ্ক তার ধীরে ধীরে তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। চিনাবাদামের ভিটামিন বি৩ মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
Post Views: 143