আজ শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২২ পূর্বাহ্ন

ফলগাছে লেয়ারিং-গুটি কলম-দাবা কলম পদ্ধতি

ফলগাছে লেয়ারিং-গুটি কলম-দাবা কলম পদ্ধতি

ফলগাছে লেয়ারিং/গুটি কলম/দাবা কলম পদ্ধতি

সাধারণ তথ্যঃ

দাবা কলম হচ্ছে -“মাতৃগাছের সঙ্গে সংযুক্ত অবস্থায় এর শাখায় অস্থানিক শিকড় গজিয়ে মাতৃগাছের হুবহু গুণসম্পন্ন চারা উৎপাদনের কৌশল”। অর্থাৎ ইপ্সিত ফলগাছের কোন শাখায় ক্ষত সৃস্টি করে সেখান থেকে আস্থানিক শিকড় গজিয়ে পরবর্তীতে এটিকে মাতৃগাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটি পুর্ণাঙ্গ স্বতন্ত্র গাছ হিসাবে তৈরী করা ।

ফলগাছে লেয়ারিং-গুটি কলম-দাবা কলম পদ্ধতি

ফলগাছে লেয়ারিং-গুটি কলম-দাবা কলম পদ্ধতি

বাংলাদেশের বিভিন্ন ফলের বংশবিস্তারে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় যেমনঃ লিচু, পেয়ারা, কাগজীলেবু, জামরুল,বাতাবী লেবু, ডালিম, করমচা, গোলাপজাম, জলপাই, কামিনী ফুল, ভেলভেট ফুল ইত্যাদি।
সাধারণতঃ ঝোপ জাতীয় ফল গাছ যেগুলো উচু কম হয় এবং পাশ্বে বেশী ছড়ায় এ ধরণের গাছের বংশবিস্তারের জন্য দাবা কলম উপযোগী।

দাবা কলমের সুবিধাঃ

ক) এটি একটি সহজ পদ্ধতি এবং করতে খুব একটি দক্ষতার প্রয়োজন হয় না।
খ) অল্প সময়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গাছের চারা উৎপাদন করা যায়।
গ) কলমের চারায় কম সময়ে ফল ধারণ করে।
ঘ) যে সমস্ত প্রজাতি কাটিং এ সহজে শিকড় গজায় না তাদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি সফলতা বয়ে আনতে পারে।

দাবা কলমের অসুবিধাঃ

ক) বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ পদ্ধতি কাটিং অপেক্ষা ব্যয়বহুল এবং এর জন্য বাড়তি শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।
খ) এই পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করতে গেলে অধিক সংখ্যক মাতৃগাছের প্রয়োজন হয়।

সুবিধা অসুবিধা বিবেচনায় এনে যদি এই পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করে যদি একজন চাষী একে লাভজনক মনে করেন তবে তখনই এটিকে গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়।

ফলগাছে লেয়ারিং-গুটি কলম-দাবা কলম পদ্ধতি 2

ফলগাছে লেয়ারিং-গুটি কলম-দাবা কলম পদ্ধতি 2

দাবাকলমের প্রকারভেদ:

অধুনা বিশ্বে এই প্রাচীন পদ্ধতির সংস্করণ করে উন্নত পদ্ধতির প্রচলন করা হয়েছে। দাবা কলমের বেশ কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছেঃ

ক) শাখা দাবা কলম
খ) সরল দাবা কলম
গ) যৌগিক দাবা কলম
ঘ) পরিখা দাবা কলম
ঙ) ঢিবি দাবা কলম এবং
চ) গুটি কলম।

গুটি কলম:

দাবা কলমের মধ্যে গুটি কলম সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রচলিত পদ্ধতি । গুটি কলমকে পট লেয়ারেজ, চাইনিজ লেয়ারেজ, এয়ার লেয়ারেজ, মারকটেজ নামেও ডাকা হয়ে থাকে। গুটি কলম নিরক্ষীয় এবং নাতিশীষ্ণ অঞ্চরের গাছের বংশবিস্তারে বিশেষ করে ফল গাছের বংশ বিস্তারে ব্যবহৃত হয়।

ধাপ ১. নির্বাচিত শাখা যাতে গুটি কলম করা হবে।
ধাপ ২. পাতা অপসারণ করে চক্রাকারে বাকল তুলে ফেলা হয়েছে।
ধাপ ৩. কাটা অংশের চারিদিকে রুটিং মিডিয়াম দিকে ঢেকে দেয়া হয়েছে এবং পানি ধারণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
ধাপ ৪. রুটিং মিডিয়াম সহ ডালকে পাতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে মুড়ে দেয়া হয়েছে।
ধাপ ৫. মূল গজানো দাবা কলম।

গুটি কলম সাধারণতঃ

ক) মাটির সমান্তরালে অবস্থান করছে এমন শাখায় করা হয়ে থাকে।
খ) নির্বাচিত ডালের বয়স ৬-১২ মাস হতে হবে।

গ) ডালটি পেন্সিলের মত মোটা হতে হবে, গাছের দক্ষিণ পূর্ব দিকের ডাল হলে উত্তম। নির্বাচিত শাখার অগ্রভাগর ৩০-৪০ সে:মি: নীচে কয়েকটি পাতা সরিয়ে দুটি পর্ব মধ্যবর্তী অংশ থেকে ধারালো ছুরি দিয়ে চক্রাকারে ৪-৫ সে:মি: পরিমাণ জায়গায় বাকল তুলে ফেলতে হয়। কাটা জায়গার কাঠের উপরের সবুজাভ আবরণটি ছুরির বুক দিয়ে চেঁছে ফেলে দিতে হয। এতে ক্যাম্বিয়াম যোগসুত্র বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ডালের উপরের দিকের কাটাটি গিটের কাছাকাছি হলে ভাল হয়। কারন এতে কলমে তাড়াতাড়ি শিকড় গজায়। এরপর কাটা জায়গাটিকে পুরোপুরি রুটিং মিডিয়া (৫০% এটেল দোয়াশ মাটি + ৫০% পঁচা গোবর) নারিকেলের ছোবড়ার গুড়া, নারিকেলের ছোবড়া, পাটের আঁশ ইত্যাদি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে শিকড় গজানোর জন্য কাটা উপরের অংশ যেন অবশ্যই রুটিং মিডিয়া দিয়ে ঢাকা থাকে। রুটিং মিডিয়া স্থাপনের পর এর চারদিকে স্বচ্ছ পলিথিনের শীট শক্ত করে বেধে দিতে হয যেমন কোন ভাবেই রুটিং মিডিয়া পিছলে না নেমে যায়। এ ব্যবস্থা রুটিং মিডিয়ায় পানি ধারণ নিশ্চিত করে। অনেক সময় সহজে শিকড় গজায় না এমন প্রজাতির কলমের ক্ষেত্রে কাটা অংশে রুটিং হরমোন (IBA, NAA, Kinetin ইত্যাদি) প্রয়োগ করা হয়। বৈশাখ – আষাঢ় মাস গুটি কলম করার উপযুক্ত সময়। গুটি কলমে শিকড় গজাতে গাছের প্রকার ভেদে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় নেয়। শিকড়ের রং প্রথমে সাদা থাকে, আস্তে আস্তে রং বদলিয়ে খয়েরী হয়। শিকড়ের রং খয়েরী হলে মাতৃগাছ থেকে ২ থেকে ৩ দফায় কেটে নিয়ে এসে নার্সারী বেডে রোপণ করতে হয়। উদাহারণঃ লিচু, কাগজীলেবু, পেয়ার, ডালিম, জামরুল, বতাবীলেবু, জলপাই,গোলাপজাম, করমচা, আম ইত্যাদি।

আরও পড়ুন   অতিরিক্ত সার ব্যবহারের অপকারিতা ও সঠিক সার প্রয়োগ পদ্ধতি

যৌগিক দাবাকলম:

সাধারণতঃ লতানো স্বাভাবের কাষ্ঠল শাখা বিশিষ্ট গাছে দাবা কলমের এ পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয়। এর জন্য লম্বা এবং সহজে বাঁকানো যায় এমনি শাখা নির্বাচন করা হয়। শাখার প্রতিটি একান্তর পর্ব বা দু’টি বাদ রেখে তৃতীয় পর্ব মাটি চাপা দেয়া হয়। মাটির নিচে চাপা দেয়া অংশ থেকে শিকড় এবং উপরের অংশ থেকে বিটপ বের হয়। তখন এগুলো কেটে লাগানো হয়। যেমনঃ আঙ্গুর, মাধবীলতা ইত্যাদি।

ধাপ – ১. একটি শাখাকে একান্তর ক্রমিক ভাবে মাটিতে পোঁতা হয়েছে।
ধাপ – ২. মাটি চাপা অংশ থেকে মূল গজিয়েছে।
ধাপ – ৩. পর্ব থেকে নতুন শাখা ও মূল গজিয়েছে।
ধাপ – ৪. যৌগিক দাবা কলম পৃথক করা হয়েছে।

দাবাকলমের ব্যবস্থাপনা:

ক) যেহেতু দাবা কলম নার্সারীতে বেশ কয়েক বছর স্থায়ী হয় তাই এর স্থান, মাটি, জলাবদ্ধতামুক্ত এবং উপযুক্ত পরিবেশে হতে হবে।
খ) দাবা কলমের মাতৃগাছ হুবহু উৎস গুণসম্পন্ন এবং রোগবালাই মুক্ত হতে হবে।
গ) দাবা কলমে শিকড় গজানোর সময় রুটিং মিডিয়া দিয়ে গোড়া অবশ্যই ঢেকে দিতে হয়। এ ব্যবস্থা শুধুমাত্র শিকড় গজানোর স্থানে অন্ধকার প্রদানই নয় বরং প্রয়োজনীয় জীলয় রস এবং নিস্কাশনসহ অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করে।
ঘ) রোগ, পোকামাকড় এবং আগাছা নিয়ন্ত্রণ বিশেষভাবে খেয়াল করতে হবে। তা না হলে দাবা কলমে পুরোপুরি সফলতা আসবে না।
ঙ) দাবা কলম মাতৃগাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে এসে অতিরিক্ত পাতা ও ডাল ছাটাই করে গোড়ার পলিথিন শীট খুলে ফেলে ৩/৪ দনি জাগ দেয়া উচিৎ। এতে হার্ডেনিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। যার দরুন পরবর্তীতে কলমের চারা মাঠের প্রতিকুল আবহাওয়া সহজেই সহ্য করতে পারে।
চ) দাবা কলমের চারাগুলির উপরের অংশে শিকড়ের বিস্তৃতির অনুপাতে ছাটাই করতে হবে। এ ব্যবস্থা কলমের বৃদ্ধির সামঞ্জস্যতা রক্ষা করবে।
ছ) প্রাথমিকভাবে দাবা কলমের চারাগুলিকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা এবং আদ্রতাপূর্ণ জায়গায় রাখা বাঞ্ছনীয়।
জ) ১৫ সে:মি: x ২৫ সে: মি: সাইজের ছিদ্রযুক্ত পলিথিন ব্যাগে ২ ভাগ মাটি : ১ ভাগ গোবর : ১ বাগ কম্পোষ্ট যুক্ত মিশ্রণ দিয়ে ভর্তি করতে হবে।
ঝ) হার্ডেনিং করা দাবা কলমের চারাগুলোকে পরবর্তীতে পলিথিন ব্যাগে লাগিয়ে আধো ছায়াযুক্ত স্থানে নতুন বিটপ গজানো এবং লেগে যাওয়া পর্যন্ত রাখতে হবে।

আরও পড়ুন   চুয়াডাঙ্গায় পেয়ারা বাগান করে সফলতা পেয়েছেন চাষীরা

শারীরবৃত্তীয় এবং অংগসংস্থানিক ভিত্তি:
দাবা কলমে গাছের সংযুক্ত শাখায় ক্ষত সৃষ্টি করে তাতে অস্থানিক শিকড় গজিয়ে উক্ত শাখাকে পুনর্জন্ম দেয়া হয়। শাখার এই যে পুনর্জন্ম লাভ দুইটি মৌলিক বিষয়ের উপর নির্বরশীল।

ক) প্রথমটি হচ্ছে ‘টোটিপোটেন্সি’ অর্থাৎ প্রতিটি জীবিত উদ্ভিদ কোষই কৌলিতাত্ত্বিকভাবে উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ গঠন এবং তাদের ক্রিয়াকর্ম চালানোর সংকেত বহন করে।
খ) দ্বিতীয়টি হচ্ছে ক্রমবিকাশের ফলে নতুন অংগের উদ্ভব। অর্থাৎ পূর্ণতাপ্রাপ্ত কোষের পরিবর্তন সাধন হয়ে নতুন অস্থানিক বর্ধনশীল অংগের সৃষ্টি।

দাবা কলমের শিকড়ায়নের শারীরবৃত্ত্বীয় ঘটনাঃ

দাবা কলমে যখন শাখার গোড়ায় কেটে বাকল তোলা হয় তখন কাটা অংশের আন্তঃকোষীয় ফাঁকগুলি গাছের রসে পূর্ণ হয়ে যায়। বৃক্ষ রসে উপস্থিত চিনি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এ রূপান্তরিত হয়, যা কিনা পরবর্তীতে বাতাসের অক্সিজেন এর সাথে মিশে সুবেরিন তৈরী করে। এই সুবেরিন জমা হয়ে সুবেরিন ত্বক সৃষ্টি করে যা শাখা থেকে পানি বেরিয়ে যাওয়াসহ পচন, রোগ জীবাণুর আক্রমন প্রতিরোধ করে। সুবেরিন ত্বক হচ্ছে একটি ক্ষণস্থায়ী স্তর। এ জন্য পরবর্তীতে পেরেনকাইমা কোষ বা কর্টেক্স থেকে প্রথমে ক্যালাস এবং পরবর্তীতে ক্যাম্বিয়াম সৃষ্টি হয় যা একটি স্থায়ী স্তর। ক্যাম্বিয়াম কলার বিভাজন ক্ষমতা আছে এই ক্ষমতাবলে এসব কলা থেকে নতুন নতুন কোষ উৎপাদনের মাধ্যমে দ্রুত বর্ধনশীল অংগের সৃষ্টি হয় যা শেষ পর্যন্ত শিকড় গজানোর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

দাবা কলমের শিকড়ায়ন এর বৃদ্ধি প্রক্রিয়ায় অক্সিন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। দু’টি ধাপে অক্সিনের কার্যকলাপ প্রকাশ পায়।

আরম্ভ পর্যায়ঃ

যেখানে শিকড়ের মেরিষ্টেম সৃষ্টি হয়। এটি দু’ভাগে বিভক্ত।
ক) অক্সিন সক্রিয় পর্যায় – ৪ দিন স্থায়ী;
খ) অক্সিন নিস্ক্রীয় পর্যায় – ৪ দিন স্থায়ী।

র্দীঘায়ন এবং উন্নয়ন পর্যায়ঃ

শারীরবৃত্তীয়ভাবে দাবা কলমে শিকড়ায়নে নিম্ন লিখিত অভ্যন-রীণ নিয়ামকগুলি প্রভাবাম্বিত করে থাকে।
ক) গাছের বয়স
খ) গাছের পুষ্টি এবং হরমোন জনিত অবস্থা
১। অক্সিন, জিবারেলীন, সাইটোকাইনিন শিকড়ায়নে সহায়তা করে
২। এবসিসিক এসিড শিকড়ায়নে বাধার সৃষ্টি করে
গ) মূল গাছে শাখার অবস্থান
ঘ) কলার পূর্ণতা
ঙ) শাখায় পাতার উপস্থিতি
চ) কাটা অংশে রোগজীবাণূ বা পোকা-মাকড়ের উপস্থিতি

আরও পড়ুন   হালদা রক্ষায় রাবার ড্যামের বিকল্প খুঁজছে কৃষি মন্ত্রণালয়

অনুরূপভাবে দাবা কলমে নিম্নলিখিত বাহ্যিক নিয়ামকগুলি শিকড়ায়ন প্রভাবাম্বিত করেঃ

ক) নির্দিষ্ট মৌসুমঃ গ্রীস্মের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত
খ) আলোঃ শাখার উপরের অংশ সালোকসংশ্লেষণে সহায়তা করে। শাখার গোড়ায় অন্ধকার শিকড়ায়নে সহায়তা করে।
গ) তাপমাত্রাঃ ২১-৩০ ডিগ্রী সেঃ দিনের এবং ১৫-১৬ ডিগ্রী সেঃ রাত্রির তাপমাত্র শিকড় গজাতে সাহায্য করে।
ঘ) পানিঃ অল্প পরিমাণ জলীয় রস শিকড়ায়ন বিঘ্নিত করে। বেশী হলে শ্বসন প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়।
ঙ) রুটিং মিডিয়াঃ বাতাসপূর্ণ রুটিং মিডিয়া শিকড়ায়নে সহায়তা করে। প্রয়োজনীয় তাপমাত্র পানি এবং আলোর অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে।
চ) পোলারিটিঃ ডালের নিকটবর্তী এবং দূরবর্তী অংশ অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।

দাবা কলমে শিকড়ায়নে অংগসংস্থানিক ক্রমবিকাশঃ

অংগসংস্থানিকভাবে দাবা কলমে শিকড়ায়ন চারটি ধাপে সংঘটিত হয়।

ক) সুনির্দিষ্ট পূর্ণতাপ্রাপ্ত কোষ থেকে ক্রমবিকাশের ফলে নতুনভাবে অংগের উদ্ভব হওয়া।
খ) নতুন উদ্ভব হওয়া বিভাজনক্ষম ভাসকুলার টিস্যু অথবা ভাসকুলার বান্ডিলের নিকটতম নির্দিষ্ট কোষ থেকে প্রারম্ভিক শিকড়ের বিকাশলাভ।
গ) এই সকল বিকশিত শিকড়ের প্রারম্ভিক অবস্থা থেকে সুসংগঠিত শিকড়ে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে ক্রমবিকাশ লাভ।
ঘ) কর্টেক্স এবং অন্যান্য কলা ভেদ করে শিকড়ের বৃদ্ধি এবং বেরিয়ে আসা ও পারবর্তীতে প্রাথমিক শিকড় এবং জাইলেম কলার মধ্যবর্তী ক্যাম্বিয়াম সৃস্টি।

লিচু গাছের গুটি কলম করার পদ্ধতি :

গুটি কলম করার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল৷
গুটি কলমের জন্য ১-২ বছর বয়সী, সতেজ, সরল, নিরোগ, পেন্সিলের মতো মোটা ডাল বেছে নিতে হবে ৷
নির্বাচিত ডালের আগা হতে ৪০-৫০ সেন্টিমিটার পরে (লম্বা) ঠিক একটি গিঁটের নিচে ৩-৪ সেন্টিমিটার পরিমাণ মাপের ছাল গোল করে ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে ডালটির কেবল বাকল সাবধানে উঠিয়ে ফেলতে হবে৷
এরপর জৈব সার মিশ্রিত (৩ ভাগ এঁটেল মাটি ও ১ ভাগ পঁচা গোবর বা পাতা পঁচা ) মাটির সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে৷ উক্ত পেস্ট দ্বারা কাটা অংশ সমান ভাবে ঢেকে দিতে হবে৷
ঢেকে দেয়ার পর ২০ সে.মি. লম্বা ও চওড়া পলিথিন দিয়ে মাটি বলটি ঢেকে দিয়ে সুতলি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে ৷
শিকড় আসতে সময় লাগে ২-৩ মাস ৷ শিকড়ের রঙ খয়েরী বা তামাটে হলে কলম করা ডালটি গুটিসহ কেটে এনে পলিথিন সরিয়ে দিয়ে ছায়া জায়গায় তৈরি বীজতলায় বা টবে ৪-৫ সপ্তাহ সংরক্ষণ করার পর গাছটি লাগানোর উপযোগী হয়৷

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

Comments are closed.

© All rights reserved © 2014 Ajkerkrishi.com
Developed By One Planet Web