আজ শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫০ পূর্বাহ্ন
প্রসবের পরে বাছুরের যত্ন ও পরিচর্যা
দুগ্ধ খামারের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে বাছুরের ভাল অবস্থার উপর৷ নবজাত বাছুরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে৷তাই সামান্য যত্নের অভাবে যে কোন সময় বাছুরের মৃত্যু ঘটতে পারে৷ সুস্থ সবল বাছুর পেতে হলে যেমন গর্ভাবস্থায় গাভীর সুষ্ঠ যত্ন ও পর্যাপ্ত সুষম খাদ্যের প্রয়োজন তেমনি প্রসবকালীন ও নবজাত বাছুরের যত্ন নেয়া আবশ্যক৷
সদ্যজাত বাছুরের নিম্নোক্ত ভাবে যত্ন নেয়া যায়-
• বাছুরের জন্মের পরপরই পরিস্কার ব্লেড দিয়ে নাভী কেটে শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে
• কাটার পর স্থানটিতে টিংচার আয়োডিন বা টিংচার বেনজিন জাতীয় জীবাণুনাশক ঔষধ লাগাতে হবে৷ এর ফলে নাভি দিয়ে রোগ জীবাণু প্রবেশ করতে পারে না
• বাচ্চা প্রসবের পরপরই বাচ্চার নাক ও মুখের লালা ও ঝিলই পরিস্কার করে দিতে হবে৷ নতুবা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যেতে পারে
• যদি বাছুর প্রসব হওয়ার পর শ্বাসপ্রশ্বাস না নেয় তাহলে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে৷ বাছুরের বুকের পাঁজরের হাঁড়ে আস্তে আস্তে কয়েকবার চাপ দিয়ে শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক করা যায়৷ এছাড়া বাছুরের নাকে-মুখে ফুঁ দিয়েও শ্বাস প্রশ্বাস চালু করা যায়
• বাছুরের নাক মুখ পরিস্কারের পর গাভীর সামনে শুকনো খড় বিছিয়ে রাখলে গাভী চেটে বাচ্চার গা পরিস্কার করে দেয়৷ এরপর শুকনো নরম খড়, কাপড় অথবা চট দিয়ে বাছুরের গা ভাল করে পরিস্কার করে দিতে হবে
• শীতে বা অতিরিক্ত ঠান্ডায় শুকনো কাপড় বা চট দিয়ে বাছুরকে ঢেকে দিতে হবে৷ অথবা আগুন জ্বালিয়ে বাছুরের শরীর গরম রাখার ব্যবস্থা করতে হবে
• সুস্থসবল বাছুর জন্মের ১৫ মিনিট পর থেকেই উঠার চেষ্টা করে এবং দুধ খেতে সক্ষম হয় ৷ অনেক সময় বাছুর নিজের চেষ্টায় দাঁড়াতে ও দুধ খেতে পারে না৷ এ অবস্থায় বাছুরকে দাঁড়াতে ও দুধ খাওয়াতে সাহায্য করতে হবে
• প্রসবের ১-২ ঘন্টার মধ্যে বাছুরকে তার মায়ের শালদুধ খাওয়াতে হবে৷ যদি বাছুর দুর্বলতার কারণে দাঁড়াতে বা দুধ খেতে না পারে তবে বোতলে নিপল লাগিয়ে দুধ খাওয়াতে হবে
• বাছুরের জন্মের পর কয়েক সপ্তাহ যাবত প্রতিটি বাছুরকে আলাদা ভাবে মেঝেতে শুস্ক খড় বিছিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে৷ তবে ৮ সপ্তাহ পর থেকে একসাথে প্রায় একই বয়সের বাছুরের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে
• প্রসবের পরপরই কোন কারণে গাভীর মৃত্যু হলে বাছুরকে অন্য গাভীর শালদুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে