আজ বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ অপরাহ্ন

দূষিত মাটির মাধ্যমে সংক্রামিত রোগ বলাই

দূষিত মাটির মাধ্যমে সংক্রামিত রোগ বলাই

দূষিত মাটির মাধ্যমে সংক্রামিত রোগ বলাই

নানা কারণে মাটি দূষিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে কারখানা বর্জ, বালাইনাশক, আগাছানাশক এবং অন্যান্য বর্জ। মানুষ নানাভাবে এসব দূষিত মাটির সংস্পর্শে আসে এবং রোগাক্রান্ত হয়। উল্লেখযোগ্য রোগগুলির মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের সমস্যা, ম্যালেরিয়া, কলেরা, আমাশয়, চর্ম ও পাকস্থলীর সংক্রামন।

ক্যান্সার:

অধিকাংশ বালাই নাশক ও রাসায়নিক সারের মধ্যে আছে বেনজিন, ক্রমিয়াম এবং অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য যা ক্যান্সার রোগ সৃষ্ঠি করে। এমন কি আগাছানাশকের মধ্যেও ঐ সব বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য রয়েছে। এ সমস্ত বিষাক্ত বালাইনাশক, আগাছানাশক এবং রাসায়নিক সার যখন ফসলে প্রয়োগ করা হয় তখন চোয়ায়ে মাটিতে জমে এবং মাটি দূষণ ঘটায়। ফসল তা শুষে নেয়। ঐ সকল বিষাক্ত শস্য সেবনের ফলে রক্তের লোহিত কনিকা, শ্বেত কনিকা এবং এন্টিবডি উৎপাদন ব্যাহত হয়। যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

কিডনি ও লিভারের রোগ:

পারদ এবং সাইক্লোডাইনস্ এর মত পদার্থ যখন মাটিতে থাকে তখন তা ঐ মাটিতে উৎপাদিত খাদ্য শস্যের মাধ্যমে প্রাণী দেহে প্রবেশ করে। এ সব বিষাক্ত পদার্থ প্রাণীর কিডনি ও লিভারের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করতে পারে। যে সব মানুষ জঞ্জালের স্তুপের কাছে অথবা শিল্প কারখানার কাছে বাস করে তাদের সহসাই লিভার এবং কিডনির রোগ হওয়ার আশংকা থাকে।

ম্যালেরিয়া:

মাটি দূষণ নিবিড়ভাবে পানি দূষণের সাথে যুক্ত। দূষণে দূষণে মিলে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হয়। ভেজা কর্দমাক্ত আবর্জনা যুক্ত পরিবেশে মশার জন্ম হয়। মশা ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ঘটায়।

কলেরা ও আমাশয়:

দূষিত মাটি চোয়ায়ে ভুগর্ভস্থ পানি দূষিত হয়। পানীয় জলের উৎস দূষিত হয়। এভাবে পানিবাহিত রোগ যেমন কলেয়া ও আমাশয়ের প্রাদূর্ভাব বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুন   কিভাবে শুরু করবেন লাভজনক নার্সারি ব্যবসা

চর্ম এবং পাকস্থলির রোগ সংক্রমণ:

নখের ফাঁকে মাটি ঢুকলে সে মাটি মানব দেহে প্রবেশ করতে পারে। শাক সবজিতে লেগে থাকা মাটি ভাল করে না ধুয়ে খেলে তা মানব দেহে প্রবেশ করতে পারে। ফলে পাকস্থলিতে মারত্মক রোগ ব্যাধির সংক্রমণ ঘটতে পারে। রান্নার জন্য শাক সবজি কাটার আগে পরিস্কার পানিতে ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তাছাড়া দূষিত মাটি বমি বমি ভাব, ক্লান্তি, এবং মাথা ধরার কারণ হতে পারে। দূিষত মাটি চামড়ায় লাগলে ফুসকুড়ি, চুলকানি, ঘা, চর্মরোগ ইত্যাদি হতে পারে।

উপরে বর্ণিত রোগ বালাই এর যে কোন একটি মানুষের সারা জীবনের শান্তি কেড়ে নিতে পারে। এমন কি অকাল মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। তাই সম্ভব হলে মাটি দূষণ সম্পূর্ণ বন্ধ করা অথবা লক্ষণীয় ভাবে কমিয়ে আনার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ব্যক্তিপর্যায় সচেতনতার মাধ্যমে মাটি দূষণ থেকে বিরত থাকা এবং দূষিত মাটির সংস্পর্শে না আসা।

লেখক – Dr. M.A.Sobhan

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন

Comments are closed.

© All rights reserved © 2014 Ajkerkrishi.com
Developed By One Planet Web