আজ বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ অপরাহ্ন
বর্তমানে হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ রোগে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে। মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতাটাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার বলা হয়।
আজকাল যে কোনো বয়সী মানুষের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা দেখা যায়। সাধারণত অতিরিক্ত ওজন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে অনেকেই খুব কম বয়সে উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগে আক্রান্ত হন।
উচ্চ রক্তচাপ হলে খাবারের নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরি। কেননা উচ্চ রক্তচাপ থেকেই ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ এবং হৃদরোগের মতো মারাত্মক রোগও হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, যাদের ব্লাড প্রেসারের সমস্যা রয়েছে, তারা অনায়াসেই সেই সমস্যা দূর করতে পারেন শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে। তাই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত প্রত্যেক রোগীর উচিত রক্তচাপ বাড়ায় এমন খাবার পরিহার করে সঠিক খাবার খাওয়ার মাধ্যমে তার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
প্রিয় সুধী পুষ্টি বাড়িতে আজকে এমন কিছু ক্ষতিকর খাবার সম্পর্কে আলোচনা করব যেগুলি এড়িয়ে চললে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন। তাহলে আসুন এবার জেনে নেয়া যাক এমন ৮ টি খাবারের তালিকা যেগুলো উচ্চ রক্তচাপে ভুলেও খাওয়া উচিত নয়।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় প্রথমেই যে খাবারটি খেতে মানা করব তা হলো লবণ। হাই ব্লাড প্রেসারের অন্যতম কারণ হল শরীরে মাত্রাতিরিক্ত সোডিয়াম জমা হওয়া। তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের জন্য লবণ খুবই ক্ষতিকর।
তাই খুবই সীমিত পরিমাণ লবন দিয়ে খাবার তৈরি করে খাবেন। খাবারের সাথে বাড়তি লবণ নিয়ে খাওয়া এবং বেশি লবণযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। এসেই সাথে বিট লবণ এবং অন্যান্য মুখরোচক লবণ গ্রহণ করা থেকেও বিরত থাকতে হবে।
বর্তমান যুগে ফাস্ট ফুড খাওয়া অনেকের দৈনন্দিন রুটিনে পরিণত হয়েছে। প্যাকেটজাত এবং প্রসেসড ফুডগুলির মধ্যেই সবথেকে বেশী উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টিকারক উপাদান থাকে।
অনেকেই জানেন না যে এই ফাস্ট ফুড এবং বেকারি খাবারে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম, প্রিজারবেটিভ, বিষাক্ত রঙ, এবং ক্ষতিকারক চর্বি ডালডা ব্যাবহার করা হয়। এইসব গুলি উপাদানই উচ্চ রক্তচাপের রোগীর জন্য বিষণ ক্ষতিকর। তাছাড়া তেলে ভাঁজা অধিক চর্বি যুক্ত মুখ রোচক খাবার থেকেও বিরত থাকতে হবে।
যারা কফি খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ হলো কফি খেলে সাময়িক সময়ের জন্য রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই যাদের উচ্চরক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের জন্য কফি খাওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ,
কারণ ক্যাফেইন রক্তনালীকে সরু করে দেয়, ফলে হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া রক্তচাপের ফলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কফি ও অতিরিক্ত চা পানের অভ্যাস বাদ দিয়ে প্রতিদিন এক কাপ করে গ্রিন টি পান করবেন।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় রেড মিট অর্থাৎ গরুর মাংস, খাসির মাংস এবং মহিষের মাংস একেবারেই বর্জন করা একান্তভাবে জরুরি। কারণ এই সব লাল মাংসে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি থাকে যা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বহু গুনে বাড়িয়ে দেয়।
হাই প্রেসারের রোগীরা মুরগীর চামড়া এবং ডিমের কুসম খেলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় সেই সাথে বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকিও। তাছাড়া মুরগি ত্বকে উচ্চ মাত্রার চর্বি থাকে যা মানুষের শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং স্ট্রোকের ঝুকি বাড়ায়।
অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ এই খাবার গুলি আমাদের শরীরে মেদ জমতে সাহায্য করে এবং এর ফলে ওজন বৃদ্ধি পেয়ে শরীর মোটা হয়ে যায়।
এমন অনেকে আছেন যারা অতিরিক্ত ওজনের কারণে উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাছাড়া অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খেলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই মিষ্টি কিছু যদি খেতে ইচ্ছে করে তাহলে চিনির বদলে সামান্য মধু খেতে পারেন।
যারা হাই প্রেসারের সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদের আচার এবং সস জাতীয় খাবার খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। কারণ আচার এবং সসে লবন এবং চিনির পরিমাণ খুব বেশি থাকে, যা প্রেসারের রোগীদের শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়।
অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় খেলে দ্রুত রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া এটাও মনে রাখা উচিত যে অ্যালকোহল ও কোমল পানীয়গুলোতে প্রচুর ক্যালোরি আছে যা ওজন বৃদ্ধি করে। তাই অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় কিংবা কোমল পানীয় না খেয়ে তাজা ফলের রস কিংবা লেবুর শরবত খাবেন।
এছাড়াও কখনও ননি সহ বা ফ্যাট যুক্ত দুধ খাবেন না। দুধ ও দুগ্ধজাত সামগ্রীর মধ্যে ননিবিহীন দুধ, টকদই খাবেন।