আজ বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৭ অপরাহ্ন

পাটের বিছা পোকা-শুয়ো পোকার দমন ব্যবস্থাপনা

পাটের বিছা পোকা-শুয়ো পোকার দমন ব্যবস্থাপনা

পাটের বিছা পোকা শুয়ো পোকার দমন ব্যবস্থাপনা

 

পাটের বিছা পোকা-শুয়ো পোকার দমন

পাট চাষীদের জন্যে একটা ভয়ঙ্কর নাম বিছা পোকা/শুয়ো পোকা। এই পোকার আক্রমণে পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয় থাকে। আসুন জেনে নেয়া যাক বিছা পোকা সম্পর্কে ।

পাটের বিছা পোকা

পাটের বিছা পোকা



পোকা চেনার উপায় : 

পূর্ণবয়স্ক পোকা একটি মাঝারী আকারের হালকা বাদামী রং এর মথ। এদের পাখায় কালো ফোঁটা আছে। স্ত্রী মথ পাটের পাতার উল্টো দিকে গুচ্ছকারে ডিম পাড়ে। প্রথমে ডিমের রঙ সবুজ ক্রমশঃ বাদামি ও পরে কালো রঙ ধারণ করে। বাচ্চা কীড়া হালকা সবুজ বা হলুদ বর্ণের হয় এবং পূর্ণবয়স্ক কীড়া কমলা বা গাঢ় হলুদ রঙের হয়। লম্বায় ৪-৫সেমিঃ ও চওড়া ০.৮ সেমিঃ ।

ক্ষতির ধরণ : 

পাটের বিছা পোকার কীড়া ৬ দিন পর্যন্ত পাতার উল্টো পিঠের সবুজ অংশ খেয়ে পাতাকে সাদা পাতলা পর্দার মত করে ফেলে। তারপর সারা মাঠে ছড়িয়ে পড়ে এবং জমির পুরো পাতা খেয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

কীড়ার ৬টি ধাপ রয়েছে যার প্রতিটিই পাতা খেয়ে ক্ষতি করে। মথ সরাসরি কোন ক্ষতি করে না বরং বংশবৃদ্ধি করে।
প্রথম ধাপের বয়স ১-৩ দিন,
২য় ধাপের ৪-৬ দিন,
৩য় ধাপের ৭-৯ দিন,
৪র্থ ধাপের ১০-১৩ দিন,
৫ম ধাপের ১৪-১৭ দিন এবং
৬ষ্ঠ ধাপের বয়স ১৮-২০ দিন।

এরপর পিউপা অবস্থায় ৯-১০ দিন শুকনো পাতা বা মাটির গর্তে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। মধ্য মে হতে আগস্টের শেষ পর্যন্ত সময়ে এ পোকার আক্রমণ হয়।

শুয়ো পোকা

শুয়ো পোকা



পোকার আক্রমণের পূর্বে করণীয়:

পাট ক্ষেতের আশে পাশে বা অন্য আগাছা থাকলে তা পরিস্কার করা। বিছা পোকা যাতে এক ক্ষেত হতে অন্য ক্ষেতে ছড়াতে না পারে সে জন্য প্রতিবন্ধক নালা তৈরী করা যায়।

পাটের বিছা পোকা শুয়ো পোকার দমন ব্যবস্থাপনা

পাটের বিছা পোকা শুয়ো পোকার দমন ব্যবস্থাপনা


পোকার আক্রমণের পর করণীয়:

প্রাথমিকভাবে পাটের পাতায় ডিমের গাদা বা কীড়া দেখলে তা তুলে পায়ে মাড়িয়ে বা গর্তে চাপা দিয়ে মারা বা কেরোসিন মিশ্রিত পানিতে (১:২০) ডুবিয়ে মেরে ফেলা।

মথ দমনের জন্য আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে; পাট গাছের উচ্চতা ৩ ফুট পর্যন্ত প্রতিগাছে ২টি এবং ৪ ফুট পর্যন্ত ৪টি বিছাপোকা দেখা গেলে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

ল্যামডা-সাইহ্যালোথ্রিন গ্রুপের ক্যারাটে ২.৫ ইসি; অথবা জুবাস ২.৫ ইসি; অথবা ফাইটার প্লাস ১ মিলি/লি. হারে পানিতে মিশিয়ে গাছে ভালভাবে স্প্রে করা যেতে পারে।

অথবা কার্বারিল গ্রুপের সেভিন ৩.৪ গ্রাম/লি. পানি হারে মিশিয়ে গাছে ভালভাবে স্প্রে করা যেতে পারে;

অথবা সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক ১০ ইসি অথবা রিপকর্ড ১০ ইসি; অথবা সিমবুশ,রিপেল,কট ১০ ইসি; অথবা শেফা ১০ ইসি ১ মিলি/লি. পানি হারে মিশিয়ে গাছে ভালভাবে স্প্রে করা যেতে পারে।

পাট কাটার পর ভালকরে জমি চাষ দিতে হবে যাতে করে আবর্জনা/মাটিতে লুকিয়ে থাকা পিউপা মারা যায়।

আরও পড়ুন   পেয়ারার আগা মরা রোগ

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

Comments are closed.

© All rights reserved © 2014 Ajkerkrishi.com
Developed By One Planet Web