আজ বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৬ অপরাহ্ন
বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে সাফল্য
বদলে যাচ্ছে চাষাবাদ পদ্ধতি। আগে বলা হতো, বোকার ফসল পোকায় খায়। কৃষক এখন আর বোকা নন। তারা নিজেদের ভালো বোঝেন। পোকায় যাতে কৃষকের ফসল খেতে না পারে সেজন্যও তারা সচেতন হচ্ছেন। নেটহাউজ দিয়ে ঘিরে সবজি চাষ করে কৃষকরা পোকার হাত থেকে রক্ষা করছেন ফসল।
নেটহাউজ থাকায় ক্ষতিকর বিষ দিতে হচ্ছে না। বিষের খরচ বেচে যাচ্ছে। উৎপাদনও হচ্ছে ভালো। কৃষক লাভবান হচ্ছেন। এসব কথা বলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর।
আজ মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে আয়োজিত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
আয়োজনে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মোট ৪০ জন কৃষক অংশ নেন। আজ মঙ্গলবার কৃষকদের পলিনেট দিয়ে ঘিরে ফসল উৎপাদন ও পলিনেট ছাড়া ফসল উৎপাদনের পার্থক্য দেখানো হয়। কৃষকরা বলেন, পলিনেটে থাকা পাতাকপি তরতাজা, সতেজ ও বিষমুক্ত। পলিনেটের বাইরের পাতাকপি অতোটা তরতাজা নয়, বিষমুক্তও নয়।
আয়োজকরা জানান, এখন চুয়াডাঙ্গা জেলার মাঠে মাঠে শীতের সবজি। বিষমুক্ত ও তরতাজা সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে পলিনেট ব্যবহারের সুবিধা হাতে-কলমে দেখানোর জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ আয়োজনে কৃষকদের হাতে লিফলেট বিতরণ করা হয়। বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদনের কৌশল দেখানো হয়। মাঠে হাতে-কলমের কাজ শেষে আলোচনা সভায় কৃষকরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। কৃষক মুক্তা খাতুন বলেন, ‘পলিনেট ব্যবহারের উপকারিতা আমরা বুঝতে পেরেছি। পলিনেট ব্যবহার করা না করার পার্থক্য মাঠে গিয়ে নিজেরা দেখে বুঝেছি। আমরা জেনেছি, সবজি চাষাবাদে পলিনেট ব্যবহার করতে হবে। তাহলেই পাওয়া যাবে বিষমুক্ত সবজি। ‘
ওয়ালমার্ট ফাউন্ডেশনের সবজি উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ (এভিপিআই) প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক সার উন্নয়ন কেন্দ্র (আইএফডিসি) এ মাঠ দিবসের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক নায়েব আলী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক সৈয়দ আফজাল মাহমুদ হোসেন, এমঅ্যান্ডই অফিসার মীর হোসেন খন্দকার। মাঠ সমন্বয়কারী শরিফুল আলম মনি, মীর আব্দুল মান্নান, আইএফডিসির ফিল্ড মনিটরিং অফিসার আলমগীর রশিদ ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রসঙ্গত, পরীক্ষামূলক এ প্রকল্পের আওতায় ছিল পলিনেট দিয়ে ঘিরে চারা উৎপাদন থেকে সবজি উৎপাদন পদ্ধতি পর্যন্ত। গত অক্টোবর একই স্থানে পলিনেট দিয়ে ঘিরে পাতাকপির চারা উৎপাদন করা হয়। সেই চারা পরে পলিনেট ঘেরা স্থানে রোপণ করে চাষাবাদ করা হয়। চাষাবাদে সম্পৃক্ত থাকা কৃষকরা বলেন, পলিনেটের বাইরে বিষ ও সেচ খরচ বেশি হয়েছে। পলিনেট ঘেরা ক্ষেতে বিষ দিতে হয়নি। সেচ দিতে হয়েছে কম।
সূত্র- পদক্ষেপ