আজ বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ অপরাহ্ন
ভূমিকাঃ
আবহমানকাল হতে বাংলাদেশে কৈ, শিং ও মাগুর মাছ অত্যন্ত জনপ্রিয় মাছ হিসেবে পরিচিত। এসব মাছ খেতে সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। সুদূর অতীতে এ মাছগুলি প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের জলাশয়ে প্রচুর পাওয়া যেত। কিন্তু পরিবেশ বিপর্যয় ও াতি আহরণের কারণে এ মাছগুলি আজ আগের মত পাওয়া যায় না।
২০০২ সালে কৈ মাছের একটি বধর্দনশীল জাত থাই কৈ এদেশে আমদানী করা হয়। এ মাছ দ্রুত বর্ধনশীল এবং উৎপাদন দেশী কৈ থেকে অপেক্ষাকৃত বেশী হওয়ার কারণে কয়েক বছরের মধ্যে চাষীদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। কৃত্রিম প্রজনন ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং চাহিদা ও বাজারদর বেশী হওয়ায় ঞাই কৈ’র পাশাপাশি দেশী শিং ও মাগুর মাছের বাণিজ্যিক চাষও দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে।
শিং, মাগুর ও কৈ চাষের সুবিধাসমূহ–
শিং, মাগুর ও কৈ অত্যন্ত সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও লোভনীয় মাছ।
অসুস্থ্য ও রোগমুক্তির পর স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য এগুলো সমাদৃত মাছ, ইহাতে অধিক পরিমান ভিটামিন এ থাকে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনকারী খনিজ পদার্থ বিদ্যমান।
অতিরিক্ত শ্বাস অঙ্গ থাকায় এরা বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে দীর্ঘ সময় ডাঙ্গায় বেঁচে থাকতে পারের। ফলে জীবন্ত অবস্থায় বাজারজাত করা য়ায। অধিক ঘনত্বে, বিরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশেও (কম অক্সিজেনযুক্ত ও ঘোলা পানিতে) চাষ করা যায়, এদেশের আবহাওয়া এই মাছের চাষপোযোগী।
৩ মাসের মধ্যে বিক্রয়যোগ্য হয়, ফলে একই জলাশয়ে বছরে ৩–৪ বার চাষ করা সম্ভব (সঠিক নার্সারী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে)।
তুলনায় চাহিদা ও বাজার মূল্য অত্যাধিক বেশি হওযায় এ মাছগুলোর বানিজ্যিক চাষ দিন দিন বাড়ছে।
আন্তঃর্জাতিক বাজারেও ব্যাপক চাহিদা আছে।
কৈ মাছের নার্সারী ও চাষ ব্যবস্থাপনাঃ
পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি
নার্সারী পুকুরের আয়তন ১০–৫০ শতাংশ এবং গভীরতা ১.০–১.৫ মিটার।
পুকুর হতে অবাঞ্চিত মাছ ও প্রাণী দূর করা উত্তম, তবে পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে ১ ফুট পানির গভীরতায় ২৫–৩০ গ্রাম রোটেনন প্রয়োগ করতে হবে।
রোটেনন প্রয়োগের ৩–৪ দিন পর প্রতি শতাংশে ১.০ কেজি হারে চুন পুকুরে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
চুন প্রয়োগের ৩/৪দিন পর শতাংশ প্রতি ৫–৭ কেজি গোবর, ১৫০–২০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৭৫–১০০ গ্রাম === প্রয়োগ করতে হবে।
নার্সারী পুকুরের চারপাশে ৩–৪ ফুট উঁচু মশারীর জালের বেষ্টনী দিতে হবে। এর ফলে ব্যাঙ ও সাপ পুকুরে প্রবেশ করে পোনার ক্ষতি সাধন করতে পারবে না।
হাঁস পোকা ও ক্ষতিকারক প্লাংকটন বিনষ্ট করার জন্য রেণু পোনা মজুদের ২৪ ঘন্টা আগে ৭–১০ মিলি সুমিথিয়ন প্রতি শতাংশে অবশ্যই প্রয়োগ করতে হবে।
ধানী পোনা মজুদ
নার্সারী পুকুরের ১৫–২০ দিন বয়সের ধানী পোনা প্রতি শতাংশে ৫,০০০–৬,০০০ টি হারে মজুদ করা যেতে পারে।
পুকুরে থাই কৈ মাছের চাষঃ
পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি
কৈ মাছ চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ মাছ চাষের জন্য ৪–৬ মাস পানি থাকে এ রকম ১৫–৫০ শতাংশের পুকুর নির্বচন করতে হবে। তবে এর চেয়ে বড় পুকুরেও এ মাছ চাষ করা যায়।
পুকুর সেঁচে পানি শুকিয়ে অবাঞ্চিত মাছ ও প্রাণী দূর করতে হবে।
পুকুর শকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে ২৫–৩০ গ্রাম রোটেনন (১ ফুট গভীরতার জন্য) প্রয়োগ করে অবাঞ্চিত মাছ দূর করা যায়।
প্রতি শাতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ আবশ্যক।
চুন প্রয়োগের ৩ দিন পরে পূর্বের নিয়মে সার প্রয়োগ করতে হবে।
পোনা মজুদের পূর্বে পুকুরের চারিদিকে নাইলন জালের বেষ্টনি দিতে হবে।
সার প্রয়োগের ৭/৮ দিন পুকুরে পোনা মজুদ করতে হবে।
পোনা সংগ্রহ ও মজুদ
পুকুরে চাষের জন্য কৈ মাছের পেনা নিকটবর্তী ব্র্যাক হ্যাচারী হতে সংগ্রহ করতে হবে ও পলিথিন ব্যাগে অক্সিজেন দিয়ে পরিবহণ করতে হবে।
প্রতি শতাংশে ০.৫–১.০ গ্রাম ওজনের সুস্থ সবল ৩০০–৪০০ টি পোনা মজুদ করতে হবে। তবে উন্নত ব্যবস্থাপনায় অধিক ঘরত্বে পোনা মজুদ করা যেতে পারে।
পোনা মজুদের সময় পোনাকে মজুদকৃত পুকুরের পানির সাথে ভালভাবে কন্ডিশনিং করে তারপর ছাড়তে হবে।
খাবার ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যাঃ
পোনা মজুদের দিন থেকে ৩৫–৪০% আমিষ সমৃদ্ধ পিলেট খাদ্য নি¤েœর ছক অনুযায়ী সকাল দুপুর ও বিকালে পুকুরে ছিটিয়ে সরবরাহ করতে হবে:
কৈ মাছের খাদ্য প্রয়োগের তালিকা (প্রতি শতাংশে)
দিন | দৈহিক ওজন (গ্রাম) | খাদ্য প্রয়োগের হার (%) | প্রতি দিনের খাদ্য (গ্রাম) |
১–৯ | ১ | ২০ | ৬০ |
১০–১৯ | ৪ | ১৫ | ১৬২ |
২০–২৯ | ৭ | ১২ | ২২৭ |
৩০–৩৯ | ১২ | ১০ | ৩২৪ |
৪০–৪৯ | ২০ | ৮ | ৪৩২ |
৫০–৫৯ | ২৮ | ৭ | ৫৩০ |
৬০–৬৯ | ৩৮ | ৬ | ৬১৬ |
৭০–৭৯ | ৫২ | ৫ | ৭০২ |
৮০–৮৯ | ৬৫ | ৪.৫ | ৭৯০ |
৯০–৯৯ | ৮০ | ৪ | ৮৬৪ |
১০০–১২০ | ১০০ | ৩.৫ | ৯৪৫ |
এছাড়াও স্থানীয় ভাবে উপকরণ সংগ্রহ করে খাদ্য তৈরি করেও পুকুরে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
প্রতি ১০–১৫ দিন পর পর জাল টেনে মাছের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করে খাবারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।
পোনা মজুদের পর ৩০ দিন অন্তর অন্তর শতাংশ প্রতি ২০০ গ্রাম চুন প্রয়োগ করতে হবে।
কৈ মাছের পুকুরে প্রচুর প্লাংকটনের আধিক্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে, এই প্লাংকটন নিয়ন্ত্রণের জন্যে প্রতি শতাংশে মনোসেক্স তেলাপিয়ার পোনা ১২ টি ও সিলভার কার্পের পোনা ৪ টি মজুদ করা যেতে পারে।
প্রয়োজন মোতাবেক পুকুরে বাহির হতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
শীতকালীন সর্তকতাঃ
সাধারনতঃ শীতকালে থাই কৈ মাছে ক্ষতরোগ দেখা দেয়। এজন্য শীতের পূর্বেই যথাসম্ভব থাই কৈ মাছের বাজারজাত করা ভাল। তবে পুকুরে যদি বাজারজাতকরণের অনুপযোগী মাছ থাকে তবে শীতকালে অবশ্যই নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
পুকুরে গভীর নলকূপের পানি সরবরাহ করতে হবে।
প্রতি মাসে শতাংশ প্রতি ২০০ গ্রাম হারে চুন প্রয়োগ করা যেতে পারে।
কৈ মাছের রোগ বালাইঃ
পানির গুণাগুণ মাছ চাষের উপযোগী না থাকলে কৈ মাছ সহজেই রোগাক্রান্ত হয়। রোগবালাই এ মাছ চাষের ক্ষেত্রে একটি বিরাট অন্তরায়। পুকুরে সংক্রামক রোগবালাই এর আক্রমণ হলে মাছে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হয় না। ফলে, চাষীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
রোগ প্রতিরোধঃ
সঠিক ঘরত্বে মাছ চাষ করতে হবে।
মাঝে মাঝে হররা টেনে কদার স্তর ভেঙ্গে দিতে হবে।
পরিমিত পরিমাণ সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে।
পিএইচ উপযোগী মাত্রায় রাখার জন্য প্রতি শতাংশে ১৫০–২০০ গ্রাম চুন/ জিওলাইট প্রয়োগ করতে হবে।
প্রতিকার বা চিকিৎসাঃ
অধিক আক্রান্ত মাছ পুকুর থেকে উঠিয়ে ফেলতে হবে।
প্রতি শতাংশে ১০ গ্যাম হারে পুকুরে পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট প্রয়োগ করতে হবে।
প্রতি কেজি মাছের দেহ ওজনের জন্য ৫০ মিলিগ্রাম টেট্রাসাইক্লিন খাবারের সাথে মিশিয়ে ৭ দিন খাওয়াতে হবে।
প্রতি শতাংশে ২০০–৩০০ গ্রাম লবণ পুকুরে ছিঁটিয়ে দিতে হবে।
মাছ আহরণ ও উৎপাদনঃ
উল্লেখিত পদ্ধতিতে কৈ মাছ চাষ করলে ৪–৫ মাসের মধ্যে ১০০–১৫০ গ্রাম ওজনের হবে। এ সময় টেনে ও পুকুরের সমস্ত পানি শুকিয়ে মাছ ধরার ব্যবস্থা নিতে হবে। আধুনিক চাষ ব্যবস্থাপনায় প্রতি ১০০ শতাংশে ৩,০০০–৩৫০০ কেজি মাছ উৎপাদন করা যায়।
কৈ মাছ চাষের আর্থিক বিশ্লেষণঃ
এখানে একটি এক একর পুকুরের সম্ভাব্য উৎপাদন ও আয় ব্যয়ের হিসাব দেয়া হলো।
(ক) ব্যয়ের হিসাব:
ক্রমিক নং |
বিবরণ |
টাকার পরিমান |
মন্তব্য |
০১ |
পুকুর সংস্কার/ভাড়া (০৬ মাসের জন্য) |
২০,০০০ |
বাজার দর আনুযায়ী ১০–১৫% খরচ কম/ বেশী হতে পারে |
০২ |
কৈ মাছের পোনা ৪০,০০০ টি (নার্সারিতে লালনের পর ৩০,০০০ টি পোনা নিশ্চিত করার জন্য) |
৬০,০০০ |
|
০৩ |
সিলভার, তেলাপিয়া পোনা ১.৫০০ টি |
৩,০০০ |
|
০৪ |
চুন–২৫০ কেজি |
৪,০০০ |
|
০৫ |
মাছের খাদ্য (প্রায় ৩,৫০০ কেজি) |
১,৪০,০০০ |
|
০৬ |
পারিবারিক শ্রম ও শ্রমিক মজুরী |
২০,০০০ |
|
০৭ |
পরিবহন খরচ |
১৫,০০০ |
|
০৮ |
অন্যান্য |
৫,০০০ |
|
মোট ব্যয় = ২৬৭,০০০ টাকা |
(খ) আয়ের হিসাব:
ক্রমিক নং |
বিবরণ |
টাকার পরিমান |
মন্তব্য |
০১ |
কৈ মাছ বিক্রয় (বাঁচার হার ৮০% গড়ে ১০ টিতে কেজি ধরে এবং প্রতি কেজি ১৫০ টাকা হারে) (মাছ উৎপাদন = ২৪০০ কেজি) |
৩,৬০,০০০ |
সবকিছু অনুকুলে থাকলে এর অথিক আয় হতে পারে। |
০২ |
সিলভার, তেলাপিয়া (সিলভার ২০০ কেজি, তেলাপিয়া ১৬০ কেজি) | ||
মোট আয় = ৩৮৮,০০০ টাকা |
নিট লাভ = (খ–ক) = (৩,৮৮,০০০–২,৬৭,০০০) = ১,২১,০০০ টাকা।
শিং, মাগুর মাছের নার্সারি ব্যবস্থাপনাঃ
পুকুর প্রস্তুতকরণঃ পূর্বের অনুরুপ।
সঠিক উপায়ে নার্সারি পুকুর প্রস্তুত করে ০৮–১০ দিন বয়সের ৬,০০০ থেকে ৮,০০০ টি ধানী পোনা মজুদ করতে হবে। পোনা মজুদের সময় মজুদকৃত পুকুরের পানির সাথে ভালাভাবে কন্ডিশনিং করে তারপরর ছাড়তে হবে। প্রাথমিকভাবে প্রতিদিন পোনার দেহের ওজনের দ্বিগুন হারে ২–৩ বার নার্সারি খাবার দিতে হবে। ধানী পোনা ছাড়ার ৩০–৪০ দিনের মধ্যে ২–৪ ইঞ্চি চারা/অঙ্গুলী পোনায় পরিনত হয় যা চাষের পুকুরে ব্যবহারের উপযোগী হয়।
শিং, মাগুর মাছের চাষ ব্যবস্থাপনাঃ
শিং, মাগুর মাছ চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন গুরুত্বপুর্ন বিষয়। এ মাছ চাষের জন্যে ২০–৫০ শতাংশের ১.০–১.৫ মিটার গভীরতার পুকুর নির্বাচন করতে হবে। নিয়মানুযায়ী পুকুর প্রস্তুতি শেষ করে পুকুরের চারপাশে ৩–৪ ফুট উঁচু মশারীর জালের বেষ্টনী দিতে হবে।প্রতি শতাংশে ৫–৭ কেজি গোবর, ১৫০–২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০–১০০ গ্রাম টি এস, পি সার প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগের ৪–৫ দিন পর পুকুরের পানি সবুজ বা হালকা বাদামী হলে পুকুরে শতাংশ প্রতি ৩০০–৫০০ টি চারা পোনা মজুদ করতে হবে। সেই সঙ্গে শতাংশে ১০–১৫ টি সিলভার/ কাতলা মাছের পোনা দেয়া যেতে পারে। পোনা ছাড়ার ঘনত্ব নির্ভর করে চাষির অজ্ঞিতা, আর্থিক স্বচ্ছলতা, মাছ চাষির আগ্রহ, পুকুরের মাটি ও পানির গুনাগুণ এবং চাষ পদ্ধতির উপর। ভাল উৎপাদন পেতে হলে বিশুদ্ধ কৌলিতাত্তিক গুন সম্পন্ন পোনা প্রাপ্যতা ও তার মজুদ নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য পোনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে পোনা সংগ্রহ করাই উত্তম।
চাষের পুকুরে খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ
দৈনিক দু’বার মাছের দেহের ওজনের ৫–৬% হারে খাবার দিতে হবে। তবে বানিজ্যিকভাবে শিং মাগুর মাছের চাষের ক্ষেত্রে ৩৫–৪০% প্রোটিন সমৃদ্ধ পিলেট খাদ্য ব্যবহার অপরিহার্য। বাজরে শিং, মাগুরের আলাদা খাদ্য পাওয়া যায় অথবা পাংগাস ফিড গ্রোয়ার–১) দেয়া যেতে পারে। খাবার হিসাবে ফিসমিল ৩৫%, মিহি কুড়া ২০% গমের ভুষি ১৫% সরিষার খৈল ২৫%, চিটাগুর ৪০% বাইন্ডার হিসাবে ও ভিটামিন ১% একত্রে মিশিয়ে বল আকারে দেয়া যেতে পারে। শিং ও মাগুর মাছের চাষ পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরন করা হলে ৬–৭ মাসে বাজারজাতকরনের উপযোগী হয়। এ সময় শিং মাছের গড় ওজন ৭৫–১০০ গ্রাম এবং মাগুর মাছের গড় ওজন ৯০–১০০ গ্রাম হয়ে থাকে।
শিং মাগুর মাছ চাষের আর্থিক বিশ্লেষণঃ
নিম্নে একটি এক একর পুকুরের সম্ভাব্য আয় ব্যয়ের হিসাব দেয়া হলো।
(ক) ব্যয়ের হিসাব
ক্রমিক নং |
বিবরণ |
টাকার পরিমান |
মন্তব্য |
০১ |
পুকুর সংস্বার/ভাড়া(০৬ মাসের জন্য) | ২০,০০০ |
বাজার দর আনুযায়ী ১০–১৫% খরচ কম/বেশী হতে পারে |
০২ |
শিং ও মাগুর মাছের পোনা ৬০,০০০ টি (নার্সারিতে লালনের পর ৪০,০০০ টি পোনা নিশ্চিত করার জন্য | ১,২০,০০০ | |
০৩ |
সিলভার/ কতলা মাছের পোনা ১,৫০০ টি | ৩,০০০ | |
০৪ |
চুন–২৫০ কেজি | ৪,০০০ | |
০৫ |
মাছের খাদ্য (প্রায় ৪,৫০০ কেজি) | ১,৮০,০০০ | |
০৬ |
ইউরিয়া–৫০ কেজি | ১,০০০ | |
০৭ |
টি,এস,পি – ২৫ কেজি | ৭৫০ | |
০৮ |
পারিবারিক শ্রম ও শ্রমিক মজুরী | ২০,০০০ | |
০৯ |
পরিবহন খরচ | ২০,০০০ | |
১০ |
অন্যান্য | ২০,০০০ | |
মোট ব্যয় = ৩৮৮,৭৫০ টাকা |
(খ) আয়ের মোট হিসাব
ক্রমিক নং |
বিবরণ |
টাকার পরিমান |
মন্তব্য |
০১ |
শিংও মাগুর মাছ বিক্রয় মাছ উৎপাদন ২,২৮৫ কেজি ( বাঁচার হার ৮০% গড়ে ১৪ টিতে কেজি ধরে এবং প্রতি কেজি ৩৭৫ টাকা হারে) | ৮০০,০০০ | সবকিছু অনুকুলে থাকলে এর অধিক আয় হতে পারে। |
০২ |
সিলভার/কাতলা মাছ ৩০০ কেজি ১৬০ টাকা হারে | ৪৮,০০০ | |
মোট ব্যয় = ৮৪৮,০০০ টাকা |
নিট লাভ = (খ–ক) = (৮৪৮০০০–৩৮৮৭৫০) = ৪৫৯,২৫০ টাকা