আজ মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৩ অপরাহ্ন
টবে ক্যাপসিকাম মরিচের চাষ
ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ সারা বিশ্বেই একটি জনপ্রিয় সবজি। বাংলাদেশে খুব একটা পরিচিত না হলেও সম্প্রতি এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। প্রসারিত হচ্ছে মিষ্টি মরিচের চাষ। জমি ছাড়া মিষ্টি মরিচ চাষ করা যাবে না এমন নয়। বাড়ির ছাদে বা বারান্দার টবে মিষ্টি মরিচের চাষ করে নিজের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব।
জাত
আমাদের দেশে ইয়োলো ওয়ান্ডার্স, ক্যালিফোর্নিয়া ওয়ান্ডার্স ইত্যাদি জাতের মরিচ চাষ করতে দেখা যায়।
মাটি ও জলবায়ু
বেলে দোআঁশ বা দোআঁশ মাটি মিষ্টি মরিচ চাষের জন্য ভালো। মিষ্টি মরিচ গাছের সহ্যশক্তি কম থাকায় মাটি ঝুরঝুর করে ব্যবহার করা উচিত। মিষ্টি মরিচের গাছ গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত সব মৌসুমে চাষ করা যায়।
চারা রোপণ ও সার প্রয়োগ
টবে গাছ লাগানো ক্ষেত্রে উপযুক্ত মাটি ও ৩০-৪০দিন বয়সের চারা প্রয়োজন। যে কোনো সাইজের টবে এই গাছ রোপণ করা যায়। তবে একটি টবে একটি গাছ রোপণ করাই উত্তম। মাটি বাছাই করা হলে তার সঙ্গে ১/৩ অংশ গোবর, ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম এবং জিংক অক্সাইড ভালো করে মেশানোর পর টবে প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের পর ইউরিয়া ও এমওপি দু’ভাগে ২০ ও ৩০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। সূর্যের তাপে চারা রোপণ করলে চারার ক্ষতি হয়। তাই বিকালে চারা রোপণ করাই ভালো।
পরিচর্যা
গাছের গোড়ায় আগাছা জন্মাতে দেয়া যাবে না। আগাছা দেখলেই নিড়ানি দিয়ে ফেলে দিতে হবে। মিষ্টি মরিচ গাছের সহ্যশক্তি কম থাকায় খরা বা জলাবদ্ধতা কোনোটাই সহ্য করতে পারে না। তাই প্রয়োজন মতো পানি দিতে হবে এবং জলাবদ্ধতা রোধে সুষ্ঠু নিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে হবে। গাছ হেলে পড়া রোধে খুঁটির ব্যবস্থা করতে হবে।
বালাই ব্যবস্থাপনা
মিষ্টি মরিচ গাছে সাধারণত কিছু পোকামাকড়, ছত্রাক ও ভাইরাসজনিত রোগের আক্রমণ হয়ে থাকে। পোকার মধ্যে জাবপোকা, এফিড, থ্রিপস, লালমাকড় ও মাইট আক্রমণ করে। ছত্রাকজনিত সাধারণত এনথ্রাকনোজ, উইল্কল্ট রোগে আক্রান্ত হয়। ভাইরাসজনিত রোগে পাতায় হলদে দাগ পড়ে এবং পাতা কুঁকড়ে আসে। এ রোগে গাছ তুলে মাটিতে পুঁতে ফেলা বা পুড়িয়ে ফেলা ছাড়া উপায় নেই। ভাইরাসজনিত রোগের জন্য তেমন কোনো কীটনাশক পাওয়া যায় না। এছাড়া পোকা বা ছত্রাকজনিত রোগের আক্রমণ হলে কৃষিকর্মীর পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
ফসল সংগ্রহ
মিষ্টি মরিচ সাধারণত সবুজ অবস্থায় খাওয়া হয়। তাই মরিচের রঙ লালচে হওয়ার আগে পরিপক্ক সবুজ অবস্থা সংগ্রহ করতে হবে। সপ্তাহে একবার মরিচ সংগ্রহই উত্তম।